জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: দেশের প্রাণীসম্পদে বৃহৎ আকারে যে কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বড় ভূমিকা রাখছে তার মধ্য অন্যতম নাম নারিশ। শুধু পণ্য উৎপাদন ও বিপণন নয় খামারিদের জীবনমান উন্নয়ন ও নিরাপদ প্রাণীজ খাদ্য নিয়েও কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।

‘ফার্মাস ফাস্ট’ স্লোগান নিয়ে পথ চলা এ প্রতিষ্ঠানটি খামারিদের বিভিন্নভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তোলার পাশাপাশি খামার স্থাপন, লালন পালন এবং কীভাবে সফলতা মিলবে তারও দিকনির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছে।

রাজধানীতে প্রাণীসম্পদ সপ্তাহ উপলক্ষ্যে আয়োজিত প্রাণি বিষয়ক প্রদর্শনীতে নারিশ এর প্যাভিলিয়নে থাকা কর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য উঠে এসেছে। প্রদর্শনীর মূল ফটক পার হয়ে কয়েকধাপ দিলেই ডান পাশে চোখে পরবে নারিশ এর প্যাভিলিয়ন।

দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা খামারিদের কাছে নারিশ এর কর্মীরা প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন পণ্য ও সেবা তুলে ধরছেন। নারিশের পণ্য দিয়ে সাজানো হয়েছে প্যাভিলিয়নটি। এছাড়া একটি মনিটরে দেখানো হচ্ছে নারিশের কার্যক্রমগুলো। বিতরণ করা হচ্ছে পণ্যের ব্রুসিয়ার।

নারিশ এর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) এস এম এ হক এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে বলেন, এই শিল্পকে দীর্ঘদিন টিকিয়ে রাখতে হলে খামারিদের সমৃদ্ধশালী করতে হবে। এ কারণে আমরা খামারিদের জীবনমান উন্নয়নে বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পাদন করছি। দিন যতই যাচ্ছে এই সেবার পরিধিও ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এ ঊর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, ডিম, মাছ, মাংস যদি আমরা নিরাপদ ভাবে ভোক্তাদের কাছে নিয়ে যেতে না পারি তাহলে কিন্তু তারা মুখ ফিরিয়ে নিবে। এছাড়া সুস্বাস্থ্যের জন্যও আমাদের নিরাপদ প্রাণিজ খাদ্য নিশ্চিত জরুরি। এসব কারণে আমরা নিরাপদ প্রাণিজ খাদ্য উৎপাদন, সরবরাহে গুরুত্ব দিয়েছি।

নারিশ এর সিনিয়র কাস্টমার সার্ভিস অফিসার ডা. জাকিরুল ইসলাম এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে জানান, খামারিদের কল্যাণে নানা ধরণের কার্যক্রম সম্পাদন করছে নারিশ। আমাদের ৪৯০টি উপজেলাতেই ডিলার রয়েছে। আঞ্চলিক পর্যায়ে এন্টিবায়োটিক মুক্ত মাংস, ডিম ও দুধ উৎপাদনে খামারিদের প্রশিক্ষণও দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

তিনি বলেন, নিরাপদ প্রাণি খাদ্য নিশ্চিত করার পাশাপাশি প্রান্তিক পর্যায়ে খামারিরা যেন সফল ভাবে খামার পরিচালনা করতে পারেন এটি নিয়েও কাজ করছে তারা। দেশের বিভিন্ন জায়গা নিজস্ব ল্যাব রয়েছে যেখানে খামরিদের অ্যান্টিবায়োটিক মুক্ত খাদ্য তৈরির প্রশিক্ষণও দেয়া হয়। দক্ষ জনবল ও কাস্টমার সার্ভিস টিম দিয়ে এসব সেবা খামারিদের হাতের নাগালে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।

কাস্টমার সার্ভিস অফিসার ডা. এস এম শাফি আল সাদিক জানালেন, ক্রেতারা নিরাপদ প্রাণিজ খাবার (মাংস ও ডিম) গ্রহণ করতে পারেন সে লক্ষ্যে নিরাপদ ব্রয়লার মাংস ও ডিম বিক্রয় কেন্দ্র স্থাপনের কাজও চলছে। ভবিষ্যতে যেন এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে না হয় সেটিও নিয়েও কাজ চলছে। এছাড়া খুব শিগগিরই ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়েও কাজ শুরু করবে নারিশ।

নারিশ এর এই দুই কর্মকর্তা জানান, নিজস্ব দক্ষ করিগর, উন্নত প্রযুক্তি, পরিবহন, পণ্য, বিদেশী কনসালটেন্সিসহ সবকিছুতেই সমৃদ্ধ নারিশ। অন্য প্রতিষ্ঠান যেখানে বিক্রয় নিয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে সেখানে নারিশ খামারিদের সচেতনতা বৃদ্ধি ও নিরাপদ খাদ্য তৈরি নিয়ে কাজ করছে। এখানেই পার্থক্য বোঝা যায় নারিশ কত উপরে রয়েছে। নারিশ এর পণ্যের মধ্য অন্যতম হলো পোল্ট্রি, ডেইরি ও ফিশ ফিড। এছাড়া বাচ্চা উৎপাদনে একাধিক হ্যাচারিও রয়েছে।

বাড়ানো প্রাণিজ আমিষ গড়বো দেশ, স্বাস্থ্য মেধা সমৃদ্ধির বাংলাদেশ স্লোগান নিয়ে প্রাণীসম্পদ সেবা সপ্তাহ গত শনিবার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং প্রাণিসম্পদ অধিদফতর আয়োজন করেছে। আগামী ২৩ জানুয়ারি শেষ হবে এ প্রদর্শনী। রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট চত্বরে অনুষ্ঠিত এ প্রদর্শনীতে প্রতিদিন সকাল নয়টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত প্রাণীসম্পদ বিষয়ে নানা সেবা ও তথ্য মিলছে ।

বাংলাদেশ সময়: ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০১৮