নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী: বাজারে চাহিদা বেড়েছে মুরগির মাংসের। বিশেষ করে ব্রয়লার মুরগির বিক্রি বেড়েছে। অন্যদিকে গরু ও খাশির মাংসের চাহিদা কমছে বলে জানিয়েছেন রাজশাহীর মাংস বিক্রেতারা। অলস সময় পার করছেন মাংস বিক্রেতারা।

বিক্রি কমে যাওয়ার বিষয়ে তারা বলছেন, বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম আকাশছোঁয়া। দাম বেশি হওয়ায় মানুষ মাংসের বাজার খুব বেশি ভিড় করছে না। বিক্রিও আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে। দেশী মুরগি কম বিক্রি হলেও বেড়েছে ব্রয়লার মাংসের দাম।

মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাজশাহীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ মাংসের দোকানে ক্রেতাদের ভিড় নেই বললেই চলে। মুরগির দোকানে ছাত্রদের ভিড়। লাইন ধরে কিনছে ব্রয়লার মুরগি।

অপরিবর্তিত থেকে গরুর মাংশ বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকা ও খাশির মাংশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা দরে। এদিকে, ব্রয়লার মুরগি কোথাও ১৭০ টাকা, আবার কোথাও ১৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া, সোনালি ২৭০ টাকা, লেয়ার ২৭০-২৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

পড়তে পারেন: সরকারিভাবে ডিম-মুরগির দাম নির্ধারণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

সাহেববাজারের মাংস বিক্রেতা রফিক উদ্দিন বলেন, এখন ব্যবসার অবস্থা খুবই খারাপ। সারাদিনে অর্ধেক গরুর মাংসও বিক্রি হয় না। খুব প্রয়োজন ছাড়া মানুষ এত দাম দিয়ে গরুর মাংস কেনে না। ছুটির দিনেও মাংসের বাজারে ক্রেতা থাকে না। যতগুলো গরু-খাসির মাংসের দোকান আছে, সবগুলোই ফাঁকা। এভাবে চললে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না।

একই বাজারের মুরগি বিক্রেতা রেজাউল করিম মিঠু বলেন, একটা সময় দেশী মুরগি খুব বিক্রি হতো। কিন্তু মুরগির খাবারের দাম ও পরিবহনের ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় মুরগির বাজার বাড়তি। এখন আর আগের মতো দেশীর ক্রেতা নেই। মুরগির মধ্যে সবচেয়ে কম দাম ব্রয়লারের। আর মেসের ছেলে মেয়েরা একবারে ১০ কেজি ১২ কেজি করে মুরগি কিনে। সেটা এখন অর্ধেকে নেমেছে। কিন্তু বিক্রি হচ্ছে বলে বাঁচতে পারছি।

পড়তে পারেন: মুরগির কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা

নগরীর শিরোইল এলাকার সাজেদুর রহমান জানালেন, সর্বশেষ গত কোরবানি ঈদের আগে গরু ও খাসির মাংস কিনেছিলেন তিনি। এরপর আর কেনেননি। সাধারণ ক্রেতাদের জন্য এত দাম দিয়ে মাংস কেনা সম্ভব না। খুব প্রয়োজন ছাড়া এই বাড়তি দামে মানুষ গরু-খাসির মাংস কিনতে পারে না সম্ভব নয়। বাজারে বেঁচে থাকার জন্য যেসব পণ্য কিনতে হয় সেটাই কিনতে হিমসিম খেতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, আগে নিম্ন আয়ের মানুষ ব্রয়লার খেয়ে মাংসের স্বাদ পূরণ করতো। বর্তমানে এই ব্রয়লারও মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। এখন সবাই চাইলেই মুরগি কিনতে পারছে না। যারা কিনছেন, তারা বাধ্য হয়ে। সব মিলিয়ে বর্তমান বাজার অবস্থায় সবচেয়ে বেশি খারাপ অবস্থায় আছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের সাধারণ মানুষরা। চালের কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। ৪০ টাকার চাল এখন ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। কি খেয়ে বাঁচবে মানুষ? এমন প্রশ্ন রাখেন তিনি।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ