শেখ সিফাতুল আলম মেহেদী, এ্রগ্রিকেয়ার২৪.কম: গবাদিপশুকে গোবসন্ত, তরকা, বাদলা, গলাফুলা, ক্ষুরা রোগের প্রতিষেধক টিকা দিতে হয় কিন্তু আরো একটি মারাত্মক রোগ রয়েছে যা ওলানে হয়ে থাকে। গাভীর বড় ওলানের পরিচর্যা কিভাবে করবেন তা জানা জরুরি।

অধিক দুধ উৎপাদনকারী গাভীর দৈহিক আকার যেমন বড় হয় তেমনি বড় হয় তার ওলানও। এসব গাভী যত্নসহকারে পরিচর্যা করতে হয়। উঠা-বসার সময় শেডের কনক্রিটের মেঝেতে ঘষা লেগে ওলানে ক্ষত সৃষ্টি হয়। আর তাতে গোবর বা চোনা লেগে রোগ-জীবাণুর আক্রমণে গাভী অসুস্থ হয়।

ওলানে সমস্যা দেখা দিলে দুধ উৎপাদন কমে যায়। ম্যাসটাইটিস রোগ মারাত্মক আকার ধারণ করলে কখনও কখনও ওলানের এক বা একাধিক বাঁট কেটে ফেলতে হয়। তখন দুধ উৎপাদন অর্ধেকের নিচে নেমে আসে।

এগ্রিকেয়ার২৪.কমের অন্যান্য নিউজ পড়তে পারেন:

গরুর বাদলা রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

গরুর তড়কা রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি

গরুর প্রাণঘাতী কয়েকটি রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা

ওলানে আঘাতজনিত সমস্যা এড়াতে কনক্রিটের পরিবর্তে বালির মেঝে অধিক স্বাস্থ্যসম্মত বলে অভিমত দিয়েছে ডেইরি বিজ্ঞানীরা। এ বালির মেঝে তৈরি করতে হবে বিশেষ প্রক্রিয়ায়। প্রায় দেড় মিটার সমপরিমাণ গভীর করে মাটি শেডের মেঝে থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে। এরপর কমপক্ষে দুইস্তরে বড় বড় টায়ার বসাতে হবে। টায়ারের ওপর বিছিয়ে দিতে হবে পরিষ্কার বালু। বালু অবশ্যই কাঁকর, ইটের টুকরা, লোহার টুকরা বা অন্যান্য যে কোনো ধারালো বস্তুমুুক্ত হতে হবে। রোগের সংক্রমণমুক্ত এলাকা থেকে এ বালু সংগ্রহ করতে হবে।

বালির মেঝে নরম হওয়ায় গাভী উঠে দাঁড়ানো কিংবা বসার সময় কোনো ধরনের আঘাত পাবে না। ওলানের আঘাতজনিত সমস্যা থেকে রক্ষা পাবে। এ মেঝের সুবিধাজনক দিক হচ্ছে গাভীর চোনা সহজেই ঝুরঝুরে বালিতে পড়ে শুকিয়ে যাওয়া। তবে বালি যেন ভেজা না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

এজন্য দিনে কমপক্ষে দুইবার গোবর পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। সব বালি সপ্তাহে কমপক্ষে তিনদিন উলটপালট করে দিতে হবে। ওপরের বালি নিচে এবং নিচের বালি ওপরে উঠে এলে রোগ-জীবাণু বংশবৃদ্ধি করতে পারবে না, রোগ বাসা বাঁধার সুযোগ পাবে না। ছয় মাস পরপর শেডের পুরনো বালি ফেলে দিয়ে নতুন বালি দিতে হবে। এভাবে করলে আমরা কম খরচে লাভজনকভাবে গাভি পালন করা যায়।

গাভীর বড় ওলানের পরিচর্যা করবেন যেভাবে লেখাটি লিখেছেন শেখ সিফাতুল আলম মেহেদী। লেখাটি ‍কৃষি বাতায়ন থেকে নেওয়া হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ