নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: দেশে চার মাসে বজ্রপাতে মৃত্যু ৭৯ জনের এরমধ্যে ৬৮ জনই পুরুষ ছিলেন। আর বজ্রাঘাতে আহত হয়েছেন ২১ জন, এর মধ্যে ১৫ জন পুরুষ এবং ৬ জন নারী। নারী ও পুরুষের মধ্যে ২ জন কিশোর রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৭ মে, ২০২০) সেভ দ্য সোসাইটি এণ্ড থাণ্ডারস্টর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরাম এর পক্ষ থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। দেশের কয়েকটি জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক, নিউজ পোর্টাল এবং টেলিভশনের স্ক্রল থেকে এ তথ্য সংগ্রহ করেছে সংগঠনটি।

আরও পড়ুন: বজ্রপাতের কারণ ও বাঁচার উপায়

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত বজ্রপাতে সারাদেশে ৭৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এর মধ্যে ১০ জন নারী, ৩ জন শিশু এবং ৬৮ জনই পুরুষ। নারী ও পুরুষের মধ্যে ৩ জন শিশু এবং ৯ জন কিশোর নিহত হয়েছে।

সাধারণত জানুয়ারি মাসে প্রচন্ড শীত থাকায় এ মাসে বজ্রপাত হয় না। তবে এবার কন কনে শীতের মধ্যেও জানুয়ারি মাসে বজ্রপাতে নিহত হয়েছে ৩ জন। তারা ৩ জনই পুরুষ। ফেব্রুয়ারি মাসে কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও মার্চ মাসে ৬ জন এবং এপ্রিল মাসে ৭০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।

অন্যদিকে মার্চ মাসে ২ জন নারী এবং ৪ জন পুরুষের মৃত্যু হয়েছে। একই সঙ্গে মার্চ মাসে আহত হয়েছেন ৬ জন। এর মধ্যে ২জন পুরুষ এবং ৪ জন নারী।

এপ্রিল মাসে মোট নিহত হয়েছেন ৭০ জন। এর মধ্যে নারী ৮ জন এবং ৬২ জনই পুরুষ। নারী ও পুরুষের মধ্যে শিশু ৩ জন, কিশোর ৭ জন এবং কিশোরী ২ জন। এছাড়া এপ্রিল মাসে বজ্রাঘাতে মোট ১৫ জন আহত হয়েছেন। তার মধ্যে ১৩ জন পুরুষ এবং ২ জন নারী।

সবচেয়ে বেশি ৪০ জন নিহত হয়েছেন কৃষি কাজ করার সময়। নৌকায় বসে মাছ ধরার সময় ২ জন। মাঠ থেকে গরু আনার সময় নিহত হয়েছে ১২ জন। আম কুড়ানোর সময় ১ জন। ঘরে অবস্থানকালীন ৪ জন। পাথর উত্তোলনের সময় ২ জন। মাঠে খেলা করার সময় ১ জন।

বাড়ির আঙিনায় খেলা করার সময় ২ জন। ফাকা রাস্তায় চলার সময় ৪ জন। রিকশা চালানোর সময় ১ জন। গাড়িতে থাকাকালীন ২ জন। অন্যদিকে চিকিৎসা নিয়ে ফেরার সময়, নির্মাণ কাজ করার সময় ও হাওরে অবস্থানকালেসহ বিভিন্ন সময় বজ্রপাতে নিহত হয়েছে ৬ জন।

আরোও পড়ুন: নওগাঁয় কোটি টাকা মূল্যের বণ্য (গিরগিটি) তক্ষক উদ্ধার

বজ্রপাতে হতাহতের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় চলতি বছরের প্রথম চার মাসে শরীয়তপুরে- ৩ জন, কিশোরগঞ্জে- ২ জন, মুন্সিগঞ্জে-২ জন, রাজবাড়ী-১ জন, মাদারীপুর-৩ জন, ফরিদপুর-৩ জন, কুমিল্লা-১ জন, কক্সবাজার-৫ জন, খাগড়াছড়ি -১ জন, নোয়াখালী-৩ জন, চাদপুর-১ জন, লক্ষীপুর-৪ জন, সিরাজগঞ্জ-১ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ জন, নাটর-১, নওগাঁ-১, খুলনা-১, যশোর-২ জন, নড়াইল-১, চুয়াডাঙ্গা-১, মাগুরা-১, ঝিনাইদহ-১, পটুয়াখালী-৭, পিরোজপুর-২, ভোলা-১, বরগুনা-১, সিলেট-৭, হবিগঞ্জ-২, সুনামগঞ্জ-৪, দিনাজপুর-১, গাইবান্ধা-৫, ময়মনসিংহ-৩, শেরপুর-১, জামালপুর-১ ও নেত্রকোণায় ৪ জন নিহত হয়েছেন।

পটুয়াখালী ও সিলেট জেলায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে বিভাগ ওয়ারি বিশ্লেষণ করলে সিলেট বিভাগে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।

ঢাকা বিভাগে- ১৪ জন, বরিশাল বিভাগে -১১ জন, চট্টগ্রাম-১৪ জন, রাজশাহী- ৪ জন, খুলনা- ৭ জন, সিলেটে – ১৩ জন, রংপুর -৬ জন, ময়মনসিংহ- ৯ জন। এর আগে ২০১৯ সালে সারাদেশে বজ্রপাতে নিহত হন ২৪৬ জন। এর মধ্যে ৩০ জন নারী, ৬ জন শিশু, ৮ জন কিশোর-কিশোরী এবং ২০২ জনই পুরুষ।

করোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউন অবস্থা থাকার পরেও দেশে চার মাসে বজ্রপাতে মৃত্যু ৭৯ জনের, ৬৮ জনই পুরুষ এমন সংবাদ মোটেও সুখকর নয়।