ছবি: সংগৃহীত

ফসল ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: কলাগাছের পাতা হলুদ হয়ে বোঁটার কাছে ভেঙে ঝুলে পড়ে ও আক্রান্ত গাছ আস্তে আস্তে মারা যায়। এটি মূলত ছত্রাকের আক্রমণে হয়ে থাকে। আসুন জেনে নিই কলার পাতা হলুদ হয়ে ভেঙে পড়া রোগের প্রতিকার।

কলার পাতা হলুদ হয়ে ভেঙে পড়া রোগের প্রতিকার করবেন যেভাবে:

কলার তিনটি প্রধান রোগের মধ্যে পানামা রোগ অন্যতম। এটি একটি ছত্রাকজনিত রোগ। এ রোগের প্রতিকার হিসেবে রোগমুক্ত গাছ লাগাতে হবে। রোগাক্রান্ত গাছ তুলে ফেলে দিতে হবে। রোগ প্রতিরোধ সম্পন্ন জাতের চাষ করতে হবে। যেমন- বারিকলা-১, বারিকলা-২। আক্রান্ত জমিতে পরের বছর কলা চাষ করা যাবে না। এ ছাড়া টিল্ট-২৫০ ইসি (০.০৪%) ছত্রাকনাশক অনুমোদিত মাত্রায় আক্রান্ত গাছে প্রয়োগ করেও সুফল পাওয়া যেতে পারে।

কলার পাতা হলুদ হয়ে ভেঙে পড়া রোগের প্রতিকার লেখাটি লিখেছেন কৃষিবিদ মোহাম্মদ মারুফ কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ, কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ফার্মগেট, ঢাকা। লেখাটি কৃষি তথ্য সার্ভিস থেকে নেওয়া হয়েছে।

আধুনিক পদ্ধতিতে কলা চাষ জেনে নিই

কলা বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফল যা সারা বছর পাওয়া যায়। কলাকে প্রাচীন সাহিত্যে কদলি বলা হতো। কলাগাছ, কলাপাতা, কলাগাছের শিকড় ও কলা সবই উপকারী। কলাগাছ ও কলাপাতা শুধুমাত্র পশু খাদ্য নয়। এদের আছে আশ্চার্যজনক ভেষজ গুণ। রোগ নিরাময়ে অদ্বিতীয়।

বাণিজ্যিক ভিত্তিতে যেসব জাতের আবাদ হচ্ছে তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য জাতগুলো হচ্ছে বারিকলা-১ ও বারিকলা-২ (আনাজিকলা), অমৃতসাগর, সবরি, চম্পা, কবরি, মেহেরসাগর, বীচিকলা অন্যতম।

মাটি :
পর্যাপ্ত রোদযুক্ত ও পানি নিকাশের সুবিধাযুক্ত উঁচু জমি কলা চাষের জন্য উপযুক্ত। উর্বর দো-আঁশ মাটি কলা চাষের জন্য উত্তম। চাষ ও মই দিয়ে জমি সমতল ও আগাছামুক্ত করে নিতে হবে।

চারা রোপণ :
কলার চারা বছরে ৩ সময়ে রোপণ করা যায়। ১ম রোপণ কাল : আশ্বিন-কার্তিক সবচেয়ে ভালো সময়। ২য় রোপণ কাল : মাঘ-ফাল্গুন ভালো সময়। ৩য় রোপণ কাল : চৈত্র-বৈশাখ মোটামুটি ভালো সময়।

আরও পড়ুন: যে পদ্ধতিতে শিম চাষে শতভাগ সফলতা

চারার দূরত্ব :
সারি থেকে সারির দূরত্ব ২ মিটার এবং চারা থেকে চারার দূরত্ব ২ মিটার।

গর্ত তৈরি :
চারা রোপণের মাসখানেক আগেই গর্ত খনন করতে হবে। গর্তের আকার হবে ৬০ সেমি. চওড়া ও ৬০ সেমি. গভীর। গর্ত তৈরি হয়ে গেলে গোবর ও টিএসপি সার মাটির সাথে মিশিয়ে গর্ত ভরে রাখতে হবে।

চারা রোপণ :
রোপণের জন্য অসি তেউড় উত্তম। অসি তেউরের পাতা সরু, সুঁচালো এবং অনেকটা তলোয়ারের মতো, গুড়ি বড় ও শক্তিশালী এবং কা- ক্রমশ গোড়া থেকে ওপরের দিকে সরু হয়। তিন মাস বয়স্ক সুস্থ সবল তেউড় রোগমুক্ত গাছ থেকে সংগ্রহ করতে হয়।

সার প্রয়োগ:
অর্ধেক গোবর জমি তৈরির সময় এবং অবশিষ্ট অর্ধেক গর্তে দিতে হবে। অর্ধেক টিএসপি একই সঙ্গে গর্তে প্রয়োগ করতে হবে। রোপণের দেড় থেকে দুই মাস পর ৪ ভাগের ১ ভাগ ইউরিয়া, অর্ধেক এমপি ও বাকি টিএসপি জমিতে ছিটিয়ে ভালোভাবে কুপিয়ে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হবে। এর দুই থেকে আড়াই মাস পর গাছ প্রতি বাকি অর্ধেক এমপি ও অর্ধেক ইউরিয়া প্রয়োগ করতে হবে। মোচা বের হওয়ার সময় অবশিষ্ট ৪ ভাগের ১ ভাগ ইউরিয়া জমিতে ছিটিয়ে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হবে।

আরও পড়ুন:পুষ্টিকর লটকন চাষ করবেন যেভাবে

পরিচর্যা :
চারা রোপণের সময় মাটিতে পর্যাপ্ত রস না থাকলে তখনই সেচ দেয়া উচিত। এছাড়া শুকনো মৌসুমে ১৫-২০ দিন পর পর সেচ দেয়া দরকার। বর্ষার সময় কলা বাগানে যাতে পানি জমতে না পারে তার জন্য নালা থাকা আব্যশক। মোচা আসার পর গাছপ্রতি মাত্র একটি তেউড় বাড়তে দেয়া ভালো।

আধুনিক পদ্ধতিতে কলা চাষ শিরোনামে লেখাটি কৃষি তথ্য সার্ভিস থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ