ফসল ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম:  ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে  চলতি বছর ১০ কোটি টাকার মাল্টা বিক্রি হবে বলে আশা করছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা। বিদেশী এ ফলের চাস অনুকূল আবহাওয়া ও উপযোগী পরিবেশ থাকায় প্রতি বছরই বাড়ছে মাল্টার চাষ। বাড়ছে বাগান, লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।

বিজয়নগর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর বিজয়নগরে ৬৫ হেক্টর জমিতে সবুজ মাল্টার চাষ করা হয়েছে। ২০১৫ সাল থেকে উপজেলায় মাল্টার আবাদ শুরু হয়। ফলন ভালো হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে চাষ। এই এলাকায় বারি মাল্টা-১ জাতের চাষই বেশি হয়।

বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা সহকারি কৃষি অফিসার আশরাফুল আলম বলেন, আমরা উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে চাষিদের সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করছি। অল্প খরচে লাভবান হওয়ায় প্রতি বছরই মাল্টা চাষে মানুষ আগ্রহী হয়ে উঠছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে মাল্টার চাষ শুরু হয় ২০১৫ সালে। বর্তমানে উপজেলার পাহাড়পুর, চম্পকনগর, বিষ্ণুপুর ও সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের গ্রামে বাড়ির আঙিনা ও সমতল ভূমিতে মাল্টার বাগান করা হয়েছে। এই উপজেলায় চলতি বছর ৬৫ হেক্টর জমিতে সবুজ মাল্টার চাষ করা হয়েছে। উপজেলায় রয়েছে ছোট বড় মিলিয়ে ৭৫৪টি মাল্টার বাগান। গাছে গাছে সবুজ পাতার আড়ালে ডালে ডালে ঝুলছে সবুজ মাল্টা। পথচারীদের নজর কাড়ছে। ফলনে চাষিরাও খুশি।

উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের খাটিংগা গ্রামের চাষি আলমগীর মিয়া জানান, তিনি ৯০ শতাংশ জায়গায় মাল্টার বাগান করেছেন। ৫ বছর আগে ২৩৪টি মাল্টার চারা দিয়ে বাগান শুরু করেন। বর্তমানে তার বাগানে রয়েছে ৬০০টি গাছ।

তিনি বলেন, সব গাছে পরিপূর্ণভাবে ফলন ধরেছে। প্রতিটি গাছে থোকায় থোকায় মাল্টা ধরেছে। গাছগুলো মাটিতে নুইয়ে পড়েছে। নিয়মিত পরিচর্যা করছি। আজ পর্যন্ত ৬ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি করেছি। আশা করছি ৯ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবো।

উপজেলার সিঙ্গারবিল গ্রামের মাল্টা চাষি সোহাগ ভূঁইয়া বলেন, আমার বাগানে ১৫০টি মাল্টা গাছ আছে। বাগানের পরিচর্যা করতে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আশা করি আড়াই লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি করতে পারবো।

বিষ্ণুপুর গ্রামের চাষি আনোয়ার হোসেন বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার আমার বাগানে ফলন ভালো হয়েছে। ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন স্থানে থেকে পাইকাররা আসতে শুরু করেছেন। এছাড়াও অনেকে শখের বসে পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসে মাল্টা কিনছেন।

বিজয়নগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাব্বির আহম্মেদ বলেন, চলতি বছর উপজেলায় ৬৫ হেক্টর জমিতে সবুজ মাল্টার চাষ করা হয়েছে। এসব বাগানে ১০ কোটি টাকা বিক্রি হবে বলে আশা করছি। আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত মনিটরিং করছি। মাল্টা চাষ জনপ্রিয় করে তুলতে বিভিন্ন সময় প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করি।

 

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ