নির্দিষ্ট সীমা রেখে শস্য

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া স্থল, জল ও আকাশপথে ইউক্রেনে একযোগে হামলা চালায়। রুশ সেনাদের হাতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে দেশটির সব সমুদ্রবন্দর। বন্ধ হয়ে যায় রফতানি। তবে, খাদ্যশস্য রফতানিতে নতুন রুপে ফিরছে দেশটি। এমনই জানিয়েছে ইউক্রেনের উপকৃষিমন্ত্রী তারাস ভিসোতস্কি।

যুদ্ধের কারণে উৎপাদিত খাদ্যশস্য পশ্চিম সীমান্ত দিয়ে স্থলপথে রফতানি করতে বাধ্য হচ্ছে দেশটি। তরপরও গত মাসে ইউক্রেন ১৭ লাখ টন খাদ্যশস্য রফতানি করেছিল। তবে চলতি মাসে রফতানির পরিমাণ বেড়ে ২০ লাখ টনে উন্নীত হবে। স্থলপথে দেশটি সর্বোচ্চ সক্ষমতায় খাদ্যশস্য রফতানি করছে।

সম্প্রতি ইউক্রেনের ওডিসা মিলিটারি অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের মুখপাত্র সার্জেই ব্র্যাটচাক ওয়ার্ল্ড গ্রেইনকে বলেন, রুশ সেনাদের পুঁতে রাখা মাইন অপসারণে আমাদের মিত্র দেশগুলোর সহায়তা প্রয়োজন। পাশাপাশি সমুদ্রবন্দরগুলোর মধ্য দিয়ে খাদ্যশস্য রফতানির জন্য একটি সুরক্ষিত পথ তৈরি করে দেয়ার আহ্বানও জানান তিনি।

পড়তে পারেন: উৎপাদন শঙ্কায় গম রফতানি বন্ধ করবে ভারত

ইউক্রেন বিশ্বের শীর্ষ খাদ্যশস্য রফতানিকারক দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। নিজেদের দখলে থাকা অঞ্চলগুলোয় দেশটি অন্তত তিন কোটি টন খাদ্যশস্য মজুদ করে রেখেছে। এসব শস্য স্থলপথ, নদী ও রেলপথে রফতানির জোর প্রয়াস চালাচ্ছে দেশটির সরকার। ইউক্রেন সাধারণত সমুদ্রপথে প্রতি মাসে ৫০ লাখ টন খাদ্যশস্য রফতানি করে। কিন্তু রাশিয়ার আক্রমণের পর মাসভিত্তিক রফতানির পরিমাণ ১০ লাখ টনে নেমে এসেছে।

এদিকে আর্জেন্টিনা বিশ্বের শীর্ষ গম রফতানিকারক। দেশটিতে ২০২২-২৩ বিপণন মৌসুমে গমের উৎপাদন কমতে পারে বলে জানিয়েছে বুয়েন্স আয়ার্স গ্রেইনস এক্সচেঞ্জ। এছাড়া আগের দুই মৌসুমেও আবাদ নিম্নমুখী ছিল।

সংস্থাটির দেওয়া তথ্য বলছে, গত বছর থেকেই ভয়াবহ খরায় বিপর্যস্ত আর্জেন্টিনার কৃষি খাত। প্রধান প্রধান উৎপাদন অঞ্চলে পরিস্থিতির উন্নতি না হলে  দেশটিতে গমের আবাদ কমে যেতে পারে। এছাড়া সয়াবিন তেল ও সয়ামিল রফতানিতেও নেতৃস্থানীয় লাতিন আমেরিকার এ দেশ।

এক্সচেঞ্জের দেয়া তথ্যমতে, আর্জেন্টিনায় গম আবাদি জমির পরিমাণ ধরা হয়েছে ৬৪ লাখ হেক্টর। এক মাস আগে দেয়া পূর্বাভাসে জমির পরিমাণ ধরা হয়েছিল ৬৬ লাখ হেক্টর। এ নিয়ে টানা তিন মৌসুমে দেশটিতে গমের আবাদ কমতে যাচ্ছে।

পড়তে পারেন: রেকর্ড গড়তে পারে গম-ভুট্টার দাম

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে খাদ্যশস্য সরবরাহে দেশটির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ কৃষ্ণ সাগরীয় বন্দরগুলো অবরুদ্ধ থাকায় তলানিতে ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রফতানি। অন্যদিকে পশ্চিমা দেশগুলোর একের পর এক নিষেধাজ্ঞার কারণে প্রতিবন্ধকতার মধ্যে রাশিয়ার রফতানিও।

কিন্তু গম আবাদের ক্ষেত্রে খুব খারাপ সময় পার করছে আর্জেন্টিনার কৃষক। মাটিতে আর্দ্রতার পরিমাণ কম থাকায় উপযুক্ত সময়ে আবাদ সম্পন্ন করা যাচ্ছে না। তার ওপর সারের আকাশছোঁয়া দাম পরিস্থিতিতে আরো জটিল করে তুলেছে। এসব চ্যালেঞ্জ উৎপাদন বৃদ্ধির সক্ষমতায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

পড়তে পারেন: আবারো ভারতীয় গম আমদানি শুরু

বুয়েন্স আয়ার্স গ্রেইনস একচেঞ্জ কর্তৃক প্রকাশিত সাপ্তাহিক খাদ্যশস্যবিষয়ক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যদি শিগগিরই খরা পরিস্থিতির উন্নতি না হয়, তবে আবাদ পূর্বাভাস আরো কমানো হতে পারে। কারণ প্রধান কৃষি উৎপাদন অঞ্চলগুলোয় আবাদের সময় প্রায় শেষের দিকে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ