শীতকালীন সবজি দেশী শিম

প্রতিনিধি, যশোর, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: যশোর জেলার বৃহৎ উপজেলা মণিরামপুর। উপজেলার রাজগঞ্জে অর্ধশত চাষি অসময়ের গ্রীষ্মকালীন শিম চাষ করেছেন। মাঠে-মাঠে শীতকালীন আগাম জাতের হাইব্রিড শিমগাছের ক্ষেত নয়ন জুড়িয়ে দিচ্ছে। চাষে ভালো ফলন পাচ্ছেন কৃষক।

চাষিরা জানান, শিম চাষের পূর্বে অল্প খরচে বানের উপর ঝিঙে ও পটলের চাষ করেছিলেন চাষিরা। অল্প সময়ে ঝিঙে চাষ শেষ হতেই ওই বানেই শিম চাষের উদ্যোগ নেন চাষিরা। জমি তৈরি ছাড়াই জৈষ্ঠ্য মাসের শেষের দিকে ওই বানের নিচ দিয়ে শিম বীজ রোপণ করেন চাষিরা। এ জাতের শিমের বীজ রোপণের ৪৫ থেকে ৫০ দিনের মধ্যে ফুল-ফল চলে আসে। রাজগঞ্জের এলাকায় পিচের রাস্তা ধরে ত্রিমোহিনী যাওয়ার পথে চোখে পড়ছে ফুলে-ফলে শিমের সবুজ সমারোহ।

হাকিমপুর ও হরিশপুর মাঠে শত-শত বিঘা জমির বানের উপর দোল খাচ্ছে শিমেরা সাদা ও হাল্কা গোলাপী ফুল। সরেজমিনে মাঠে দেখা যায় ক্ষেতে কেউ ব্যস্ত কীটনাশক প্রয়োগে। আবার কেউ শিম তোলাতে। পাশের একটা ক্ষেতে চোখ পড়তেই দেখা মেলে এক নারীর। তিনি কাঁচি দিয়ে শিমের ডগা কাটছেন। তিনি জানান শিমগাছের ওই ডগায় কোন ফুল-ফল হয় না। যার কারনে ওই সকল শিমের ডগা কেটে গরু-ছাগলের খাদ্যের ব্যবস্থা করছি।

হাকিমপুর গ্রামের আব্দুল হান্নান ২৪ শতক, আবুল হাসেম মোড়ল ৪৮ শতক, মুক্তার মোড়ল ৪৮, আজগার আলী ৭৪ শতক, তৌহিদ ৭২ শতক, নাজমুল ২৪ শতক জমিতে শিম চাষ করেছেন।

হান্নান বলেন, অসময়ে শিমের চাষ করছি, তাই পোকার উপদ্রব কিছুটা বেশি। দুই একদিন পর পর কীটনাশক স্প্রে করতে হচ্ছে। আজগার আলী বলেন, ৭৪ শতক জমিতে শিম চাষে খরচ প্রায় ১ লাখ টাকা। ফুল-ফল দেখে আশা করছি প্রায় ৪ লাখ টাকার শিম বিক্রি করতে পারবো। ইতিমধ্যে প্রায় ২০ দিন আগে থেকে শিম বিক্রি করছি। অসময়ের শিম তাই প্রতি কেজি ১২০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে পেরেছি।

হরিশপুর গ্রামের আবুল হাসেম জানান, আমি শিম চাষের পূর্বে এই ৪৮ শতক জমিতে ঝিঙের চাষ করেছিলাম। সেখানে বান বানানোসহ চাষে ১৫ হাজার টাকার মত খরচ হয়েছিল। ঝিঙে বিক্রি করেছিলাম প্রায় ৩০ হাজার টাকা। পরে ওই ৪৮ শতক জমির বানের উপরে হাইব্রিড শিমচাষ করেছি। গাছের চেহারা ভাল। ফল-ফুল প্রচুর ধরেছে। কিন্তু গাছের ফুল ঝরা বন্ধ করতে পারছিনা।

হরিশপুর গ্রামের অভিজ্ঞ চাষি মুক্তার বলেন, আমার মত এই মাঠে দুইতিন গ্রামের প্রায় অর্ধশত চাষি প্রায় শতবিঘা জমিতে আগাম জাতের শিম চাষ করেছেন।

এ বিষয়ে চালুয়া হাটিই ইউনিয়ান কৃষি-উপসহকারী কর্মকর্তা মারুফুল হক ও হাবিবুর রহমান জানান, অসময়ে শিমচাষ হলেও গাছ ও ফুল-ফল সব দিকে ভালো। আমি সব সময় শীম ক্ষেত দেখাশুনা করি। চাষিদের সঙ্গে কথা বলি এবং পরামর্শ দিয়েছি। আশা করছি শিম চাষে চাষিরা লাভবান হবেন।