ঘূর্ণিঝড়ের সময়ে আবহাওয়া অফিসের

নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ফের নতুন করে ঘূর্ণিঝড়ের হাতছানি! এবছরের প্রথম ঘূর্ণিঝড় ‘আসানি’। বঙ্গোপসাগরে আগামী ১০ মে’র মধ্যে আছড়ে পড়তে চলেছে এই ঘূর্ণি ঝড়, জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া দফতর। তবে, প্রাথমিক ধারণা অনুযায়ী এটি বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশায় আঘাত হানতে পারে। এবছরের প্রথম এই ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করেছে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, শুক্রবার (৬ মে) দক্ষিণ আন্দামান সাগরের সম্ভাব্য লঘুচাপটি সৃষ্টি হতে পারে। এখন পর্যন্ত লঘুচাপটি বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার দিকে মুখ করে আছে। তবে লঘুচাপটির গতিপথ বারবার বদলাচ্ছে। এ জন্য বলা মুশকিল, এটি তৈরি হলেও আসলে কোনদিকে যাবে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অফিস আরও জানায়, ঘূর্ণিঝড়টির বিষয়ে এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না, এটি কোনদিকে আঘাত হানবে। ধারণা করা হচ্ছে, এটি আগামী ১০ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে বাংলাদেশের পশ্চিম অথবা পূর্বাঞ্চলের উপকূলে আঘাত হানতে পারে।

পড়তে পারেন: আজ থেকে ৩৮ টাকা বাড়লো সয়াবিন তেলে

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ আবহাওয়া্বিদ জানান, ঢাকা, বরিশাল, খুলনা, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগে কিছু কিছু জায়গায় রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ বিভাগে দু-এক জায়গায় প্রবল বিজলী চমকানোসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

ভারতের আবহাওয়া দফতর জানায়, দক্ষিণ আন্দামান সাগরে একটি নিম্নচাপ ঘনীভূত হতে শুরু করেছে। ৬ মে-র মধ্যে নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকায় আছড়ে পড়তে পারে সেই ঘূর্ণিঝড়টি ১০-মে’র মধ্যে।

তবে স্থলভাগে আছড়ে পড়লে ঘূর্ণিঝড়টি কোন রাস্তা দিয়ে যাবে এবং কেমন ক্ষয়ক্ষতি করতে পারে, সে বিষয়ে আবহাওয়া দফতর এখনও পর্যন্ত সঠিকভাবে কিছু জানায়নি। পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগে আছড়ে পড়লে সেটি ওড়িশার কেন্দাপাড়া, ভদ্রক, জাজপুর, বালাসোর, মযূরভঞ্জ এবং কেওনঝড়ে আঘাত করতে পারে বলে আশঙ্কা।

ওড়িশা উপকূলে ঘূর্ণিঝড়টি আছড়ে পড়লে বিহার, ঝাড়খণ্ডে তুমুল বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে আশঙ্কা। ৩-৪ দিন ধরে ওই রাজ্যগুলিতে এক নাগাড়ে বৃষ্টি হবে বলে মনে করছে আবহাওয়া দফতর। কেরল তামিলনাড়ু, কর্ণাটক এবং পুদুচেরিতে আগামী কয়েকদিন ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা।

পড়তে পারেন: সপ্তাহে ৪ কোটি টাকার পান বিক্রি, বিঘায় ৫ লাখ!

আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে দক্ষিণ আন্দামান সাগরে একটি নিন্মচাপের সৃষ্টি হয়েছে যা আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই পরিণত হতে পারে গভীর নিন্মচাপে। এই নিন্মচাপটি ক্রমশ উত্তর পশ্চিমে সরে যাওয়ার আশঙ্কা করছে আবহাওয়া দফতর। তবে তা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে কিনা, কিংবা তা কোথায় আঘাত করতে পারে, তা নিয়ে এখনও কিছুই বলতে পারছে না আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা। তাঁরা পরিস্থিতির ওপরে নজর রেখে চলেছেন। নিন্মচাপটি গতি বাড়িয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে বলা আবহাওয়া দফতর আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।

ভারতের আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র বলেন, “আজ পর্যন্ত, আমরা ল্যান্ডফল এবং প্রভাবিত এলাকা সম্পর্কে কোনও পূর্বাভাস জারি করিনি”। তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতির ওপর সতর্ক নজর রেখে চলেছে আবহাওয়া দফতর”। দক্ষিণ আন্দামান সাগরে নিন্মচাপ তৈরি হওয়ার পরেই ঝড়ের ব্যাপারে নিশ্চিত করে বলা যাবে বলেও জানান তিনি।

এদিকে বাংলাদেশে গত ২৪ ঘন্টায় যশোর, সৈয়দপুর ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে; যা দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে মাদারীপুর ২০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে স্বন্দীপ ৯৬ মিলিমিটার। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩ দশমিক ৩ এবং সর্বনিম্ম তাপমাত্রা ২৩ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আগামী পাঁচদিনের আবহাওয়ার তথ্যে বলা হয়েছে, সামান্য পরিবর্তন হতে পারে এবং আন্দামান সাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে।

ঢাকায় বাতাসের গতি ও দিক ছিল দক্ষিণ/দক্ষিণ পশ্চিম থেকে ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ কি.মি. যা অস্থায়ীভাবে ৪০-৫০ কিলোমিটার বেগে বাড়তে পারে। সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আদ্রতা ছিল ৬৩ শতাংশ। আজ ঢাকায় সূর্যোদয় ভোর ৫টা ২৯ মিনিটে আর সূর্যাস্ত ৬টা ২১ মিনিটে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ