প্রাণি ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: বর্তমান সরকারের ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত দেশ গড়ার অন্যতম হাতিয়ার প্রাণিসম্পদ শিল্প বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রইছউল আলম মন্ডল।

তিনি বলেছেন, এখাতটির গুরুত্ব দিন দিন বেড়েই চলেছে। দেশের সাধারণ মানুষের প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান প্রাণিজ আমিষসহ অন্যান্য পুষ্টির চাহিদা পূরণে কৃষি খাতে প্রাণিসম্পদের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

আজ শনিবার (৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) কর্তৃক আয়োজিত ‘‘Market Based Climate Smart Agriculture (CSA) Approaches for Dairy Development in Bangladesh’’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব মোঃ রইছউল আলম মন্ডল এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. নাথু রাম সরকার এর সভাপতিত্বে দিনব্যাপী কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কাজী ওয়াছি উদ্দিন, অতিরিক্ত সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সচিব বলেন, এই কর্মশালায় উপস্থিত দেশী বিদেশী ডেইরী বিশেষজ্ঞ এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তির মূল্যবান মতামতের আলোকে এ দেশে ডেইরি সেক্টরের উন্নয়নের জন্য দিক নির্দেশনামূলক একটি গ্রহণযোগ্য সুপারিশমালা তৈরী হবে।

প্রণীত দিক নির্দেশনা ও সুপারিশমালার আলোকে এ দেশে ডেইরী উন্নয়নের নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে বলে আমরা মনে করি। তিনি আরও বলেন, বাস্তবসম্মত গবেষণা প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে খামারীদের সমস্যা নিরূপণের জন্য টেকসই ও যুগোপযোগী প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও হস্তান্তর সম্ভব হবে।

তবে প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও হস্তান্তরই শেষ কথা নয়, প্রযুক্তিগুলো প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে যথাযথভাবে সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার উপরই নির্ভর করবে এর সফলতা।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কাজী ওয়াছি উদ্দিন বলেন, বর্তমান সরকার কৃষি বান্ধব সরকার এবং কৃষি গবেষণা তথা প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সদা সচেষ্ট।

তিনি জানান, আজকের এই অনুষ্ঠান ভবিষ্যৎ প্রাণিসম্পদ উন্নয়নের জন্য প্রযুক্তি হস্তান্তরের যে সুযোগ সৃষ্টি করেছে, তা আমাদের বিজ্ঞানী ও সম্প্রসারণ কর্মীদের মনে রেখে গবেষণা পরিকল্পনা প্রণয়ন করবেন, যাতে খামারিদের সমস্যাভিত্তিক প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে সহজ হয় এবং খামারিগণ উপকৃত হয়।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডা. হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক বলেন, ডেইরি সেক্টরের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য গবেষণা কর্মসূচি হাতে নিতে হবে।

ইতোমধ্যে বিএলআরআই কর্তৃক উদ্ভাবিত বেশ কিছু প্রযুক্তি আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে যা আমরা মাঠ পর্যায়ে সম্প্রসারণ করছি। আগামীতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।

সভাপতির বক্তব্যে ড. নাথু রাম সরকার বলেন, স্বল্প জায়গায় অধিক নিরাপদ আমিষের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে অঞ্চল ভিত্তিক সমস্যা নিরুপন করে নতুন নতুন গবেষণা কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে যা বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত জরুরী ও প্রয়োজনীয়।

তিনি আরও বলেন, ‘‘Market Based Climate Smart Agriculture (CSA) Approaches for Dairy Development in Bangladesh’’ শীর্ষক দিন ব্যাপী কর্মশালায় আমরা ৫টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছি যা ডেইরি ও প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে অংশ গ্রহণকারিদের পরামর্শে গবেষণা কার্যক্রম আরো ফলপ্রসু হবে বলে আমরা মনে করি।

দিনব্যাপী এই কর্মশালায় বাংলাদেশের ডেইরি প্রেক্ষাপটে ৩টি প্রবন্ধ এবং সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় অস্টেলিয়ার ২টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়।

কর্মশালায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার শিক্ষক, বিজ্ঞানী, সম্প্রসারণকর্মী ও উদ্যোক্তাসহ প্রায় ২০০ জন উপস্থিত ছিলেন। ছবি ও তথ্য: মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক পেজ।