মালিকুজ্জামান কাকা, যশোর: যশোরের ফুলচাষিরা ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। ফলে এক মৌসুমেই শত কোটি টাকার ফুল বিক্রির আশা করছেন গদখালীর কৃষকরা। নতুন বছর, বিশ্ব ভালবাসা দিবস, ১লা ফাল্গুন, ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২৬ মার্চের পর অফ সিজন। এরপর আবারো নতুন সীজন হাজির। চলতি নভেম্বর, ডিসেম্বর, ইংরেজী নববর্ষসহ একটি ব্যস্ততম চাহিদা ও সরবরাহের বিষয় সামনে হাজির ফুল চাষীদের।

বাজার চাঙা থাকলে মৌসুমে অন্তত ১০০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি করতে পারবেন বলে মনে করছেন গদখালীর ফুলচাষিরা। যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালীতে প্রতিদিন ভোরে ফুলের হাট বসে। প্রতিদিন এখনো ফুল বিক্রি হচ্ছে। তবে এই মুহুর্তে চাহিদা কম। গদখালী, পানিসারা বাজারে এখন ব্যস্ততা আসতে শুরু করেছে। ফুল বিক্রির আশায় কৃষকের ব্যস্ততা বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় গোলাপ ও গাঁদা ফুল। এখানে সিজনে বাজারে প্রতি হাজার গাঁদা ফুল বিক্রি হয় ৮০০-৯০০ টাকা দরে। যা আগে দাম ছিল দেড়শ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২৫০-৩০০ টাকা।

গদখালী ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা জানান, ফুলের দাম এখন একটু ভালো। এই অবস্থা থাকলে তারা লাভ করবেন।

বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির কেন্দ্রীয় সাবেক সভাপতি আব্দুর রহিম বলেন, যশোর জেলার আট উপজেলায় ৭০০ হেক্টর জমিতে ফুল চাষ হয়। তার মধ্যে ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী-পানিসারার প্রায় সাড়ে সাত হাজার কৃষক ৬০০ হেক্টর জমিতে ফুলের আবাদ করেছেন। এখন করোনার শঙ্কা কেটে গেছে। আগামি ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস, এরপর নতুন নববর্ষ, ফুলের রমরমা বেচাকেনা হবে।

এগ্রিকেয়ার২৪.কমের আরোও নিউজ পড়তে পারেন:

জেনে নিন অর্কিড ফুল চাষ পদ্ধতি ও রোগবালাই দমন ব্যবস্থাপনা

ফুল চাষ ছেড়ে আউষ চাষে ঝুঁকছেন ফুলচাষিরা

মাশরুম চাষে সাইফুলের মাসে আয় ৮০ হাজার

হরেক রঙের ফুলকপি চাষে দ্বিগুণ লাভ

গদখালী ফুল চাষি সমিতির বর্তমান আহ্বায়ক শামীম রেজা জানান, দুইদিনে তারা প্রায় ৫ কোটি টাকা বেচা কেনা করেছেন। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ফুলের বেচাকেনা শুরু হয়েছে গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে। বগুড়া, নওগাঁ , বরিশাল, ঢাকা, চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা যশোরের বাজার থেকে ফুল সংগ্রহ করছেন। এ ছাড়া খুলনা বিভাগের ১০ জেলার ফুল ব্যবসায়ীরাতো রয়েছেই।

গদখালী বাজারে ফুল কিনতে আসা ব্যবসায়ীরা জানান ভালো ফুল কেনা গেলে সকল ব্যবসায়ী খুশি হন। বর্তমানে গদখালীতে সব ধরনের ফুলের দাম বেড়ে দ্বিগুণ। ১টি গোলাপ বিক্রি হচ্চেছ ১৫-২০ টাকা, যা কয়েকদিন আওে বিক্রি হয়েছে ৫ /৬ টাকায়। জারবেরা বিক্রি হচ্ছে প্রকারভেদে ৮-১২ টাকা পিচ। এছাড়া গাঁদা ফুল বিক্রি হচ্ছে প্রতি হাজার ৫০০-৭০০ টাকা পর্যন্ত; যা কয়েকদিন আগে ছিল ২০০-৩০০ টাকা।

জানা গেছে, যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী অঞ্চলে প্রায় পাঁচ হাজারের মতো ফুলচাষি রয়েছেন। চলতি বছর প্রায় ৬৫০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রকার ফুল চাষ হয়েছে। গদখালী, পানিসারা, নাভারণ, নির্বাসখোলার চাষিরা প্রায় ১১ ধরনের ফুল উৎপাদন করেন।

এখানকার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে গোলাপ, জারবেরা, গাঁদা, গ্লাডিওলাস, রজনী গন্ধা, জিপসি, রডস্টিক, কলনডালা, চন্দ্রমল্লিকাসহ বিভিন্ন ধরনের ফুল শোভা পায়। ফুলের রাজধানী গদখালীতে গত বছর নতুন সংযোজন ফুল টিউলিপ আর লিলিয়াম। নিজ সৌন্দর্যে উদ্ভাসিত এ ফুল মানুষের ভালোবাসায় রঙিন হয়ে ওঠে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ