নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: কচুরিপানাকে কাজে লাগিয়ে ধাপ পদ্ধতিতে চাষাবাদের আওতায় আনতে পারলে দেশের সামগ্রিক কৃষি উৎপাদন বাড়বে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) সৈয়দ আহম্মদ।

সম্প্রতি গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ার মিত্রডাঙ্গায় কৃষি সস্প্রসারণ অধিদপ্তরের বন্যা ও জলাবদ্ধ প্রবণ এলাকায় জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন কৌশল হিসেবে ভাসমান সবজি ও মসলা উৎপাদন প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্প আয়োজিত বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরষ্কারপ্রাপ্ত কৃষক শক্তিপদ র্কীত্তনীয়ার ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষ পরিদর্শনের সময়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

নদী মাতৃক বাংলাদেশের নদী নালা- খাল বিলে পাওয়া কচুরিপানা একটি যাদু উল্লেখ করে সৈয়দ আহম্মদ বলেন, দেশের দক্ষিণাঞ্চালসহ হাওড় এলাকায় নিম্ন ভূমিগুলো বছরের বেশিরভাগ সময় পানিতে নিমজ্জিত থাকে। এ সব এলাকায় কচুরিপানা প্রকৃতিকভাবেই অবস্থান করে।

এই কচুরিপানাকে কাজে লাগিয়ে ধাপ পদ্ধতিতে চাষাবাদের আওতায় আনতে পারলে দেশের সামগ্রিক কৃষি উৎপাদন বাড়বে।

তিনি বলেন, কৃষি বান্ধব বর্তমান সরকারের বাস্তবমুখী নীতির কারণে আজ কৃষির এত উন্নতি হয়েছে। কৃষি যান্ত্রিকীকরণ এখন সময়ের দাবী এবং তা বাণিজ্যিক কৃষিতে পরিনত হয়েছে। ফলে ১ কোটি মে.টন আলু উৎপাদন সম্ভব হয়েছে। সেই সাথে ফল উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে ১ কোটি ২০ লক্ষ মে.টনে পৌছেছে।

কৃষিবিদদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, কৃষি উৎপাদনকে অব্যহত রেখে নতুন নতুন কৃষি প্রযুক্তি প্রনয়ণের মাধ্যমে দেশের সব অঞ্চলের জমিকে কাজে লাগাতে উপস্থিত।

সভায় প্রকল্প পরিচালক কৃষিবিদ মো: সাইফুল ইসলাম পাটওয়ারী জানান, ভাসমান সবজি ও মসলা ফসল চাষাবাদে কৃষকদের উদ্ভুদ্ধ করতে দেশের ২৪টি জেলার ৪৬টি উপজেলায় ১ হাজার ১ শত ৫০টি প্রদর্শনী স্থাপনের কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ লক্ষে কৃষকদের সহায়তা হিসেবে বীজ, শ্রমিক মুজুরী, নেট, ফেরোমন ফাঁদ, পানি ছিটানোর জন্য ঝাঁঝরী, আনুসঙ্গিক খরচসহ প্রশিক্ষণ প্রদান প্রদান করা হয়েছে।

সভা শেষে অতিরিক্ত সচিব টুঙ্গীপাড়ার পাটগাতীতে সমন্বিত কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ প্রকল্প আয়োজিত এক কৃষক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।

এ সময়ে তিনি বর্তমান সরকারের কৃষির নানা দিক তুলে ধরেন। এ ঊর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, জাতির জনকের সুযোগ্য কণ্যা দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষকদের ভাগ্য পরিবর্তনে অত্যন্ত আন্তরিক। তাঁর প্রচেষ্টায় আজ দেশে ১ লক্ষ ৮০ হাজার মে.টন খাদ্য উদ্বৃত্ত এবং ফসলের নি্বিড়তা বেড়ে ফরিদপুর অঞ্চলে শতকরা ২১৪ ভাগে এসে দাড়িয়েছে।

এ সফলতাকে ধরে রাখার আহ্বানও জানান এ কর্মকর্তা। এ সময় কৃষি সস্প্রসারণ অধিদপ্তর ফরিদপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ কিংকর চন্দ্র দাস, ডিএই গোপালগঞ্জ উপপরিচালক কৃষিবিদ  সমীর কুমার গোস্বামী, প্রকল্প পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ মাইদুর রহমান, ডিএই গোপালগঞ্জের জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার কৃষিবিদ হরলাল মধু, অতিরিক্ত উপপরিচালক কৃষিবিদ আব্দুল কাদের, হর্টিকালচার সেন্টার কাশিয়ানীর উপপরিচালক কৃষিবিদ আমিনুল হক, আঞ্চলিক বেতার কৃষি অফিসার কৃষিবিদ এম এম আব্দুর রাজ্জাকসহ ফরিদপুর অঞ্চলের উপজেলা কৃষি অফিসারবৃন্দ ও শতাধিক কৃষক/কৃষাণী উপস্থিত ছিলেন।

পরে তিনি জাতির জনকের মাজার জিয়ারত করেন এবং ফরিদপুর অতিরিক্ত পরিচালকের কার্যালয়ে ডিএই ও অন্যান্য কৃষি সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন। সূত্র: কৃষি তথ্য সার্ভিস।