আব্দুল মজিদ মণ্ডল (সম্রাট) (নওগাঁ), এগ্রিকেয়ার২৪.কম: গ্রীষ্মকাল মানেই হচ্ছে নানা জাতের ও নানা স্বাদের ফলের সমাহার। সেই সব ফলের সমাহারের মধ্যে অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে সুমিষ্ট ও সুস্বাদু আম। বর্তমানে দেশে আম উৎপাদনে দ্বিতীয় রাজধানী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে সীমান্তবর্তি বরেন্দ্র জেলা নওগাঁ। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ২৫ মে থেকে বাজারে আসছে জেলার আম।

বর্তমানে প্রতি বছরই জেলার ১১টি উপজেলায় নতুন করে বিস্তৃতি লাভ করছে নানা জাতের ও স্বাদের আমের বাগান। পুরো দেশসহ বিদেশেও সুনাম কুড়িয়েছে নওগাঁর মাটিতে জন্ম নেওয়া সুস্বাদু নানা জাতের আম। আগামী ২৫মে থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে নওগাঁসহ দেশের বাজারে আসছে চলতি মৌসুমের নওগাঁর আম।

পড়তে পারেন: আমের মুকুল ও কুড়ি ঝরা রোধে করণীয়

জেলা প্রশাসন ও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নওগাঁর বিভিন্ন বাগানে উৎপাদিত ৮জাতের আম সংগ্রহের সময় নির্ধারন করেছে। আগামী ২৫মে গুটি-স্থানীয় জাতের আম প্রথম সংগ্রহ করার মধ্যদিয়ে শুরু হচ্ছে নওগাঁর আম সংগ্রহ অভিযান। এরপর ৩০মে গোপালভোগ আম, ৫জুন খিরসাপাত-হিমসাগর আম, ৮জুন নাগ ফজলী আম, ১২জুন ল্যাংড়া-হাঁড়িভাঙ্গা আম, ২২জুন ফজলী আম আর আমের ভোক্তাদের কাছে বাজারে সাড়া ফেলানো আমরুপালী জাতের আম ২৫জুন এবং সর্বশেষ ১০জুলাই আশ্বিনা-বারী-৪- গৌড়মতি আম বাজারে আসছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ শামছুল ওয়াদুদ জানান, জেলার ১১টি উপজেলার মধ্যে বাণিজ্যিক ভাবে আম উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত হচ্ছে পোরশা, সাপাহার, ধামইরহাট ও পত্তীতলা উপজেলা। তবে দিন দিন আম চাষ লাভজনক হওয়ায় অন্যান্য উপজেলাতেও বাণিজ্যিক ভাবে প্রতিবছর নতুন নতুন আমের বাগান বিস্তার লাভ করছে।

পড়তে পারেন: আমের নতুন রাজধানী নওগাঁ

চলতি মৌসুমে জেলার ১১টি উপজেলায় ২৯ হাজার ৪শত ৯০ হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিক ভাবে আম চাষ হয়েছে। গত বছর ছিলো ২৫হাজার ৮শত ৫০হেক্টর। গত বছরের চেয়ে চলতি বছর নতুন করে ৩হাজার ৬শত ৪০হেক্টর জমিতে আম চাষ বেশি হয়েছে। তাই বলা যেতে পারে প্রতি বছরই যে ভাবে নওগাঁয় আমের চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে সরকারি ভাবে নওগাঁর জন্য “আমের রাজধানীর খেতাব” পাওয়া বর্তমানে সময়ের দাবী।

তিনি আরো জানান যে, বর্তমান আবহাওয়া আমের অনুকুলে রয়েছে। এই আবহাওয়া শেষ পর্যন্ত বিরাজ করলে চলতি মৌসুমে জেলার আমচাষীরা আমের বাম্পার ফলন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আর্থিক ভাবেও লাভবান হতে পারবেন। এছাড়া বিষমুক্ত ভাবে আম উৎপাদন ও বাজারজাত করতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে জেলার আমচাষীদের সবসময় পরামর্শ ও সার্বিক ভাবে সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে এবং শেষ পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখা হবে।

পড়তে পারেন: টবে বারোমাসি আম চাষ পদ্ধতি

জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান বলেন, ঐতিহাসিক নিদর্শনের পাশাপাশি নওগাঁর আরেকটি ব্র্যান্ডিং হচ্ছে আম। জেলার আমচাষীরা যেন সঠিক সময়ে পরিপক্ক আম সংগ্রহ শেষে বাজারজাত করে বেশি লাভবান হতে পারেন সেই বিষয়টি বিবেচনা করে প্রতি বছরের মতো চলতি বছরও নওগাঁর আম বাগান থেকে আম সংগ্রহ করার সঠিক সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।

পাশাপাশি আমচাষীরা যেন সঠিক ভাবে তাদের বাগানের আমগুলো স্থানীয় বাজারে বাজারজাত করতে পারেন সেই বিষয়ে সকল প্রদক্ষেপ গ্রহণের জন্য স্ব-স্ব উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। আমি আশাবাদি আমচাষী ও ব্যবসায়ীরা বিগত বছরের তুলনায় চলতি বছর নওগাঁয় সুষ্ঠ ও সুন্দর পরিবেশে আম বেচা-কেনা করতে পারবেন।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ