নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: চলতি বছরে ধান-চাল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। তবে, গত বছরের দামেই ধান-চাল কেনা হবে। এ বছর প্রতি কেজি বোরো ধান ২৭ টাকা, সিদ্ধ চাল ৪০ টাকা এবং আতপ চাল ৩৯ টাকায় কেনা হবে বলে জানা গেছে।

গতকাল খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের সভাপতিত্বে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির ভার্চুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আসন্ন বোরো মৌসুমের সংগ্রহ কার্যক্রম চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চলবে।

আসন্ন বোরো মৌসুমে ৬ লাখ ৫০ হাজার টন ধান, ১১ লাখ টন সিদ্ধ চাল, ৫০ হাজার টন আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।গতবছরের দামে ধান-চাল কেনার সিদ্ধান্ত হলেও কিন্তু এখন সেচকাজে ব্যবহূত ডিজেলের দাম বেড়েছে। ফলে কৃষকের উৎপাদন খরচ বাড়লেও ধানের দাম বাড়েনি। তাছাড়া চলতি বছর গত বছরের তুলনায় সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা কমানো হয়েছে প্রায় এক লাখ টন।

পড়তে পারেন: মিনিকেট চাল বিড়ম্বনা এড়াতে বস্তায় থাকবে ধানের নাম

জানা গেছে, গত বোরো মৌসুমে ৬ লাখ ৫০ হাজার টন ধান এবং ১২ লাখ ৩৫ হাজার টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সব মিলিয়ে ১৮ লাখ ৮৫ হাজার টন ধান ও চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। ফলে গত বছরের তুলনায় চলতি ২০২২ সালে বোরো সংগ্রহ মৌসুমে প্রায় ৮৫ হাজার টন কমানো হয়েছে। গত মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৩ লাখ ৬২ হাজার টন ধান, ১০ লাখ ৬০ হাজার টন সিদ্ধ চাল এবং প্রায় ৮৬ হাজার টন আতব চালের সংগ্রহ হয়েছিল। সব মিলিয়ে চালের আকারে প্রায় ১৩ লাখ ৮১ হাজার ৫৫২ টন সংগ্রহ করেছিল খাদ্য অধিদপ্তর।

২০২০ সালের বোরো মৌসুমে ছয় লাখ টন ধান ও ১১ লাখ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল সরকার। ২৬ টাকা কেজি দরে ধান, ৩৬ টাকা কেজি দরে সিদ্ধ চাল ও ৩৬ টাকা কেজি দরে আতপ চাল কেনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। তবে বাজারে চালের দাম বেশি থাকায় ওই মৌসুমেও লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধান-চাল কিনতে পারেনি খাদ্য অধিদপ্তর। আবার চলতি ২০২২ সালে ডিজেলের দাম বৃদ্ধির কারণে কৃষকের সেচের খরচ বেড়েছে। কিন্তু ধানের দাম একই থাকার কারণে কৃষকের ক্ষতির শঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

পড়তে পারেন: মিলারদের চালের দাম বাড়লো ৩ টাকা, কৃষকের ধানের ১ টাকা

গতকালের সভায় খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, দেশের বাজারে মোটা চালের দাম বাড়েনি। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দাম কমতির দিকে। মোটা চালের অধিকাংশ নন হিউম্যান কনজাম্পশনে চলে যাওয়ায় এবং মানুষের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের কারণে সরু চালের ওপর নির্ভরতা বেড়েছে। এ কারণে সরু চালের দাম কিছুটা বেড়েছে। এ সময় তিনি সরু ধানের উৎপাদন বাড়াতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণে কৃষিমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, কৃষি উৎপাদন বাড়াতে এরই মধ্যে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হয়েছে। নতুন উদ্ভাবিত দুটি জাত ব্রি ৮৯ ও ব্রি ৯২ বোরো ধানের উৎপাদন সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। এ প্রজাতির উৎপাদন বেশি হবে এবং চালও সরু হবে। এছাড়া খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে উচ্চফলনশীল ধানের চাষ বাড়ানো হচ্ছে।

ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেন, বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা ও মূল্য নির্ধারণ যৌক্তিক হয়েছে। এতে কৃষকের ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হবে। গতকালের সভায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, খাদ্য সচিব এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সংস্কার ও সমন্বয়) মতামত তুলে ধরেন।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ