ফসল ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের দুলালপুর গ্রামের প্রবাস ফেরত যুবক আলমগীর হোসেন। বিদেশ থেকে আসার পর তার দুই বিঘা জমিততে ১৮৫টি চায়না থ্রি কমলা গাছ রোপণ করে বাগান গড়ে তুলেন। কমলা সমতল মাটিতে চাষ করার পরও সাফল্য ধরা দিয়েছে আলমগীরের। তার দেখাদেখি জেলার অনেকে কমলা চাষের দিকে ঝুঁকছেন।

জানা যায়, ইউটিউব দেখে বাগানের পরিচর্যা করে ভালো ফলন পেয়েছেন তিনি। বাগানের গাছে-গাছে সবুজ পাতার আড়ালে ঝুলছে পাকা রসালো কমলা।

প্রতিদিন দর্শনার্থীরা আসছেন কৃষক আলমগীর হোসেনের কমলা বাগান দেখতে। পাশাপাশি গাছ থেকে পাকা ও তাজা কমলা ও ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। ক্রেতা আহসান হাবিব জানান সারাজীবন আমরা বাজার থেকে কমলা ক্রয় করেছি। তবে আজ কমলা বাগান থেকে দেখে দেখে পাকা কমলা ক্রয় করলাম।

কৃষক আলমগীর হোসেন জানান, ইউটিউবে চুয়াডাঙ্গার এক কৃষকের কমলা আবাদের ভিডিও দেখে তার সাথে যোগাযোগ করেন। পরে ওই বাগান পরিদর্শন করে ওই কৃষকের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে সেখান থেকে চায়না-থ্রী জাতের কমলার চারা এনে বাগানে রোপণ করেন। মাত্র দুই বছরের মাথায় তার বাগানে চোখ ধাঁধানো কমলার ফলন পেয়ে অনকে খুশি কৃষক আলমগীর।

এগ্রিকেয়ার২৪.কমের আরোও নিউজ পড়তে পারেন:

দার্জিলিং কমলা চাষে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত মাজাহারুল

জনপ্রিয় হচ্ছে বারি-২ কমলা

পাতায় পাতায় ধরেছে কমলা, হেলে পড়েছে ডাল

বাংলাদেশে কমলা রপ্তানি কমায় বিপাকে পড়েছে ভারত

কৃষক আলমগীর হোসেন আরও বলেন, এখন পর্যন্ত ১ হাজার থেকে ৫শ কেজি কমলা বিক্রি করেছি। প্রতি কেজি কমলা ১৭০ টাকা কেজি মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। বাগান থেকে ক্রেতারা ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত বাজারে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করতে হয়নি। দর্শনার্থীরা এসে দেখে বাগান থেকেই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। বাগান করার সময় গ্রামের অনেকেই বলেছিলেন এ এলাকায় কমলার চাষ হবে না। আমি মানুষের কথায় কান না দিয়ে নিজের মত করে চেষ্টা করেছি। আমার বাগান থেকে অন্তত ৫ লাখ টাকার কমলা বিক্রি হবে বলে আশা করছি।

এদিকে কৃষক আলমগীর হোসেনের কমলা চাষ দেখে এবার অন্য কৃষকরাও কমলা চাষ করার আগ্রহ দেখিয়েছে। এলাকার অনাবাদি জমিতে এবার কমলা চাষ করতে আগ্রহী। স্থানীয় কৃষক মোস্তফা মিয়া জানান আমরা এখন বুঝতে পেরেছি, কমলা লাভজনক ও ফলনে ভালো হয়। আগামী মৌসুমে কমলা চাষ করার কথা জানান এ কৃষক।

বিজয়নগর উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, একাধিকবার পরীক্ষামূলক ভাবে এ অঞ্চলে কমলার চাষ করেও সুফল পায়নি। তবে যেহেতু আলমগীর হোসেন সফল হয়েছেন, তাই কৃষি বিভাগের মাধ্যমে এ অঞ্চলে কমলার আবাদ বৃদ্ধির জন্য প্রর্দশনী দেয়া হবে।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুশান্ত সাহা জানান, স্থানীয় ভাবে উৎপাদিত কমলা গুলো সাধারণত টক হয়। যেহেতু বিজয়নগরে আলমগীর হোসেনের উৎপাদিত কমলাগুলো মিষ্টি। আমরা তার বাগান থেকে কমলার চারা উৎপাদন করব। পাশাপাশি কমলা চাষ করে আবাদ বৃদ্ধির জন্য প্রয়োনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ