নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কমঃ  কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, কৃষিপণ্যের রপ্তানিতে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্যাক হাউস ও অ্যাক্রেডিটেশন ল্যাব করবে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আধুনিক প্যাক হাউস স্থাপনের জন্য পূর্বাচলে ২ একর জমি কৃষি মন্ত্রণালয়কে দিয়েছেন।

মন্ত্রী আরোও বলেন, এই প্যাক হাউস নির্মাণের জন্য দ্রুত উদ্যোগ ও প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। এটি নির্মিত হলে ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিদেশে এদেশের ফলমূল ও শাকসবজি রপ্তানি বহুগুণ বাড়বে। এবং কৃষি দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখতে সক্ষম হবে।

আজ মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর ২০২০) রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের মিলনায়তনে হর্টিকালচার এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (হর্টেক্স) আয়োজিত কৃষিপণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধিতে ‘আধুনিক প্যাক হাউজ সুবিধা এবং এ্যাক্রিডিটেড ল্যাবরেটরি নির্মাণ বিষয়ে পরামর্শ কর্মশালা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।

মন্ত্রী আরও বলেন, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ও বাণিজ্যিকরণের দিকে যাচ্ছে। কৃষি অবশ্যই আধুনিক হবে। সেজন্য, একই সাথে কৃষিপণ্যের আন্তর্জাতিক বাজার বাড়াতে হবে। এটির ক্ষেত্রে অন্তরায় হলো প্যাকেজিং এবং নিরাপদ ফুড হিসাবে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য সার্টিফিকেটের অভাব। পূর্বাচলে এই প্যাক হাউস ও ল্যাব স্থাপিত হলে এইসব অন্তরায় দূর হবে। এছাড়া, বিমানবন্দরের কাছে হওয়ায় পণ্য পরিবহণ সহজতর হবে।

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন কৃষিসচিব মো: মেসবাহুল ইসলাম। কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) মো: হাসানুজ্জামান কল্লোল, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, হর্টেক্স ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: মনজুরুল হান্নান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মো: হামিদুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. মোহা: কামরুল হাছান। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞ, গবেষক, ফল ও সবজি রপ্তানিকারক এসোসিয়েশন, ভ্যালু চেইন এক্সপার্ট, ল্যাবরেটরি এক্সপার্ট/বিজ্ঞানী ও প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য,বাংলাদেশ হতে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তাজা ফলমূল ও শাকসবজি রপ্তানি হয়ে আসছে। এছাড়া প্রক্রিয়াজাতকৃত খাদ্যের চাহিদা দিনকে দিন বেড়েই চলছে। সাড়া পৃথিবীজুড়ে এ বাজারের পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বর্তমান বিশ্বে রপ্তানিকারক দেশকে আমদানিকারক দেশের চাহিদা অনুযায়ী খাদ্যপণ্য সরবরাহ করতে হয়।

এছাড়া International Plant Protection Convention (IPPC) কর্তৃক গৃহীত International Standards for Phytosanitary Measures (ISPM) অনুসরণ করে Phytosanitary Certificate ইস্যু হয়ে থাকে। ইদানিং Good Agricultural Practices Certificate এবং MRL, Heavy metal এবং অণুজীবের বিষয়েও আমদানিকারক দেশ তাদের চাহিদায় উল্লেখ করে থাকে।

বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্য, ইটালী, ফ্রান্স, গ্রিস, জার্মানী, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, অষ্ট্রিয়া, নেদারল্যান্ডস, মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহ, মালয়েশিয়া, হংকং, শ্রীলংকাসহ প্রায় ৪৩টি দেশে তাজা শাকসবজি ও ফলমূল রপ্তানি হয়ে থাকে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১৬৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের তাজা শাকসবজি ও ফলমূল এদেশ হতে রপ্তানি হয়েছে। এছাড়া ২৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের আলু রপ্তানি হয়েছে।

শাকসবজি ও ফলমূল রপ্তানির এই ধারাকে বেগবান করতে আধুনিক প্যাক হাউজ সুবিধা এবং এ্যাক্রিডিটেড ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠা একান্ত জরুরী। বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার কৃষি মন্ত্রণালয়কে পূর্বাচলে ২ (দুই) একর জমি প্রদান করেছে আধুনিক প্যাক হাউজ নির্মাণের জন্য। এ প্যাক হাউজ নির্মাণে বিশেষজ্ঞগণের মতামত,সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের অভিজ্ঞতা এবং ব্যবহারকারীগণের মতামত ও পরামর্শ গ্রহণের জন্য“পরামর্শ কর্মশালা” টির আয়োজন করা হয়েছে।

কৃষিপণ্যের রপ্তানিতে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্যাক হাউস ও অ্যাক্রেডিটেশন ল্যাব করবে সরকার সংবাদের তথ্য এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অফিসার মো: কামরুল ইসলাম ভূইয়া।

 

এগ্রিকেয়ার/ এমএইচ