আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ডেস্ক, এগ্রিকয়ার২৪.কম: বাংলাদেশ থেকে ৯৮ শতাংশ পণ্য শুল্কমুক্ত রপ্তানীর সুযোগ পাবেন উদ্যোক্তারা। এর ফলে চীনে প্রায় নয় হাজার পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবেন দেশের উদ্যোক্তারা। এর আগে বাংলাদেশকে ট্যারিফ লাইনের আওতায় থাকা ৯৭ শতাংশ পণ্যে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দিয়েছিল চীন।

বণিক বার্তায় এ বিষয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়েছ। এতে বলা হচ্ছে, সম্প্রতি ৯৮ শতাংশ পণ্যে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দিয়েছে চীন। যার মাধ্যমে মোট ৮ হাজার ৯৩০ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবেন বাংলাদেশের রফতানিকারকরা। এ বিষয়ে গত ১৬ মার্চ তালিকা প্রকাশ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ট্যারিফ লাইনের আওতায় ৯৭ শতাংশের মাধ্যমে মোট ৮ হাজার ২৫৬ পণ্যে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পেয়েছিল বাংলাদেশ। ৯৮ শতাংশের সুবিধার আওতায় যুক্ত হচ্ছে ৬৭৪টি পণ্য। যার মাধ্যমে মোট পণ্য সংখ্যা ৮ হাজার ৯৩০টিতে দাঁড়িয়েছে। মূলত চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বর্ধিত সুবিধায়।

অর্থমূল্য বিবেচনায় বাংলাদেশের মোট পণ্য আমদানির ২৫ শতাংশই হয় চীন থেকে। দুই দেশের বাণিজ্যের আকার ১৩ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি। গত অর্থবছর চীন থেকে বাংলাদেশ ১২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করে। আর রফতানি করেছে ৬৮ কোটি ডলারের পণ্য।

অর্থাৎ বছরে ২০ শতাংশের বেশি পণ্য চীন থেকে আমদানি করলেও দেশটিতে রফতানি হয় ১ শতাংশেরও কম। দুই দেশের মধ্যে এমন বিশাল বাণিজ্য ঘাটতির মধ্যে চীন ২০২০ সালের জুলাই থেকে ট্যারিফ লাইনের আওতায় ৯৭ শতাংশ বাংলাদেশী পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা চালু করে। সম্প্রতি চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যকে অন্তর্ভুক্ত করে সেটি বাড়িয়ে ৯৮ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছে দেশটির সরকার। এ সুবিধা পাওয়ার পরও প্রচলিত পণ্য দিয়ে চীনের বাজার দখল নেয়া খুব কঠিন হবে বলে মনে করছে বেইজিংয়ে বাংলাদেশের কমার্শিয়াল উইং।

সম্প্রতি বাংলাদেশের কমার্শিয়াল উইংয়ের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে বলা হয়, চীনের বাজার বিশাল হলেও প্রতিযোগিতামূলক। স্থানীয় উৎপাদন-সরবরাহকারীদের সঙ্গে ভালো মানের বিদেশী কোম্পানিই এখানে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারে। তবে কনজিউমার বিহেভিয়ার বা ভোক্তাদের আচরণগত ধরন অনুসারে বলা যায়, উচ্চহারে মূল্য সংযোজিত পণ্যের চাহিদা দেশটিতে ক্রমেই বাড়তে থাকবে।

বর্তমানে চীনের বাজারে রফতানি বৃদ্ধির জন্য মানসম্মত পণ্য ও অনলাইনে এসব পণ্যের ব্যাপক হারে প্রচারণা থাকতে হবে। দেশটির প্রধান ২০ আমদানি পণ্যের একটিও রফতানি করে না বাংলাদেশ। তাই প্রচলিত পণ্য দিয়ে চীনের বাজার কোনোভাবেই দখল করা সম্ভব নয়।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশ থেকে আম, সবজি ও আলু নেবে ইরাক

গত কয়েক বছর বাংলাদেশ থেকে চীনের বাজারে রফতানী করা প্রধান ১০টি পণ্যের পর্যালোচনামূলক তথ্য তুলে ধরেছে কমার্শিয়াল উইং। এতে দেখা গেছে, পাঁচটি প্রচলিত পণ্যের তিনটিরই রফতানি কমেছে। অন্যদিকে পাঁচটি অপ্রচলিত পণ্যের সবগুলোরই রফতানি বেড়েছে। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, চীনে প্রায় নয় হাজার পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবেন দেশের উদ্যোক্তারা।