মোখলেছার হোসেন ও এগ্রিকেয়ার২৪.কম ডেস্ক রিপোর্ট: কফি চাষের জন্য উপযুক্ত জমি নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। জমির অবস্থান ও গুণগতমান যদি ভাল হয় তাহলে কফি যেমন ভালো হবে তেমনি কফি বাগানটিও দীর্ঘস্থায়ী হবে এবং ঝুঁকিমুক্ত থাকবে। অর্থকরি ফসল হিসেবে স্বীকৃত কফি। তাই কফি চাষের জন্য কোন ধরনের জমি প্রয়োজন? তা আগে জানতে হবে।

আপনারা জেনে খুশি হবেন যে, বাংলাদেশের ৯৫ শতাংশ জমি কফি চাষের জন্য উপযোগী। তবে বিশেষ কিছু জমিতে কফি চাষ না করাই ভালো। যেমন অতিরিক্ত বালুমাটি, নদীর চর। বেলে দো-আঁশ মাটিতে কফি চাষ করা যাবে এক্ষেত্রে শুষ্ক মৌসুমে প্রয়োজন মতো পানির ব্যবস্থা করতে হবে। পলিমাটি ও এঁটেল মাটি কফি চাষের জন্য সবচেয়ে বেশি উপযোগী।

কফি চাষের জমি অবশ্যই উচু হতে হবে কোন ভাবেই যেন তাতে পানি জমে না থাকে। বৃষ্টির পানি যেন সাথে সাথে নেমে যেতে পারে সেই বাবস্থা করতে হবে। বৃষ্টি বা বন্যার পানি জমে থাকে এমন জমিতে কফি চাষ করা যাবে না।

এদিকে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্র জানায়, বাংলাদেশের আবহাওয়া ও জলবায়ু কফি চাষের অনুকূল। তবে ভালো ও উন্নত স্বাদের ও ঘ্রাণের কফি পেতে এর চাষ সম্প্রসারণের জন্য পাহাড়ি এলাকায় বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে।

আরও পড়ুন: দেশের মাটিতে বাণিজ্যিক আঙ্গুর চাষে সফল মহাসিন

কফি চাষের উপযোগী মাটি হলো গভীর, ঝুরঝুরে, জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ ও হিউমাস সমৃদ্ধ, হালকা আঁশ মাটি (পিএইচ ৪.৫-৬.৫)। পৃথিবীতে ৬০ প্রজাতির কফি থাকলেও বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদযোগ্য কফির ২টি জাত রয়েছে যেমন- Coffea arabica and Coffea canephora–robusta।

রোবাস্টা জাতের কফি বাংলাদেশের আবহাওয়ায় খুব উপযোগী। এটি সাধারণত সমুদ্র থেকে ৫০০-১০০০ মিটার উচ্চতায় এবং ১০০০-২০০০ মিলিমিটার বৃষ্টিতে ভালো ফলে সেজন্য বাংলাদেশের পাহাড়ি এলাকা যেমন -পার্বত্য অঞ্চল ও টাংগাইলের মধুপুর গড়ের আবহাওয়ায় এটির সম্প্রসারণ সম্ভব।

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের ১২ শতাংশ জমির এলিভেশন প্রায় ১০০০ মিটার। এ ছাড়া পাহাড়ি এলাকাবাদে বাংলাদেশের অন্যান্য এলাকায়ও চাষ করা যাবে। রোবাস্টা জাতের কফি গাছে রাস্ট রোগ কম হয়। এরাবিকা জাত আমাদের দেশে চাষ উপযোগী তবে ফলন কম হয়।

কফি চাষের জন্য কোন ধরনের জমি প্রয়োজন? এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানা যাবে যে কোনো কৃষি অফিস থেকে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন উদ্যোগ এবং মাঠ পর্যায়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাগণের কফি বিষয়ক প্রযুক্তিগত জ্ঞান থাকায় এদেশে কফি চাষ বৃদ্ধি ও এর সম্প্রসারণ করা সম্ভব। আধুনিক প্রক্রিয়াজাত মেশিন ও প্রযুক্তি সহজলভ্যতা হলে এর চাষ বৃদ্ধি পাবে। দেশের কৃষি উদ্যোক্তাগণকে কফি চাষে এগিয়ে আসতে হবে। তাহলেই কফির স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ও বৃদ্ধি করা যাবে। এভাবেই কৃষি ও অর্থনীতিতে সমৃদ্ধ হবে সোনার বাংলাদেশ।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ