আন্তর্জাতিক কৃষি ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: বিশ্বের অন্যতম সরবরাহকারী দেশ হিসেবে ইউক্রেন চলতি বছর রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের কারণে কী পরিমাণ ভুট্টা উৎপাদন ও রফতানি করতে পারবে, সে বিষয়ে বিশ্লেষকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলমান। তবে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) শস্য উৎপাদন তদারকি প্রতিষ্ঠান মার্স সম্প্রতি পূর্বাভাসসংক্রান্ত প্রতিবেদনে ইউক্রেনে ভুট্টার উৎপাদন কমছে বলেই জানিয়েছে।

 আরব নিউজের প্রকাশিত তথ্যে, ২০২১ সালের তুলনায় চলতি বছর ইউক্রেনে ভুট্টার উৎপাদন ২৪ শতাংশ ও পাঁচ বছরের গড় হিসাবে ৫ শতাংশ কমে ৩ কোটি ২০ লাখ টনে পৌঁছবে।

অন্যদিকে ইউক্রেন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ সূর্যমুখী সরবরাহকারী দেশ। আগের বছরের তুলনায় চলতি বছর এর চাষ বা উৎপাদন ১৫ শতাংশ কমে ১ কোটি ৩৯ লাখ টনে পৌঁছবে, যা পাঁচ বছরের গড় হিসাবে ২ শতাংশ কম।

প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে মার্স জানায়, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসন বা যুদ্ধের কারণে ভুট্টা ও সূর্যমুখীর জমি অনেকাংশে কমে গিয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ফলনের সম্ভাবনা থাকলেও উভয় ফসলের জন্য আমাদের উৎপাদন পূর্বাভাস পাঁচ বছরের গড়ের তুলনায় কম।

পড়তে পারেন: সাড়ে ৬৬ হাজার টন গম-ভুট্টা রপ্তানি করবে ইউক্রেন

মার্স জানায় যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে বর্তমানে ৪ শতাংশ ভুট্টা, ১০ শতাংশ সূর্যমুখী ও ৭ শতাংশ সয়াবিনের উৎপাদন হুমকির মুখে রয়েছে। শীতকালীর শস্যের মধ্যে নরম গম ২২ শতাংশ, ২০ শতাংশ বার্লি ও ১৩ শতাংশ সরিষা রয়েছে।

উৎপাদনের বিষয়ে নিজস্ব অনুমান ও ইউক্রেনের কৃষি মন্ত্রণালয় প্রদত্ত তথ্যের মাধ্যমে মার্স তাদের পূর্বাভাস জানায়। তবে রিমোট সেন্সিংয়ের ওপর নির্ভরশীল দোনেত্স্ক, খেরসন, লুহান্সক ও জাপোরিঝিয়ার মতো যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চল তাদের তদারকিতে নেই।

এদিকে বাংলাদেশে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে গম আমদানি শুরু হয়েছে। চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে আমদানি কমেছে পণ্যাটির। তথ্য বলছে ২০২১-২২ অর্থবছরের তুলনায় কৃষিপণ্যটির আমদানি কমেছে অন্তত নয়-দশগুণ। ব্যবসায়ী ও মিলাররা বলছেন, দেশীয় বাজারে চাহিদা না থাকায় গম আমদানি কমেছে।

পড়তে পারেন: ৫৮ হাজার টন ভুট্টা নিয়ে ছাড়লো ইউক্রেনের জাহাজ

ভোমরা শুল্কস্টেশনের রাজস্ব শাখা থেকে জানা গিয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে ১৩ হাজার ৮২৪ টন গম আমদানি হয়েছে। এর মধ্যে জুলাইয়ে ১১ হাজার ৫৯১ টন এবং আগস্টে ২ হাজার ২৩৩ টন। যার মূল্য ৪৪ কোটি ৪ লাখ টাকা। অন্যদিকে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে গম আমদানি হয়েছিল ১ লাখ ১ হাজার ২৫৭ টন। যার মূল্য ২৭৩ কোটি ৭ লাখ টাকা, যা চলতি অর্থবছরের তুলনায় ৯-১০ গুণ বেশি। ফলে গত দুই মাসে এ বন্দর দিয়ে গম আমদানি প্রায় ১০ গুণ কমেছে।

ভোমরা বন্দরের আরো এক গম আমদানিকারক মো. আকতার হোসেন জানান, গত অর্থবছরের এ সময় সপ্তাহে ৫০-৬০ ট্রাক গম আমদানি হয়েছে। যেখানে চলতি অর্থবছর সপ্তাহে চার-পাঁচ ট্রাক গম আমদানি হচ্ছে। বাজারে চাহিদা না থাকায় পণ্যটির আমদানি কমেছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ