নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: এবার হু-হু করে বাড়ছে গরীবের ডালের দাম। রাজশাহীর বাজারে এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে সব ধরনের ডালের দাম। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলারের রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির প্রভাবে দেশের বাজারে ডালের দাম বাড়তে শুরু করেছে। চাহিদা পূরণে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে বাড়তি দামে আমদানি করতে হচ্ছে সব ধরণের ডাল।

অন্যদিকে খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলারের দাম সাম্প্রতিক সময়ে বেড়েছে কিন্তু ডাল আমদানি করা অন্তত ২ মাসের একসাথে। হটাৎ দাম বাড়লেই আমদানি করা স্টক পণ্যের দাম কেন বাড়ে বাংলাদেশে তা খুঁজে পাওয়া যায় না। আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে দেশের বাজার সমন্বয় করার ক্ষেত্রে খুববেশি সময় না নিলেও কমানোর ক্ষেত্রে তা কয়েকগুণ বেশি সময় নেন ব্যবসায়ী ও সরকার।

আজ শনিবার (২০ আগস্ট ২০২২) রাজশাহীর সাহেববাজার মাস্টারপাড়া, উপশহর নিউমার্কেট, লক্ষীপুর নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

সাহেব বাজারের সুশীল স্টোরের মালিক এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে জানান, মাত্র ৭ দিনের ব্যবধানে সব ধরনের ডালের কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা। দাম বৃদ্ধির তুলনায় গত ১ মাসে ১৫ থেকে ২০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গরীবের এই মাংসের দাম বৃদ্ধির কারণে চাহিদা ক্রমাগত কমছে।

পড়তে পারেন: গরমে চাষ হবে বিনা উদ্ভাবিত যেসব মুগ ডাল

তিনি জানান, বাজারে দেশী মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি দরে। এক সপ্তাহ আগেও এটি বেচাকেনা হয়েছিল ১০৮ থেকে ১১০ টাকা দরে। সে হিসেবে দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা। আর খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া পাড়ার মোড়ের খুচরা দোকানিরা ১৪০ টাকা দরে বিক্রি করছেন ১১০ টাকা দরের মসুর ডাল।

খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দাম বেড়েছে কালাইয়ের ডাল, মুগের ডাল, অ্যাংকর ডাল, দেশী মটর ডালসহ সব ধরনের ডাল। কালাইয়ের ডাল ১৩০ টাকা যা আগে ছিল ১২০ টাকা, দেশী মটর ১২০ টাকা, সোনামুগ ডাল ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ এক সপ্তাহ আগে ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে কিনতে পেরেছেন ক্রেতারা।

পড়তে পারেন: বিনা উদ্ভাবিত মুগ ডাল চাষে লাভ দ্বিগুণ

বাজারে, দিল্লি সুপার ডাল বাজারে বেচাকেনা হচ্ছে ১২৯ টাকা কেজি দরে, যা আট-নয়দিন আগেও ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। সে হিসেবে দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৯ টাকা। আর খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা কেজি। মোটা মসুর বেচাকেনা হচ্ছে ৯৯ টাকা কেজি দরে। এটি সাতদিন আগে বিক্রি হয়েছে ৮৮ টাকা কেজি দরে। সে হিসেবে দাম বেড়েছে ১১ টাকা।

খুচরা বাজারে মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি দরে, ফাটা মুসর ডাল ১০০ টাকা, দেশী মসুর ডাল ১৩০ টাকা ও খেসারির ডাল ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অ্যাংকর ডাল বেচাকেনা হচ্ছে ৬৫ টাকা কেজি দরে, যা এক সপ্তাহ আগে বেচাকেনা হয়েছিল ৬০ টাকা কেজি দরে। খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭৪ টাকা কেজি দরে। ছোলার ডাল বাজারে বেচাকেনা হচ্ছে ৬৫ টাকা কেজি দরে, যা আগে বেচাকেনা হয়েছিল ৫৮ টাকা কেজি দরে। সে হিসেবে দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৭ টাকা। খুচরা বাজারে বেচাকেনা হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি দরে।

পড়তে পারেন: দুই জেলায় ২ লাখ টন মুগ ডাল উৎপাদন, এলো মাড়াই যন্ত্র

খেসারি ডাল বাজারে বেচাকেনা হচ্ছে ৬৬ টাকা কেজি দরে। একই ডাল কয়েকদিন আগেও বেচাকেনা হয়েছিল ৬০ টাকা কেজি দরে। সে হিসেবে দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৫ টাকা। আর খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা করে।

সাহেব বাজারের মিতা ট্রেডার্সের নকুল সাহা জানান, সব ধরনের ডালের দাম বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে মোটা মসুর ডালের বাজারদর। আমাদের দেশে যে ডাল উৎপাদন হয় তা দিয়ে দেশীয় চাহিদা মেটানো সম্ভব নয়। ফলে আমদানির মাধ্যমে চাহিদা মেটাতে হয়। ডলারের দাম বাড়ার কারণে বেশি দামে কিনতে হয়েছে তাই দাম বেড়েছে। আমাদের কাছে মানুষ কিনতে এসে দাম শুনে নানান প্রশ্ন করছে- কেন বেড়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি।

বাজারের মুদি ব্যবসায়ী শান্ত সাহা বলেন, সবকিছুর দাম বেশি তাই ডালের দামও বেড়েছে। আমাদের কিছু করার নেই। বেশি দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি। মানুষের সয়ে গেছে। তেমন কিছু আর বলেনা। বাজারে মাছ মাংস ডাল সবকিছুর দাম লাগামছাড়া।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ