গয়াল ও তিতির পালন, গরু

নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: চলতি অর্থ বছরে কৃষি ও পল্লি ঋণে নতুন কিছু বিষয় সংযোজন করা হয়েছে। এরমধ্যে গয়াল ও তিতির পালন, গরু মোটতাজাকরণে ও বায়োফ্লক মাছ চাষে মিলবে কৃষি ঋণ।

এছাড়া ঋণ নিয়মাচারে একর প্রতি ফসলের ঋণ সীমা বৃদ্ধিসহ নতুন বছরের কৃষি ও পল্লি ঋণ দেয়ার কথা বলা হয়েছে।

আজ বুধবার (২২ জুলাই, ২০২০) বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ২০২০-২০২১ অর্থবছরের কৃষি ও পল্লি ঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচি ঘোষণায় এসব তথ্য পাওয়া গেছে। চলতি বছরে কৃষি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ২৬,২৯২ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এই নীতিমালার উল্লেখযোগ্য নতুন সংযোজিত বিষয়সমূহ হচ্ছে: গয়াল ও তিতির পাখি পালনের জন্য ঋণ প্রদান এবং এ সংক্রান্ত ঋণ নিয়মাচার সংযোজন। বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষে ঋণ প্রদান।

কন্ট্রাক্ট ফার্মিং এর আওতায় গরু মোটাতাজাকরণে ঋণ প্রদান। ঋণ নিয়মাচারে একর প্রতি ফসলের ঋণ সীমা বৃদ্ধি করা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, করোনা মহামারীর আর্থিক সংকট মোকাবিলায় এবং সরকারের কৃষি ও কৃষকবান্ধব নীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে টেকসই উন্নয়নের নির্ধারিত লক্ষ্যে প্রথম ও প্রধান তিনটি  লক্ষ্য তথা দারিদ্র্য বিমোচন, খুধা মুক্তি এবং গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নের উদ্দেশ্যে পল্লি অঞ্চলে ব্যাপক হারে কৃষি ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধির মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ২২ জুলাই, ২০২০ তারিখে কৃষি ঋণ বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ২০২০-২০২১ অর্থবছরের কৃষি ও পল্লি ঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচি প্রণয়ন করা হয়েছে।

২০২০-২০২১ অর্থবছরের কৃষি ও পল্লি ঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচির উল্লেখযোগ্য বিষয়াদি নিচে তুলে ধরা হলো।

মোট ২৬,২৯২.০০ (ছাব্বিশ হাজার দুইশত বিরানব্বই) কোটি টাকা ঋণ বিতরণের লক্ষমাত্রা নিয়ে চলতি (২০২০-২০২১) অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংকের বার্ষিক কৃষি ও পল্লি ঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

চলতি অর্থবছরের কৃষি ও পল্লি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা বিগত ২০১৯-২০ অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৮.৯৯% শতাংশ বেশি। কৃষি ও পল্লি ঋণের ক্রমবর্ধমান চাহিদা বিবেচনায় চলতি অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকসমূহের জন্য ১১,০৪৫.০০ কোটি টাকা এবং বেসরকারি ও বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহের জন্য ১৫২৪৭.০০ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিগত ২০১৯-২০ অর্থবছরে ব্যাংকসমূহ মোট ২২,৭৪৯.০৩ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লি ঋণ বিতরণ করেছে, যা মোট লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৯৪.৩০%। বিগত অর্থবছরে মোট ৩০,৬৬,৭৮৬ জন কৃষি ও পল্লি ঋণ পেয়েছেন, যার মধ্যে ব্যাংকসমূহের নিজস্ব নেটওয়ার্ক ও এমএফআই লিংকেজের মাধ্যমে ১৫,১৪,৩৬৭ জন নারী প্রায় ৮,৩৫৯.৯৩ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লি ঋণ পেয়েছেন।

উক্ত অর্থবছরে ২৩,৫৪,৮৮৮ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ১৬ হাজার ২৫০ কোটি টাকা এবং চর, হাওর প্রভৃতি অনগ্রসর এলাকার ৭১৭৯ জন কৃষক প্রায় ২১.২১ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লি ঋণ পেয়েছেন।

পরিবেশবান্ধব ও টেকসই কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তুলে জনসাধারণের খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি নিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রে উদ্ভূত সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং কৃষকদের নিকট কৃষি ঋণ সহজলভ্য করার লক্ষে বর্তমান নীতিমালা ও কর্মসূচিতে বেশ কিছু সময়োপযোগী বিষয় সংযোজিত হয়েছে।

উল্লেখ্য নভেল করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় কৃষিখাতে চলতি মূলধন সরবরাহের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ৫,০০০.০০ (পাঁচ হাজার) কোটি টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন স্কীম পরিচালিত হচ্ছে।

এছাড়াও সুদ-ক্ষতি সুবিধার আওতায় তৈল ও মসলা জাতীয় ফসল ও ভুট্টা ছাড়াও শস্য ও ফসল খাতে স্বল্প সুদে (৪% হারে) কৃষকদের অনকূলে ঋণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে, যা চলতি অর্থবছর (২০২০-২১) জুড়ে বিদ্যমান থাকবে।

তফসিলি ব্যাংকসমূহ কর্তৃক ৩০.০৬.২০২০ পর্যন্ত উক্ত পুনঃঅর্থায়ন স্কীমের আওতায় ১৭১.৯৯ কোটি টাকা এবং সুদ-ক্ষতি সুবিধার আওতায় শস্য ও ফসল খাতে ২৮৬.২৭ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, ২০২০-২০২১ অর্থবছরের কৃষি ও পল্লি ঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচি ২২/০৭/২০২০ তারিখ হতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।

গয়াল ও তিতির পালন, গরু মোটতাজাকরণে ও বায়োফ্লক মাছ চাষে মিলবে কৃষি ঋণ শিরোনামের সংবাদটির তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব কমিউনিকেশন্স এন্ড পাবলিকেশন্স মহাব্যবস্থাপক (চলতি দায়িত্ব) সাঈদা খানম স্বাক্ষরতি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।