আন্তর্জাতিক কৃষি ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণে সৃষ্ট বৈশ্বিক মহামারিতে যুক্তরাষ্ট্রে কৃষিকাজে শ্রমিকের সংকট দেখা দিয়েছে বলে সংবাদ প্রকাশ করে বার্তাসংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস। গতকাল শনিবার (৯ মে) বার্তাসংস্থার বিলি প্লেইন কয়েকজন মার্কিন কৃষি খামারের মালিকের কথাপোকথনের একটি প্রতিবেদনে এই সংকটের কথা উঠে এসেছে।

এছাড়াও মধ্য মে থেকে শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্রের ফসলকাটার মৌসুম। কিন্তু করোনায় কৃষি শ্রমিকের সংকট দেখা দিয়েছে । বিদেশি শ্রমিকদের ভিসা দিচ্ছে না দেশটি। আবার অনেকে আসতেও চাচ্ছেন না বলে সংবাদ প্রকাশ করে আল আরাবিয়া।

আল আরাবিয়া তাদের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, দেশের মোট কৃষি শ্রমিকের ৩০ শতাংশ আসে বাইরে থেকে। তাদের জন্য এইচ টু এ ভিসা প্রদান করা হয়। প্রধানত দক্ষিণ আফ্রিকা, পূর্ব ইউরোপ, দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলো থেকে কৃষি শ্রমিক আসে যুক্তরাষ্ট্রে। তারা ৬ থেকে ৭ মাস কাজ করে। শীত শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত তারা মাঠে কাজ করে। তারা প্রধানত প্রতি বছর একই ফার্মে কাজ করে। বাইরের শ্রমিকদের হার্ভেস্টার মেশিন চালানোর দক্ষতা রয়েছে কিন্তু স্থানীয়দের নেই।  এবছর ৫ মিলিয়ন ডলারের হার্ভেস্টার যন্ত্রপাতি ক্রয় করেছেন টেক্সাসের একজন কৃষক। তিনি বলেন, এখন শ্রমিক না পওয়ায় আত্মিয় স্বজন ও বন্ধু বান্ধবদের নিয়ে ফসল তুলছেন। এরজন্য কাজ করতে হচ্ছে সকাল ৬ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত। তার আশংকা তিনি অর্ধেকের কম ফসল তুলতে পারবেন।

অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে মার্কিন ফার্ম মালিকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কৃষি খাতে মোট শ্রমিকের প্রায় ৩০ শতাংশ বিদেশি। বিশেষত আফ্রিকান। তারা একটা নির্দিষ্ট মৌসুমে অস্থায়ী কৃষি শ্রমিকের এইচ-২এ ভিসা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে এসে থাকেন।

কিন্তু নভেল করোনাভাইয়ারাস সংক্রমণের মুখে বিভিন্ন দেশে মার্কিন দূতাবাস থেকে ভিসা দেওয়ার কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখায় এ শ্রমিকের সংকট সৃষ্টি হয়েছে বলে ফার্ম মালিকরা জানান।

কানসাসের একজন কৃষি উৎপাদক রায়ান হাফনার এপি’কে জানান, তারা চান আমেরিকান শ্রমিকদের দিয়ে পুরো কাজটি সেরে ফেলতে। কিন্তু আমেরিকানদের কৃষিক্ষেত্রে জ্ঞান এতো সীমিত যে, তা সম্ভব হয় না। তিনি নিজে কাজের জন্য ২০ জন আমেরিকানকে নিয়ে থাকেন। অবশিষ্ট শ্রমিক আসে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে। তাদেরকে তিনি এই মৌসুমে পাচ্ছেন না বলে, ভয়ে আছেন।

এদিকে, নর্থ সেন্ট্রাল টেক্সাস, ওকলাহোমা, কানসাস, কোলোরাডো, মন্টানা, নর্থ ডাকোটা এসব রাজ্যে এখন বিভিন্ন শস্য যেমন – বাদাম, ক্যানোলা, সয়াবিন, ভুট্টা রোপনের মৌসুম চলছে। এ কাজ যথাযথভাবে শেষ না হলে, যুক্তরাষ্ট্রের আগামী দিনের খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে থাকবে।

অন্যদিকে, মার্কিন কৃষি উৎপাদকদের অনেকেই বলেছেন, আগামী মধ্য জুলাই পর্যন্ত এ সমস্যার কোনো সমাধান দেখছেন না তারা।

আরোও পড়ুন:এবার মৃত বিড়ালের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে স্পেনে