ফসল ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: চলতি মৌসুমে ভোলায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করে উৎপাদন হয়েছে হেক্টরপ্রতি ৩ মেট্রিকটন ধান। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাব কাটিয়ে ফলন ভালো হওয়ায় হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, হেক্টরপ্রতি ২ দশমিক ৮ মেট্রিকটন চাল উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। জেলার ৭ উপজেলায় ১ লাখ ৭৫ হাজার ৫’শ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ’র লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে অর্জন হয়েছে ১ লাখ ৭৫ হাজার ৫’শ ৬৮ হেক্টর জমিতে।

এবছর রোগ বালাই ও পোকার মাকড়ের তেমন আক্রমণ না থাকায় ভালো ফলন পেয়ে লাভের আশা করছে কৃষকরা। বর্তমানে ধান কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছে তারা। ইতোমধ্যে প্রায় ৭৫ ভাগ জমির ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ৮-১০ দিনের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা শেষ হবে।

জেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, জেলায় মোট আমন আবাদের মধ্যে উফশী হয়েছে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৮’শ ৪০ হেক্টর, স্থানীয় জাত হয়েছে ১১ হাজার ৬’শ৪৫ হেক্টর ও হাইব্রীড ৮৩ হেক্টর। আর গত বছর জেলায় আমনের আবাদ হয়েছিল ১ লাখ ৬৭ হাজার ৩’শ ৫৫ হেক্টর জমিতে। এবছর তা বেড়েছে ৮ হাজার ২’শ ১৩ হেক্টর জমি। প্রতি বছরই এখানে আমনের আবাদি জমির পরিমাণ বাড়ছে।

এগ্রিকেয়ার২৪.কমের আরোও নিউজ পড়তে পারেন:

বোরোতে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরামর্শ

রাত-দিন চলছে ধান সিদ্ধ-শুকানোর কাজ

চলতি বছর আমন ধান-চাল সংগ্রহে সরকারের ১৭ নির্দেশনা

তিন ফসলি ধানের জাত উদ্ভাবনের সুপারিশ

কৃষি কর্মকর্তারা জানান, জেলায় সাধারণত উফশীর মধ্যে বিআর-৪৪, ১১, ২২, ২৩,। ব্রী-ধান-৫২, ৪০, ৪৪, ৪৬, ৫১, ৬২, ৭৩, ৭৬ ইত্যাদি এছাড়া স্থানীয় জাতের মধ্যে কাজল সাইল, কালাগাড়া, মধুমালতী, কালীজিড়া, লোতর, টেবু সাইল, ডিকজ, সাদা মোটা জাতের আবাদ বেশি করা হয়।

উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার মো: হুমায়ুন কবির বলেন, এবছর উন্নত জাতের আমন বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণের জন্য রাজস্ব ও অন্যান্য প্রকল্প মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৫’শ প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে মাঠ থেকে ধান কর্তন করতে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা। এবছর ব্রী-ধান ৫২ ফলন সবচেয়ে বেশি হয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি আরো জানান, কিছুদিন আগে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে আমনের তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। কারণ তখন ধান ছিলো কুশি পর্যায়ে। ফুল বা ফল কোনটাই আসেনি। যেখানে পানি বেশি ছিলো কৃষকরা তা নিস্কাশনের ব্যবস্থা করেছে আমাদের পরামর্শে।

সদর উপজেলার শীবপুর ইউনিয়নের শান্তির হাট গ্রামের কৃষক ফয়েজউল্লাহ ও রহমত আলী বলেন, তারা ২ একর করে জমিতে আমন ধানের আবাদ করেছেন। প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার মধ্যেও কৃষি বিভাগের সার্বিক পরামর্শে তাদের ফলন ভালো হয়েছে। একই এলাকার অপর কৃষক আজাহার আলী বলেন, গত বছর প্রতি মণধানের মূল্য ছিলো সাড়ে ৬’শ থেকে ৭’শ টাকা। আর এবার প্রতি মণে মূল্য বেড়েছে প্রায় ৩’শ টাকা করে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো: হাসান ওয়ারিসুল কবীর বলেন, জেলায় প্রচুর পরিমাণ আমন ধানের আবাদ হয়। এবছর আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। গত কয়েক বছরে এটা অত্যন্ত ভালো ফলন। কৃষকরা বাজারে ধানের মণ ৯৫০ থেকে হাজার টাকায় বিক্রি করছে। দাম ভালো হওয়ায় কৃষকরা খুশি। এছাড়া সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগসহ কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শ সেবা প্রদান ও কৃষকদের নিরলশ পরিশ্রমে এবছর আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ