সজিব ইসলাম, চারঘাট (রাজশাহী) প্রতিনিধি: রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার সরদহ ইউনিয়নের বালিয়াডাঙা গ্রামের কৃষক লালন মিয়া কৃষি অফিস থেকে প্রণোদনা নিয়ে চাষ করছেন সূর্যমুখী ফুল। প্রথমবারের মত সূর্যমুখী ফুল চাষ করে লাভের স্বপ্ন দেখছেন তিনি। তার দেখাদেখি ওই গ্রামের অন্য চাষীরাও সূর্যমুখী চাষে ঝুঁকছেন।

লালন মিয়া জানান, আমি কৃষি অফিসের পরামর্শে এবং প্রণোদনা নিয়ে সূর্যমুখীর বীজ ও সার পেয়ে সূর্যমুখী চাষ করেছি। বর্তমানে সুসূর্যমুখী ক্ষেতে অনেক ভাল ফুল এসেছে। এমন পরিবেশে সূর্যমুখী ফুল অনেকের দৃষ্টি কেড়েছে। অনেকেই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। আবার অনেকেই ক্ষেতে ছবি তুলে ফেসবুকে ছবি তুলে পোষ্ট করছেন।

তার সূর্যমুখী ফুলের ক্ষেতে কৃষি অফিস থেকে উপ-সহকারী কর্মকর্তারা এসে মাঝে মাঝে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকেন বলেও জানান তিনি।

লালন মিয়ার মত চারঘাট উপজেলাতে প্রায় ৫০ জন কৃষক প্রথমবারের মত বানিজ্যিকভাবে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করছেন। সরেজমিনে কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, বাতাসে দোল খাচ্ছে সূর্যমুখী ফুল ও শোভা পাচ্ছে ফসলের মাঠ।

সূর্যমুখী চাষ করে শুরুতেই সফলতার মুখ দেখছেন কৃষকরা। যদি কোন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয় তাহলে সূর্যমুখী চাষ করে দ্বিগুণ তিনগুণ লাভ করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। যার ফলে এই ফুল চাষ কওে একদিকে উপকৃত হবে কৃষকরা অপর দিকে মিটবে সূর্যমুখী তেলের চাহিদা।

চারঘাট উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সূর্যমুখী তেলের চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণে বাণিজ্যিকভাবে সূর্যমুখী চাষ শুরু হয়েছে। সে লক্ষ্যে প্রনোদনার আওতায় সম্পূর্ণ বিনামূল্যে কৃষককে সার ও বীজ বিতরণের মাধ্যমে এবার এই উপজেলায় প্রাথমিকভাবে প্রায় ৪০ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়েছে।

উপজেলার পৌর এলাকার থানাপাড়া গ্রামের কৃষক আকমল আলী জানান, আমি উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছি। সূর্যমুখীর বীজ সার সব কিছু সরকারীভাবেই পেয়েছি। বর্তমানে আমার সূর্যমুখী ক্ষেত ফুলে ফুলে ভরে গেছে। যদি কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয় তাহলে সূর্যমুখী চাষ করে আমার ভাগ্যের চাকা ঘুরে যাবে বলে আশা করছি।

চারঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার জানান, সূর্যমুখীর তেল গুণে ও মানে অতুলনীয়। সারাবিশ্বে এর ব্যাপক চাহিদা থেকে বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে সূর্যমুখীর চাষ হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় চারঘাট উপজেলাতেও বানিজ্যিকভাবে প্রথমবারের মত সূর্যমুখী ফুল চাষ শুরু হয়েছে।

এই কর্মকর্তা আরোও বলেন, বর্তমানে সূর্যমুখী ক্ষেতের যে অবস্থা তাতে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছে কৃষক ও কৃষি বিভাগ। তিনি আরও বলেন, সূর্যমুখী গাছ লম্বায় ৩ মিটার হয়ে থাকে, ফুলের ব্যাস ৩০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়। এই ফুল দেখতে সূর্যের মত হওয়ায় এর নাম সূর্যমুখী ফুল।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ