এগ্রিকেয়ার২৪.কম ডেস্ক:  আরও ৫০ হাজার টন গম আমদানি করবে সরকার। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে এ খাদ্যপণ্যটি আমদানির জন্য দরপত্র আহ্বান করেছে খাদ্য অধিদপ্তর।

গত মৌসুমে বন্যা হওয়ায় উৎপাদন ব্যহত হওয়ার কারণে এ খাদ্যপণ্যটি আরও ৫০ হাজার টন গম আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

দেশে গত কয়েক বছর ধরে গম উৎপাদনে মন্দাভাব রয়েছে। এছাড়া গত মৌসুমে বন্যার কারণে উৎপাদনও ব্যহত হয়। ফলে চাহিদা পূরণে গম আমদানিতে ঝুঁকছে সরকার। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, আগামী দুই মাসের মধ্যে আমদানি করা এ গম দেশের বাজারে প্রবেশ করবে।

সরকারি পর্যায়ে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ৫০ হাজার টন গম আমদানির জন্য আগামী ৩ জুলাইয়ের মধ্যে দরপত্র জমা দিতে হবে আমদানিকারকদের। দরপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর চূড়ান্ত চুক্তি সইয়ের দিন থেকে পরবর্তী ৪০ দিনের মধ্যে আমদানি করা এসব গম বাজারে ছাড়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

প্রতি বছর ভারতের বাজার থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ গম আমদানি করা হয়। এরপাশাপাশি রাশিয়া, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া থেকেও গম আমদানি করে বাংলাদেশ। এদিকে সর্বশেষ মৌসুমে বৈরী আবহাওয়ার জের ধরে ভারতেও গম উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে।  

ফলে এ মুহূর্তে ভারতের বাজার থেকে গম আমদানির সম্ভাবনা কম। তবে তুলনামূলক কম দামে রাশিয়া কিংবা কৃষ্ণ সাগরীয় অঞ্চলের কোনো দেশ থেকে খাদ্যপণ্যটি আমদানি করার সম্ভাবনা বেশি।

সূত্র জানায়, গম উৎপাদনকারী দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশ বিশ্বে ৩২তম স্থানে রয়েছে। তিন বছরের গম উৎপাদনের তথ্য প্রকাশ করেছে মার্কিন কৃষি বিভাগ (ইউএসডিএ)। তাদের দেয়া তথ্যে দেখা যায়, বাংলাদেশে ২০১৪ সালে ১৩ লাখ টন, পরের বছর দশমিক ৭৭ শতাংশ কমে ১২ লাখ ৯০ হাজার টন, ২০১৬ সালে ১২ লাখ ৫০ হাজার টন গম উৎপাদন হয়েছিল।

আর ২০১৭ সালে বন্যার কারণে খাদ্যপণ্যটির উৎপাদন আরো কমে দাঁড়ায় ১১ লাখ ১৫ হাজার টনে। চলতি বছর দেশে ১২ লাখ টন কম গম উৎপাদন হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ইউএসডিএ।

বিশ্বের গম আমদানিতে পঞ্চম শীর্ষ আমদানিকারক দেশ এর তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। ইউএসডিএর তথ্য বলছে, ২০১১ সালে সর্বশেষ গম আমদানি খাতে মন্দাভাব দেখা দেয়। ওই সময় দেশে ২০ লাখ ৩৯ হাজার টন গম আমদানি হয়েছিল। টানা পাঁচ বছরের প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে দেশে ৫৫ লাখ ৫৬ হাজার টন গম আমদানি হয়।

পরের বছর খাদ্যপণ্যটির আমদানি দাঁড়ায় ৬৪ লাখ টনে। এ হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে দেশে গম আমদানি বেড়েছে ৮ লাখ ৪৪ হাজার টন। এটাই বাংলাদেশে গম আমদানির সর্বোচ্চ পরিমাণ। সূত্র: বণিক বার্তা।

চলতি বছর শেষে বাংলাদেশে গম আমদানি আগের বছরের তুলনায় ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেড়ে ৭০ হাজার টনে পৌঁছতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ইউএসডিএ। সেই হিসাবে, এক বছরের ব্যবধানে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে দেশে খাদ্যপণ্যটির আমদানি বাড়তে পারে ছয় লাখ টন। বাংলাদেশে গম আমদানির ইতিহাসে এটাই হতে যাচ্ছে সর্বোচ্চ রেকর্ড।