অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: এশিয়ায় প্রধান প্রধান চালের বাজার ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠেছে। চলতি সপ্তাহে নতুন করে ইন্দোনেশিয়ায় আমদানি চাহিদা বাড়তে শুরু করার কারণে শস্যটির রফতানি মূল্য বাড়ছে বলে খবর প্রকাশ করেছে বিজনেস রেকর্ডার।

চাল রফতানিতে বিশ্বের শীর্ষ দেশ ভারত। চলতি সপ্তাহে দেশটির ৫ শতাংশ ভাঙা সেদ্ধ চালের দাম দাঁড়িয়েছে টনপ্রতি ৩৭৫-৩৮০ ডলারে। গত সপ্তাহে যা ছিল ৩৭৩-৩৭৮ ডলার। এমন পরিস্থিতিতে ভারতীয় স্বল্পমূল্যের চালের চাহিদা শক্তিশালী হয়ে উঠছে।

ভিয়েতনামের ৫ শতাংশ ভাঙা চাল ফ্রি অন বোর্ড চুক্তিতে ৪৪০-৪৪৫ ডলারে রফতানি হচ্ছে। এর আগের সপ্তাহে যা ৪৩৮ ডলারে রফতানি হয়েছিল। হো চি মিনভিত্তিক এক ব্যবসায়ী জানান, শক্তিশালী চাহিদার কারণে দাম বাড়ছে। বিশেষ করে স্থানীয় বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে চাল আমদানি বাড়াচ্ছে ইন্দোনেশিয়া।

এদিকে ভিয়েতনামে চালের রফতানি মূল্য বেড়ে যাওয়ার কারণে কিউবার ক্রেতারা ঝুঁকছে তুলনামূলক সস্তা ভারতীয় চালের বাজারে। ভিয়েতনামের স্থানীয় বাজারে অব্যাহত কমছে চালের সরবরাহ। এর ফলে বেড়েই চলেছে দাম। ফলে আগামী কয়েক সপ্তাহে রফতানি মূল্য ঊর্ধ্বমুখীই থাকবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

এগ্রিকেয়ার২৪.কম:কমের আরোও নিউজ পড়তে পারেন:

উঠে গেল ভারতের চাল রফতানি নিষেধাজ্ঞা

৪ মাসে ২৫৭ কোটি টাকার চাল আমদানি

চালে বাড়তি, স্বস্তি নেই সবজিতে

বেড়েছে চাল, ডাল, আটা, ময়দা পেঁয়াজের দাম

ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের কাকিনাডাভিত্তিক রফতানিকারকরা জানান, আকর্ষণীয় মূল্যছাড়ে ভারতীয় চাল পাওয়া যাচ্ছে। এটি অন্যান্য সরবরাহকারী দেশ থেকে ভারতের বাজারে স্থানান্তরিত হতে ক্রেতাদের উৎসাহিত করছে। চলতি বছর ভারতের বাসমতি চাল রফতানি গত বছরের তুলনায় ১৫ শতাংশ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ দাম বাড়া সত্ত্বেও মধ্যপ্রাচ্যের ক্রেতারা অন্তত এক প্রান্তিক ধরে তাদের মজুদ বাড়ানোর জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

৩০ নভেম্বর ভাঙা চালসহ অগ্রানিক নন-বাসমতী চালের ওপর থেকে রফতানি নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নিয়েছে ভারত। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রফতানি নীতিতে আনা পরিবর্তন সফলতার মুখ দেখেছে। এরই মধ্যে স্থানীয় বাজারে সরবরাহ বেড়েছে। পাশাপাশি দামও স্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। আর এ কারণেই নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়া হয়েছে।

তিন মাস ধরে এসব চাল রফতানি বন্ধ ছিল। এর ফলে প্রধান প্রধান আমদানিকারক দেশগুলো বিপাকে পড়ে যায়। ফের রফতানি শুরুর ঘোষণা আসায় আমদানিকারক দেশগুলোয় স্বস্তি ফিরেছে। শস্যটির রফতানি মূল্যও কমে আসতে পারে।

আন্তর্জাতিক চাল বাণিজ্যে ৪০ শতাংশ বাজার হিস্যাই ভারতের। ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশটি সব মিলিয়ে ২ কোটি ১২ লাখ ৩০ হাজার টন চাল রফতানি করে। এর আগের অর্থবছর রফতানির পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৭৭ লাখ ৮০ হাজার টন। কভিড-১৯ মহামারী শুরুর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশটি রফতানি করেছিল ৯৫ লাখ ১০ হাজার টন। অর্থাৎ গত অর্থবছর চাল রফতানি মহামারীপূর্ব পর্যায় ছাড়িয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এ বছর পণ্যটি রফতানিতে মন্দার মুখে পড়তে যাচ্ছে দেশটি।

অন্যদিকে থাইল্যান্ডে ৫ শতাংশ ভাঙা চালের রফতানি মূল্য চলতি সপ্তাহে বেড়ে ৪২৭-৪৪০ ডলারে উন্নীত হয়েছে। গত সপ্তাহে প্রতি টন রফতানি হয়েছিল ৪১৯-৪২৫ ডলারে।

ব্যাংককভিত্তিক ব্যবসায়ীরা জানান, গত সপ্তাহ থেকেই ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে থাইল্যান্ডের চাল রফতানিকারকদের আলাপ-আলোচনা চলছে। দেশটি থেকে বড় পরিসরে চাল আমদানি করতে পারে ইন্দোনেশিয়া। এ কারণেই দাম বাড়ছে। অন্যদিকে থাইল্যান্ডের আমদানিকারকরা বছরের শেষ সময়ে মজুদ বাড়াচ্ছেন। এটিও দাম বাড়াতে সহায়তা করছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ