নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: রাজশাহীতে অব্যাহত রয়েছে মৃদ্যু শৈতপ্রবাহ, বেড়েছে শীত। অতিরিক্ত ঠান্ডা সেইসাথে ঘন কুয়াশায় আলু ও বোরো ধানের বীজতলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রাজশাহীর চাষিরা। বার বার কীটনাশক ছিঁটিয়েও কাটছেনা তাদের শঙ্কা।

টানা কয়েক দফা বন্যায় সবজি বিনষ্ট হওয়ায় বাড়তি চাপ পড়েছে আলুর উপর। অন্যান্য সবজির পাশাপাশি বেড়েছে আলু চাষ। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার রাজশাহী অঞ্চলে আলুর আবাদ হচ্ছে প্রায় ৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে।

দু-দিন ধরে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ প্রায় শতভাগ। আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় আলুর লেট ব্লাইট রোগ এবং ধানের চারার ঠান্ডাজনিত রোগের আশঙ্কা করছেন এখানকার কৃষকরা। তবে, দিনে সূর্যের আলো থাকায় এবং চাষিদের নিবিড় পরিচর্যার কারণে ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটছে না বলে জানিয়েছে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ঘন কুয়াশায় আলুর আগাম ধ্বসা, নাবি ধ্বসা এসব রোগ হয়ে থাকে। ঘন কুয়াশা এবং দিনে সূর্যের আলো দেখা না গেলে, বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেড়ে গেলে, বৃষ্টি হলে অনুজীব ঘটিত রোগের আক্রমণ ঘটতে পারে। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের (মধ্য কার্তিক থেকে মধ্য ফাল্গুন) যে কোন সময় নিম্ন তাপমাত্রা (রাতে ১০-১৬ ডিগ্রি এবং দিনে ১৬-২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এবং কুয়াশাচ্ছন্ন আর্দ্র আবহাওয়া (আর্দ্রতা ৯০% এর বেশি) এ রোগ বিস্তারের জন্য অনুকূল।

কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার সাথে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হলে এ রোগ ২-৩ দিনের মধ্যে মহামারী আকার ধারণ করে। বাতাস, বৃষ্টিপাত ও সেচের পানির সাহায্যে এ রোগের জীবাণু আক্রান্ত গাছ থেকে সুস্থ গাছে দ্রুত বিস্তার লাভ করে।

পবা উপজেলার কৃষক সাবিয়ার আলী এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, আলুর ক্ষেতে রোগ ধরলে সম্পূর্ণ আলু গাছ নষ্ট হয়ে যাবে। আমার ২ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। আলু ভালোই হয়েছে। কুয়াশার জন্য সার্বক্ষণিক পরিচর্যা ও বার বার ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হচ্ছে। দিনে স্প্রে করার পর কুয়াশার কারণে গাছ পানিতে ধুয়ে যাচ্ছে। গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে কুয়াশার মাত্রা অধিক হারে বেড়ে যায়। তবে, আজকে আর তেমন কুয়াশা পড়েনি।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামছুল হক এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে জানান, কয়েকদিন থেকে ভালোই কুয়াশা পড়ছে। এবং দিনে রোদের দেখাও তেমন মিলছে না। এসময়টায় আলুর নাভিধ্বস দেখা যায়। তবে, ভয় পাওয়ার কারণে নেই। রাজশাহী অঞ্চলের আলু চাষিরা খুব সচেতন তারা জানেন কখন কি ঔষুধ দিতে হবে। কুয়াশা বেশি থাকলে ম্যানকোজেব, ইন্ডোফিল জাতীয় ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করতে হবে। ধানের বীজতলা পলিথিন পেপার দিয়ে ঢেঁকে দিতে হবে।

তিনি আরো জানান, এবার আগে থেকেই এখানকার চাষিরা তৎপর রয়েছেন। এখন পর্যন্ত কোথাও ছত্রাকের আক্রমণের খবর জানা জানা যায়নি। কুয়াশা আলু ও বীজতলার কিছু ক্ষতি করে। এখন বীজতলাতেও বাড়তি পরিচর্যার প্রয়োজন। মাঠপর্যায়ে কৃষকদের এ বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ