ডেস্ক প্রতিবেদন, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: লটকন বাংলাদেশের একটি অতি পরিচিত ফল। লটকনের গাছ মাঝারি আকৃতির চিরসবুজ। গাছে গোল গোল ক্যাপসুলের মত অনেক গোছায় ফল হয়ে থাকে। ফলের খোসা নরম ও পুরু। প্রতি ফলে তিনটি করে বীজ থাকে। উৎপাদনের পরিমাণ বেশি না হলেও দেশের সব এলাকাতেই এর চাষ হয়।বিশেষ করে নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর নেত্রকোণা ও সিলেট এলাকায় লটকন চাষ বেশি হয়।

চলুন পুষ্টিকর লটকনের চাষ পদ্ধতি জেনে নেওয়া যাক:

পদ্ধতি:
১. শুনিকাশযুক্ত প্রায় সব ধরণের মাটিতেই লটকনের চাষ করা যায়।
২. তবে বেলে দো-আঁশ মাটি সবচেয়ে উপযোগী।
৩. উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমি এবং উন্মুক্ত বা আংশিক ছায়া চাষ করা যায়।

রোপণের সময়:
১. বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাস গাছ রোপণের উপযুক্ত সময়
২. তবে বর্ষার শেষের দিকে অর্থাৎ ভাদ্র-আশ্বিন মাসেও গাছ লাগানো যায়।

আরও পড়ুন: বাড়ির ছাদে ড্রাগন ফলের চাষ পদ্ধতি

রোপণের দূরত্ব:
১. সারি থেকে সারির দূরত্ব ঃ ৬ মিটার
২. চারা থেকে চারার দূরত্ব ঃ ৬ মিটার

গর্ত তৈরি:
১. গর্তের আকার হবে ৯০ সেমি
২. গর্ত করার ১০-১৫ দিন পর প্রতি গর্তে নিম্নরূপ হারে সার প্রয়োগ করে মাটির সঙ্গে ভালভাবে মিশিয়ে গর্ত ভরাট করতে হবে।

সারের পরিমাণ:
১) গোবর / জৈব সার ১৫-২০ কেজি
২) টিএসপি ৫০০ গ্রাম
৩) এমপি ২৫০ গ্রাম

৩. গর্ত ভর্তি করার সময় মাটি শুকনা হলে গর্তে পানি দিয়ে মাটি ভিজিয়ে দিতে হবে।

পরিচর্যা:
১. সাধারণত বীজ দিয়ে লটকনের বংশ বিস্তার করা যায়।
২. সমতল জমিতে বর্গাকার বা আয়তাকার পদ্ধতিতে লটকনের চার লাগানো যেতে পারে।
৩. গর্ত ভর্তি করার ১০-১৫ দিন পর গর্তের মাঝখানে নির্বাচিত চারা সোজাভাবে লাগিয়ে চারদিকে মাটি দিয়ে চেপে দিতে হবে।
৪. চারা লাগানোর পর পর পানি দিতে হবে।
৫. প্রতি ১-২ দিন অন্তর পানি দিতে হবে।
৬. প্রয়োজনবোধে বাঁমের খুঁটি ও বেড়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

সার প্রয়োগ:
প্রতি বছর পূর্ণবয়স্ক গাছে গোবর / জৈব সার ১৫-২০ কেজি;
২) ইউরিয়া ১ কেজি
৩) টিএসপি ০.৫ কেজি
৪) এমপি ০.৫ কেজি

অথবা মিশ্রসার নিম্নোক্তহারে প্রয়োগ করা যেতে পারে।
পরিমাণ:
১) গোবর / জৈব সার ১৫-২০ কেজি
২) এনপিকেএস মিশ্র সার (১২-১৫-২০-৬) ১ কেজি

উপরোক্ত সার গাছের গোড়া থেকে ১ মিটার দূরে যতটুকু জায়গায় দুপুুর বেলা ছায়াপড়ে ততটুকু জায়গায় ছিটিয়ে কোঁদাল দিয়ে কুপিয়ে মাটির সাথে ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে।

আরও পড়ুন: যেভাবে কলা চাষে শতভাগ সফলতা আসে

সেচ:
১. চারা রোপণের প্রথম দিকে ঘন ঘন সেচ দেয়া দরকার
২. ফল ধরার পর দু’একটা সেচ দিতে পারলে উপকার পাওয়া যায়।

ডাল ছাঁটাই:
১. গাছের মরা, রোগাক্রান্ত ও কীটাক্রান্ত ডাল ছাঁটাই করে দিতে হবে।

ফল সংগহ:
শীতের শেষে গাছে ফুল আসে। আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে ফল পাকে।

পুষ্টিকর লটকন চাষ করবেন যেভাবে শিরোনামে লেখাটি কৃষি তথ্য সার্ভিস থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার / এমবি