নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: গ্রাফটিং এর মাধ্যমে কীভাবে অল্পদিনে কাঁঠাল পাওয়া যায়, এ বিষয়ে সম্প্রসারণ কাজ এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী।

আজ শুক্রবার (২২ জুন) রাজধানীর ফার্মগেট সংলগ্ন আ. কা. মু. গিয়াস উদ্দীন মিলকী অডিটরিয়াম চত্বরে শুরু হওয়া ফলদ বৃক্ষ রোপণ পক্ষ ও জাতীয় ফল প্রদর্শনী ২০১৮ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

তিনদিনব্যাপী এ মেলার সেমিনারে কাঁঠাল সম্পর্কে কৃষিমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কাঁঠালকে আমাদের জাতীয় ফল হিসেবে ঘোষণা করেছেন। কাঁঠালের পুষ্টিগুন অপরিসীম। গ্রামে যখন এক সময় খাবারের অভাব ছিলো, তখন মেহনতি মানুষের পুষ্টির যোগান দিতো কাঁঠাল। কাঁঠালের সব কিছুই ব্যবহার করা যায়।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমাদের নিজস্ব ফলের জাতের উৎকর্ষতা ঘটাতে হবে, পাশাপাশি বিদেশী ফলের অভিযোজন ঘটাতে পারলে আমরা সারা বছর ফল পাবো।

প্রচলিত, অপ্রচলিত দেশ-বিদেশের নানা জাতের ফলের এ প্রদর্শনীতে আসা দর্শনার্থীরা ফল চাষের বিভিন্ন প্রযুক্তি সম্পর্কে জানার পাশাপাশি রাসায়নিকমুক্ত ফল কিনতে পারবেন।

আয়োজকেরা জানান, মেলায় আমের ১০২টি জাতসহ ৯৯ প্রজাতির ফল প্রদর্শন করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রচলিত ফল ৫৪, অপ্রচলিত ৩৬ ও বিদেশি ফলের জাত ৯টি রয়েছে। এবারের ফল মেলায় ৯টি সরকারি ও ৫১টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মোট ৮১টি স্টল রয়েছে। এছাড়াও মেলায় রয়েছে জাতীয় ফল কাঁঠালের একটি বিশেষ কর্নার।

মেলা প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত এ জাতীয় ফল মেলা চলবে ২৪ জুন পর্যন্ত। এবারের প্রতিপাদ্য‘অপ্রতিরোধ্য দেশের অগ্রযাত্রা, ফলের পুষ্টি দেবে নতুন মাত্রা’।

প্রদর্শনী উপলক্ষ্যে সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা থেকে আ. কা. মু. গিয়াস উদ্দীন মিলকী অডিটরিয়াম চত্বর পর্যন্ত এক বর্ণাঢ্য র‌্যালি করা হয়। এরপর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ অডিটরিয়ামে ‘মানব সম্পদ উন্নয়নে পুষ্টি সমৃদ্ধ ফলের অবদান’শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক বলেন, দেশে কৃষি জমির পরিমান দিন দিন কমে যাচ্ছে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য উৎপাদন ধরে রাখতে আমাদের সকলকে সচেতন হয়ে কাজ করতে হবে। ফলের বাণিজ্যিক উৎপাদন বাড়লেও সংগ্রহোত্তর অপচয় ও প্রক্রিয়াজাতকরণের অভাবে অনেক ফল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

তিনি জানান, এজন্য উন্নত ব্যবস্থাপনা ও ছোট-মাঝারি শিল্প স্থাপন করতে হবে। তাহলে সারা বছর ফল পাওয়া যাবে। ফলে বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ রাসায়নিক প্রয়োগের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, এক্ষেত্রে বিজ্ঞানভিত্তিক কৌশল অবলম্বন ও কার্যকরী রাসায়নিক প্রয়োগ করতে হবে।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ্ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ। মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশ নেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক এম এনামুল হক। সেমিনারে  স্বাগত বক্তব্য দেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ মহসীন।

সেমিনারে কৃষি তথ্য সার্ভিস কর্তৃক নির্মিত প্রতিপাদ্যভিত্তিক প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।  এছাড়া জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এসবের মধ্যে রয়েছে বিনামূল্যে ফলের চারা/কলম বিতরণ, সেমিনার, কর্মশালা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রভৃতি।