ঘুর্ণিঝড় মিধিলির আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত চাষি। ছবি: প্রতীকী

বাগেরহাট প্রতিনিধি: বাগেরহাট মোল্লাহাট উপজেলার কৃষক ফয়সাল আহমেদ চোখে কান্না নিয়ে বলেন, বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ো বাতাসে আমার শতাধিক পেঁপে গাছ পড়ে গেছে। প্রতিটি গাছেই পেঁপে ছিল। এখন অনেক কম দামে কাঁচা পেপে বিক্রি করতে হবে।

শুধু ফয়সাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা নয়; ঘূর্ণিঝড় মিধিলি’র কারণে বাগেরহাটে ১৫ হাজার ২৫৪ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে ধান চাষিরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। তবে, টাকার অংকে কি পরিমাণ ফসলের ক্ষতি হয়েছে তা এখনো জানা সম্ভব হয়নি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় ১০ হাজার ৫২৫ হেক্টর জমির আমন ধান, ৩ হাজার ২০৫ হেক্টর জমির খেসারী ডাল, ৯১০ হেক্টর জমির শীতকালীন সবজিসহ ৬১৪ হেক্টর জমির গম, সরিষা, মরিচ, পেপে, কলা, পান, ধনীয়া, কালোজিরা, মশুর, মটর ডাল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

চাষিরা বলছেন, মিধিলার কারণে হওয়া বৃষ্টি ও ঝড়ে সবজি, ধানের ক্ষেত ও বোরো ধানের বীজতলা নষ্ট হয়েছে। এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অনেক কষ্ট হবে।

ফকিরহাট উপজেলার বেতাগা গ্রামের আমন চাষি তারক দাস বলেন, বৃষ্টিতে যা ক্ষতি করেছে, তা বলে বোঝানো যাবে না। মনে হচ্ছে কেউ পাকা ধানে মই দিয়ে গেছে।

একই এলাকার বৃদ্ধ বাসুদেব রায় বলেন, তিন বিঘা জমিতে আমন ধান লাগিয়েছিলাম। ভালোই ফলন হয়েছিল। কিন্তু একদিনের মধ্যে সব ধান নুয়ে পড়েছে। ধানের ফলন অর্ধেকে নেমে আসবে। শেষ মুহূর্তে দুর্যোগের ক্ষতি কোনোভাবে পোষানো যায় না।

বোরো ধান চাষী ইউনুস শেখ বলেন, প্রায় ১০ কেজি ধানের বীজ তলা নষ্ট হয়ে গেছে। এখন আবার ধান কিনে নতুন করে বীজতলা প্রস্তুত করতে হবে। আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি ধান রোপণেও পিছিয়ে গেলাম।

বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শঙ্কর কুমার মজুমদার বলেন, ঘূর্ণিঝড় মিধিলির কারণে সৃষ্ঠ ঝড়ো বাতাস ও বৃষ্টিতে আমাদের ১৫ হাজার ২৫৪ হেক্টর জমির ফসল আক্রান্ত হয়েছে। সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে ধান চাষিদেরা। ঝড়ে কাঁচা ও আধা পাকা আমন ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা টাকার অংকে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানার চেষ্টা করছি। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদেরকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ/২০২৩