ফসল ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের কয়েক’শ চাষি চাষ করছেন বোম্বাই জাতের মরিচ। এসব চাষিরা কয়েক বছর ধরে আধুনিক পদ্বতিতে বোম্বাই মরিচ চাষাবাদ করছেন। তারা মরিচ নিয়ে বাজারে গেলে মিলে টাকা; তাই বোম্বাই মরিচকেই টাকার মানিব্যাগ বলছেন।

স্থানীয় পর্যায়ে কৃষকরা এ মসলা ফসল চাষ করে আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। প্রতিবছর শুধু বোম্বাই মরিচ বিক্রির পরিমাণ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায় বলেও জানান তারা।

ইউনিয়নের স্থানীয় পাখিমারা বাজারেই বিক্রি করেন মরিচগুলো। এখান থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা কিনে নিয়ে যান। নীলগঞ্জের এ বোম্বাই মরিচ ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক চাহিদাও আছে।

সারাদেশে সাধারণত কৃষকরা কাচা মরিচ চাষ করলেও পটুয়াখালীর নীলগঞ্জ ইউনিয়নের মতো আধুনিক পদ্ধতিতে বাণিজ্যিকভাবে বোম্বাই মরিচ চাষাবাদ খুব একটা দেখা যায় না। এখানকার কৃষকরা তাদের জমি উঁচু করে বেড তৈরি করেন।

এগ্রিকেয়ার২৪.কমের আরোও নিউজ পড়তে পারেন:

এলাচ ২৫০০, জিরার কেজিতে বাড়লো ২০ টাকা

ভারতীয় এলাচের কেজিতে কমলো ২০০ টাকা

অপ্রধান মসলা ধনিয়া চাষে ধনী ময়েজ

এরপর সেখানে বাঁশ কিংবা লোহার পাইপ দিয়ে কাঠামো তৈরি করে তার ওপর পলিথিন শিট দিয়ে ঢেকে দেন। এ শেটের নিচে চলে মরিচ আবাদ। এতে তাদের খুব বেশি খরচ না হলেও লাভ অনেক বেশি। বর্তমানে পাইকারি বাজারে তারা প্রতি পিস বোম্বাই মরিচ ২-৩ টাকায় বিক্রি করছেন।

নীলগঞ্জ ইউনিয়নের কুমিরমারা গ্রামের কৃষক সুলতান গাজী বলেন, আমার বাড়ির পাশে ৪ শতক জমিতে দুটি পলিথিন শেটের বেড তৈরি করে মরিচ লাগিয়েছি। এতে আমার খরচ হয়েছে মোট ১০ হাজার টাকা। এখন পর্যন্ত আমি ৫৪ হাজার টাকার মরিচ বিক্রি করেছি।

এই কৃষক আরো বলেন, এখনও যে মরিচ আছে, তাতে আমি অন্তত দেড় লাখ টাকার মরিচ বিক্রি করতে পারবো। এখন মোবাইলেও মরিচ বিক্রি হয়ে যায়। পাইকাররা বিকাশে টাকা পাঠিয়ে দিলে আমরাও গাড়িতে মরিচ পাঠিয়ে দিই। অন্য ফসল পরিবহনে সমস্যা হলেও বোম্বাই মরিচ পরিবহন সবচেয়ে সহজ। গত সপ্তাহে একটি বাজারের ব্যাগে করে মরিচ নিয়ে গিয়ে ৮ হাজার টাকা বিক্রি করেছি।

এগ্রিকেয়ার২৪.কমের আরোও নিউজ পড়তে পারেন:

৩০ প্রজাতির ফল চাষে তাক লাগিয়েছেন সুশান্ত তঞ্চঙ্গ্যা

বিশ্বের সবচেয়ে দামী মসলা “জাফরান” চাষ করবেন যেভাবে

উত্তরাঞ্চলে অর্থকরী ফসল কফি চাষের সম্ভাবনা

তবে নীলগঞ্জ ইউনিয়নের কৃষকরা শুধু বোম্বাই মরিচ নয়; তারা গ্রীষ্মকালীন বিভিন্ন শাক-সবজিও উৎপাদন করছেন। তাদের উৎপাদিত ফসলের তালিকায় আছে তরমুজ, টমেটো, রেড বিট, ক্যাপসিকাম, রক মেলন, লেটুসপাতা, থাইপাতাসহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ফসল। এসব চাষাবাদের জন্য তারা পলিথিন শেট দিয়ে যে হাউজ তৈরি করছেন এর নাম দিয়েছেন কৃষকের গ্রিন হাউজ।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পটুয়াখালী সরেজমিন গবেষণা বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, আধুনিক কৃষির সঙ্গে নীলগঞ্জের কৃষকরা সরাসরি সম্পৃক্ত। তারা অসময়ে ফসল ফলিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। তাদের উৎপাদিত পণ্যের জন্য নতুন বাজার তৈরি হয়েছে। বোম্বাই মরিচ এখন এ এলাকার কৃষকদের কাছে একটি অর্থকরী ফসল হিসেবে পরিচিত। সরকারের কৃষি বিভাগও এ বিষয়ে তাদের সার্বিক সহযোগিতা করে আসছে।

কৃষকের মানিব্যাগ বোম্বাই মরিচ সংবাদের তথ্য জাগো নিউজ থেকে নেওয়া হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ