ফসল ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: বাংলাদেশের সবজায়গাতেই চাষ করা হয় তেলজাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ফসল সরিষা। এঁটেল দো-আঁশ, বেলে দো-আঁশ এবং দো-অঁশা মাটিতে সরিষা ভালো হয়। নিচু জমিতে অর্থাৎ পানি জমে এমন জমিতে সরিষা  চাষ করা যায় না। অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে বীজ বপন করতে হবে। তবে নভেম্বরের ১৫ তারিখ পযর্ন্ত বপন করা যায়। তবে, সরিষা চাষে সারের পরিমাণ জানা আবশ্যক।

সার প্রয়োগ পদ্ধতি :

১. ইউরিয়া বীজ বপনের ৩০ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে ১-২ বার প্রয়োগ করতে হবে৷

২.  ইউরিয়ার উপরিপ্রয়োগ প্রয়োগ করতে হবে৷

৩. ইউরিয়ার উপরিপ্রয়োগের পূর্বে জমির আগাছা দমন করতে হবে৷

৪. অর্ধেক ইউরিয়া ও অন্যসব সার জমি তৈরির সময় প্রয়োগ করতে হবে৷

৫. ইউরিয়ার উপরিপ্রয়োগের পর জমিতে সেচ দিতে হবে৷

সরিষা চাষে সার প্রয়োগ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ জাত, মাটি এবং মাটিতে রসের তারতম্য অনুসারে সার দিতে হয়৷ ইউরিয়া সার অর্ধেক বপনের আগে এবং বাকি অর্ধেক গাছে ফুল আসার সময় উপরিপ্রয়োগ করতে হয়৷ সার উপরি-প্রয়োগের সময় মাটিতে রস থাকা বাঞ্ছনীয়৷ সারের পরিমাণ নিম্নরূপ:

সারের নাম জাত সারের পরিমাণ(প্রতি হেক্টরে) জাত  সারের পরিমাণ(প্রতি শতাংশে)
সোনালী(এসএ-৭৫), (বারিসরিষা- ৬,

বারি সরিষা-৭,

বারি সরিষা-৮)

টরি-৭কল্যাণীয়া (টিএস-৭২)(রাই-৫ দৌলতআর এস-৮১) সোনালী(এসএ-৭৫),

(বারি সরিষা-৬,

বারি সরিষা-৭,

বারি সরিষা-৮)

টরি-৭কল্যাণীয়া (টিএস-৭২) (রাই-৫ দৌলতআর এস-৮১)
ইউরিয়া ২৫০-৩০০ কেজি ২০০-২৫০ কেজি ১০০০ – ১২০০ গ্রাম ৮০০ – ১০০০ গ্রাম
টিএসপি ১৭০-১৮০ কেজি ১৫০-১৭০ কেজি ৭০০ – ৮০০ গ্রাম ৬০০ – ৭০০ গ্রাম
এমপি ৮৫-১০০ কেজি ৭০-৮০ কেজি ৩৫০ – ৪০০ গ্রাম ৩০০ – ৩৫০ গ্রাম
জিপসাম ১৫০-১৮০ কেজি ১২০-১৫০ কেজি ৬০০-৭৫০ গ্রাম ৪৮০ -৬০০ গ্রাম
জিঙ্ক সালফেট ০ – ৫ কেজি ০ – ৫ কেজি ০ – ২০ গ্রাম ০- ২০ গ্রাম
বোরিক এসিড ১-১.৫ কেজি ১-১.৫ কেজি ৪ -৬ গ্রাম ৪- ৬ গ্রাম
ডলোচুন ৪০০ কেজি ৩০০ কেজি ১৫০০ গ্রাম ১২০০ গ্রাম
সুষম কম্পোষ্ট ২-৩ টন ১-২ টন ৮ – ১২ কেজি ৪ – ৮ কেজি
সাধারণ গোবর ৮-১০ টন ৬-৮ টন ৩০ – ৪০ কেজি ২৫ – ৩০ কেজি
খৈল ১-২ টন < ১ টন ৪ – ৮ কেজি <৪ কেজি

জমিতে নির্বাচিত হারে সুষম কম্পোস্ট দেওয়া হলে সেখানে সাধারণ গোবর বা খৈল দেওয়ার প্রয়োজন হয়  না৷

সেচ ব্যবস্থাপনা 

সোনালী সরিষা, বারি সরিষা ৬ (ধলি), বারি সরিষা ৭ ও বারি সরিষা ৬ উফশী জাতসমূহ পানি সেচ দিলে ফলন বেশি হয়৷ বীজ বপনের ২৫-৩০ দিনের মধ্যে (গাছে ফুল আসার আগে) প্রথম সেচ এবং ৫০-৫৫ দিনের মধ্যে (ফল ধরার সময়) দ্বিতীয় সেচ দিতে হবে৷ বপনের সময় মাটিতে রস কম থাকলে চারা গজানো ১০-১৫ দিনের মধ্যে একটা হালকা সেচ দিতে হবে৷ সেচের নিশ্চয়তা থাকলে সার বেশি দিতে হবে৷