অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: করোনার প্রভাব পামঅয়েল তেলেও। আসন্ন শীতেও দাম বাড়তির শঙ্কা রয়েছে। করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা ও আবহাওয়াগত অনিশ্চয়তায় চলতি বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) মালয়েশিয়ায় পাম অয়েলের উৎপাদন কমায় এমন শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় পাম অয়েল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এফজিভি হোল্ডিংস বারহাদ জানিয়েছে, ২০২০ সালের শেষ ভাগে শীত জাঁকিয়ে বসলেও পাম অয়েলের দাম বাড়তি থাকতে পারে। তবে বছরের শেষ ভাগে এসে পাম অয়েলের দাম কমতে পারে বলে মনে করছিলেন বাজার বিশ্লেষকরা। এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে রয়টার্স, স্টার অনলাইন ও এফএমটি ।

মালয়েশিয়াভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি বলছে, করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা ও আবহাওয়াগত অনিশ্চয়তায় চলতি বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) মালয়েশিয়ায় পাম অয়েলের উৎপাদন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে চাহিদার তুলনায় পণ্যটির সরবরাহ থাকতে পারে সীমিত। মূলত এ পরিস্থিতি মালয়েশিয়ার বাজারে শীত মৌসুমেও পাম অয়েলের দাম বাড়তি রাখতে পারে।

করোনা মহামারী ছড়িয়ে পড়ায় মালয়েশিয়ার বাজারে পণ্যটির দাম দফায় দফায় বেড়েছে। এ ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) সময়ে মালয়েশিয়ার বাজারে ভবিষ্যৎ সরবরাহ চুক্তিতে পাম অয়েলের দামে ১৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির দেখা মিলেছে।

খাতসংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, করোনা মহামারীর কারণে লকডাউন ও শ্রমিক সংকটে পাম অয়েলের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। তবে পণ্যটির চাহিদা ছিল তুলনামূলক বেশি। কেননা শীত আসার আগে ক্রেতারা বেশি করে পাম অয়েল কিনেছেন। চাহিদা ও উৎপাদনের ভারসাম্য না থাকায় মালয়েশিয়ার বাজারে পাম অয়েলের দাম ছিল চাঙ্গা। বর্তমানে মালয়েশিয়ার বাজারে ভবিষ্যৎ সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি টন অপরিশোধিত পাম অয়েল ৩ হাজার ৩৩০ রিঙ্গিতের (স্থানীয় মুদ্রা) আশপাশে বা ৮১০ ডলারের ওপরে বিক্রি হচ্ছে।

এ বিষয়ে এফজিভি হোল্ডিংসের প্রধান নির্বাহী হারিস ফাদজিলাহ হাসান বলেন, একদিকে করোনা সংক্রমণ এড়াতে মালয়েশিয়ার সাবাহ প্রদেশে নতুন করে আংশিক লকডাউন জারি করা হয়েছে। অন্যদিকে আবহাওয়া অনিশ্চিত আচরণ করছে। এসব কারণে চলতি বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে মালয়েশিয়ায় পাম অয়েল উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হতে পারে। এর প্রভাব পড়বে পণ্যটির বাজার পরিস্থিতিতে। করোনা মহামারী ও নিশ্চিত আবহাওয়া দীর্ঘমেয়াদে পাম অয়েলের বাড়তি দাম ধরে রাখতে পারে।

চলতি বছর ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়াসহ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোয় লা নিনার প্রভাবে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। বন্যার আশঙ্কা করছেন মালয়েশীয় আবহাওয়াবিদরা। ফলে এবার মালয়েশিয়ায় পাম অয়েল উৎপাদন কমে আসার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে।

এরই মধ্যে পাম বাগানগুলোয় প্রয়োজনের তুলনায় কমসংখ্যক শ্রমিক কাজ করছেন। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে অন্তত ২ হাজার ৭০০ শ্রমিক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।

এছাড়া, সীমান্তে চলাচল সীমিত করে আনা, পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজের সুযোগ কমে আসা—বিদ্যমান সংকট আরো বাড়িয়ে তুলতে পারে। ফলে পাম অয়েলের উৎপাদনে বড় ধরনের ধাক্কা লাগার জোরালো সম্ভাবনা দেখছে এফজিভি হোল্ডিংস বারহাদ। তাই শীত শুরু হয়ে গেলেও সহসাই কমবে না পাম অয়েলের দাম।

করোনার প্রভার পামঅয়েলে, শীতেও দাম বাড়তির শঙ্কা সংবাদের তথ্য বণিক বার্তা থেকে নেওয়া হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ