এগ্রিকেয়ার২৪.কম ডেস্ক: পরিবারভুক্ত বাণিজ্যিক ও সৌখিন দুইভাবেই জারবেরা ফুল চাষ করছেন অনেকেই। তবে এ ফুল ফুটাতে গিয়ে নানা পোকা মাকড় ও রোগ বালাইয়ের সম্মুখিন হতে হয়। অনেকেই এ সমস্যার কারণে সফলতাও পান না।

আন্তর্জাতিক ফুল বানিজ্যে কাট ফ্লাওয়ার (Cut flower) হিসেবে উল্লেখযোগ্য ১০টি ফুলের মধ্যে অন্যতম ও বেশী দিন ফুলদানীতে সতেজ রাখতে জুড়ি না থাকা জারবেরা ফুল চাষে সফলতা পেতে হলে সঠিক নিয়মে এসব রোগ বালাই ও পোকা মাকড় আক্রমণ প্রতিহত করতে হবে। পাঠক আজ এ ফুলের রোগ বালাই দমনের পূর্ণ ব্যবস্থাপনা তুলে ধরা হলো।

মুল পচা রোগ: মাটি বাহিত এক প্রকার ছত্রাকের আক্রমণে এরোগ হয়। এরোগে আক্রান্ত হলে গাছের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়এবং অবশেষে সম্পূর্ণ গাছটি শুকিয়ে যায়। মাটি জীবাণুমুক্ত করে চারা লাগালে এরোগ কম হয়।

গোড়া পঁচা রোগ: এটি মাটি বাহিত রোগ। এ রোগের ফলে গাছের কেন্দ্রীয় অংশ প্রথমে কালো রং ধারণ করে ও পরে পচে যায়। পরবর্তীতে পাতা ও ফুল মারা যায়।

প্রতিকার ১. রিডোমিল অথবা ডায়থেন এম-৪৫ ছত্রাকনাশক ০.২% হারে ৭-১০ দিন অন্তর স্প্রে করলে ভাল ফল পাওয়া যায়। ২. টপসিন ০.০৫% হারে ৭-১০ দিন অন্তর স্প্রে করেও এরোগ দমন করা যায়।

পাউডারি মিলডিউ দুই ধরনের ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয়। এ রোগে আক্রান্ত গাছের উপরে  সাদা পাউডারের আস্তরণ দেয়া হয়েছে বলে মনে হয়।

প্রতিকার: ১। বেনোমিল ৫০ডব্লিউপি ০.০১% হারে সেপ্র করলে ভাল ফল পাওয়া  যায়।

পোকামাকড় মাকড় শুস্ক ও উষ্ণ আবহাওয়ায় মাকড়ের আক্রমণ দেখা যায়। এর আক্রমণে পাতা ও ফুলকুঁড়ির বৃদ্ধি চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হয়। ফুলের অস্বাভাবিক আকার ও আকৃতির কারণে বাজার মুল্য থাকে না।

প্রতিকার ১. আক্রমনের প্রথম দিকে আক্রান্ত পাতা সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। ২. যে কোন মাকড় নাশক যেমন ভারটিম্যাক বা ওমাইট ৫৭ইসি ১.৫ মিঃলিঃ প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে গাছে স্প্রে করতে হবে।

সাদা মাছি পোকা: সাদা মাছি গাছের বিভিন্ন অংশের রস চুষে মারাত্মক ক্ষতি করে। এ পোকা ভাইরাস রোগ ছড়ায়।

দমন ১. আঁঠালো হলুদ রংয়ের ফাঁদ ব্যবহার করা। ২.  ৫০ গ্রাম আধা ভাঙা নিমবীজ ১ লিটার পানিতে ১২ ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে উক্ত পানি ছেকে ৭-১০ দিন পর পর ২-৩ বার পাতার নীচের দিকে স্প্রে করা। ৩.  চারা রোপনের ১০-১৫ দিন পর থেকে এসাটাপ ৭৫ (এসপি) ও কুমুলাস ডিএফ এক সঙ্গে ২ গ্রাম করে প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ১০-১২ দিন পর পর স্প্রে করতে হবে।

ফুল তোলা (Harvesting): পূর্ন বিকশিত জারবেরা ফুলের বাহিরের দু’সারি ডিস্ক ফ্লোরেট (Disc floret) পুষ্প দন্ডের সাথে সমকৌনিক অবস্থানে আসলে ফুল তোলা হয়। কর্তনের সময় পুষ্পদন্ড যথাসম্ভব লম্বা রেখে ফুল সংগ্রহ করা হয়। ধারালো চাকু দ্বারা তেরছা ভাবে খুব সকালে বা বিকালে ফুল তোলা উত্তম।

ফুল কাটার পর পুষ্পদন্ড এক ইঞ্চি  পানিতে ডুবিয়ে রাখতে হবে। পানির সাথে অল্প চিনি এবং কয়েক ফোটা লেবুর রস মিশিয়ে দিলে ফুল সতেজ থাকে। সূত্র: কৃষি তথ্য সার্ভিস।