খাদ্য ও পুষ্টি নিশ্চিতের

নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: খাদ্য ও পুষ্টি নিশ্চিতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সরকার নানা কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেছেন, বর্তমান সরকারের নির্বচনী ইশতেহারে পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টি অগ্রাধিকার দেয়ার পাশাপাশি এটি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে।

তিনি বলেন, সবার জন্য খাদ্য এবং তার সঙ্গে প্রয়োজনীয় পুষ্টি নিশ্চিত করা বর্তমান সরকারের একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সরকার নানাবিধ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

আজ বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২০) রাজধানীর ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনীয়ার্স বাংলাদেশ(আইডিইবি) মিলনায়তনে বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম (বিসিজেএফ) আয়োজিত ‘জলবায়ু পরিবর্তন : খাদ্য নিরাপত্তা  নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তায় করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং এর পাশাপাশি জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও কৃষিজমি কমে যাওয়ায় বর্তমান সরকার খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিকল্পে সারের একাধিকবার মূল্য কমানো হয়েছে। পাশাপাশি কৃষি ঋণ বিতরণ, গবেষণায় অগ্রাধীকার প্রদান, প্রণোদনা দেয়ার ফলে খাদ্য উৎপাদনে স্বযংসম্পর্ণ হয়েছি আমরা।

জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্বের সমস্যা উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ভৌগোলিক অবস্থান ও প্রাকৃতিক কারণে ঝুকিপুর্ণ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ৬ষ্ঠ স্থানে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও মাটির লবণাক্ততা বৃদ্ধির ফলে উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে।

তিনি জানান, অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, খড়া ইত্যাদির কারণে শুধু কৃষিই নয়, মানুষের চিরচেনা স্বাভাবিক জীবন প্রবাহই আজ ব্যহত। দেশের ৪০শতাংশ লোক কৃষির সাথে সরসরি জরিত। ভবিষৎ মেধাবী জাতী গঠনে নিরাপদ ও পষ্টিকর খাবার নিশ্চিত জরুরী।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মানুষের জীবন ও জীবিকার ওপর এর প্রভাব অত্যন্ত ক্ষতিকর। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের ক্ষুধা ও দারিদ্র্য বাড়ছে। তাই পৃথিবীর সকল দেশ ও মানুষ এখন জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে উদ্বিগ্ন।

তবে জলবায়ু পরিবর্তন জনিত সমস্যা নিয়ে উদ্বিগ্ন না হয়ে এটাকে মোকাবেলার চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে হবে। যদিও কৃষিতে প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে খাদ্য উৎপাদনে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন পুরোপুরি রোধ করা যায়না। তবে, লাগসই প্রযুক্তি ও কৌশল ব্যবহারের ফলে খাদ্য নিরাপত্তা কিছুটা নিশ্চিত করা যায়। সেকারণে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবেলায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

প্রকৃতি, পরিবেশ ও জলবায়ুর সাথে জীববৈচিত্র্যের রয়েছে অস্তিত্বের সম্পর্ক উল্লেখ করে ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, দেশের বিভিন্ন এলাকা দিয়ে প্রবাহিত অনেক নদীর গতিপথের পরিবর্তন হচ্ছে। কোথাও নদী শুকিয়ে যাচ্ছে। পানি সেচ বিঘ্নিত হচ্ছে। অনাবৃষ্টি ও খরার প্রকোপে ক্ষতিগ্রস্থ হবে কৃষির উৎপাদন।

বাংলাদেশের শস্যখাতে অভিযোজন কর্মসূচি মোটামুটিভাবে এগিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, খরা, বন্যা, তাপ, লবনাক্ত জলমগ্নতা ও পরিবেশ সহিষ্ণু ফসলের জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। কৃষিকে প্রক্রিয়াজাত, লাভজনক ও যান্ত্রিকীকরণে কাজ করছে বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকার।

সেমিনারে আলোচকেরা বলেন, কার্বন নি:স্বরণ বন্ধ করতে হবে। খাদ্যের গুনগত মান বিচার না করে শুধু স্বাদের ওপর প্রাধান্য না দেয়া। খাদ্যভ্যাস ও রান্নভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে।

তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আমরা ঠিক কোন কোন সমস্যায় পড়তে কৃষি খাতে আগে থেকেই নির্ধারন করে সহিষ্ণ জাত উদ্ভাবন করেছে। খাদ্য নিরাপত্তা আমাদের অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িত।অস্তিকে টিকিয়ে রাখতে সরকার নানাবিধ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে,পর্যায়ক্রমে তা বাস্তবায়ন করছে। রাইস ভিশন বাস্তবায়ন করতে কাজ করছে সরকার। খাদ্য প্রক্রিয়াজাত ও মূল্য সংযোজন জরুরী।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন আডিইবি’র সভাপতি একেএমএ হামিদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক ড. মো: শাহজাহান কবীর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্ত এর মহাপরিচলক ড. মো: আব্দুল মুঈদ।

আলোচক হিসেবে ছিলেন হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন এর চেয়ারম্যান ড. মো: সেলিম উদ্দিন, অর্থনীতিবিদ ড. মো: এমএ আসাদুজ্জামান, কৃষি তথ্য সার্ভিস এর পরিচালক মো: আসাদুল্লাহ।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হাজী দানেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মো: সাজ্জাত হোসেন সরকার। স্বাগত বক্তব্য করেন বিসিজেএফ এর সাধারণ সম্পাদক মোগাহার হোসেন ও অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সংগঠনের সভাপতি কাওসার রহমান।

খাদ্য ও পুষ্টি নিশ্চিতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সরকার নানা কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সংবাদটির তথ্য কৃষিমন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন: জৈব প্রযুক্তি উন্নয়নে জীব বিজ্ঞানীদেরই অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে; কৃষিমন্ত্রী