মেহেদী হাসান,রাজশাহী, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: রাজশাহীর চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম বেঁচাকেনা এখোনো শুরু হয়নি,তবে প্রস্তুতি চলছে। জেলায় আম বাজারজাতকরণের তারিখ নির্ধারণ না করায় পরিপক্ক হলেই যে কেউ পাড়তে পারবেন।আগামী জুন মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে জেলার ভোলাহাট, কানসাট, রহনপুর বাজার, গোমস্তাপুরে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় আম বেঁচাকেনা শুরু হবে বলে জানিয়েছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, আনুষ্ঠানিকভাবে আগামী ২ জুন কানসাট আমবাজার উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে আম বেঁচাকেনা। এবছর জেলায় প্রায় ৩৩ হাজার ৩৫ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। প্রায় ২৫ লক্ষ ৩৯ হাজার ৬৩০ টি আমগাছ রয়েছে। বর্তমানে গোপালভোগ, ক্ষিরসাপাতসহ বিভিন্ন গুটিজাতের আম পাকতে শুরু করেছে। আগামী জুনের ১ম সপ্তাহের পর গোপালভোগ ও ক্ষিরসাপাত আম পক্কতা পেলে আমপাড়া শুরু করবে আমচাষীরা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক নজরুল ইসলাম এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে বলেন, আম বাজারজাত ও পরিবহনে জেলাজুড়ে প্রস্তুতি চলছে। ভোলাহাট, কানসাট, রহনপুর বাজার, গোমস্তাপুরে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় আমের আড়ৎ চালু হবে। আম পাড়ার দিক দিয়ে গোপালভোগ, আঁঠিআম আগে বাজারে আসে। পর্যায়ক্রমিকভাবে ক্ষিরসাপাত, ল্যাংড়া, ফজলি, আর্শি^না আম বাজারে আসে। এবার বেশ ভালো দামে আম বিক্রি করতে পারবেন। চাষিরা আগে পাঁচ কেজি আমে যে দাম পেয়েছেন এবার তিন কেজিতে সে দাম পাবেন।

তিনি আরো বলেন, করোনার কারনে আম সংশ্লিষ্টদের যেমন, শ্রমিক, আড়তদার, ক্রেতা- বিক্রেতা সকলকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলেছি। ইতোমধ্যে শাবান, মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে।

শিবগঞ্জের আম ব্যবসায়ী শামিম হোসেন এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্পানে দেশের বিভিন্ন জায়গায় আম, লিচুর ক্ষতি হয়েছে।আমাদের ক্ষতির পরিমান কম হয়েছে।আশা করছি ভালো দামে আম বেঁচতে পারব। তারপরেও ক্রেতা ছাড়া কিছু বলা যাচ্ছে না।

কানসাটের আম ব্যবসায়ী ও বাগানমালিক মোখলেছুর রহমান এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে জানান, পার্সেলে আম বিক্রি করার উদ্যোগ নিয়েছি। কারোনায় আম বাজারজাতকরণে সমস্যা হবে মনে করছি। মানুষ বাজারে আসতে সঙ্কোচ বোধ করছে।

কানসাট আমবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক টিপু এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে জানান,গত বছর কানসাট বাজার হতে প্রায় ৯’শ কোটি টাকার আম বিক্রয় হয়েছে। আমবাজারের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে ইতোমধ্যে । আগামী ২ জুন সংসদ সদস্য ডাঃ সামিল উদ্দীন আহমেদ শিমুল কানসাট আমবাজারের আম বিক্রয়ের উদ্বোধন করবেন।

তিনি আরোও বলেন, ঘুর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে বাগানের প্রায় ২০% আম পড়ে গেছে। আবার করোনার প্রভাবে এবার বিক্রি কম হতে পারে। আম বাজারজাতকরণে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন তা যদি বাস্তবায়িত হয় তাহলে ব্যবসায়ীরা লাভের মুখ দেখবে। অন্যথায় ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন আমচাষী ও আমব্যবসায়ীরা। এছাড়া পরিবহণ এবং বাজারজাত সঠিকভাবে করতে না পারলে অনেক ব্যবসায়ী পুঁজি হারাতে পারে।

এবিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) একেএম তাজকির-উজ-জামান এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে জানান, আম বাজারজাত ও পরিবহণে যাতে কোন সমস্যার সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। জেলার আমকে ব্রান্ডিং করার জন্য জেলা প্রশাসন কাজ করছে।

তিনি আরও বলেন, এরই মধ্যে সচিবালয়ে জেলার আমের বাজার তৈরী করার কাজ চলছে। বিভিন্ন জেলার আম ব্যবসায়ীরা জেলার আমবাজারে এসে যাতে নির্বিঘ্নে আম ক্রয় করতে পারে, সেব্যাপারেও যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সবাইকে চলাফেরা করতে বলা হচ্ছে।