মৎস্য-প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের কর্মস্থলে

নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ২০২০-২১ অর্থবছরে(৪ থেকে ২৫ অক্টোবর) ২০২১ পর্যন্ত ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধকালে জেলেদের জন্য ১১ হাজার ১১৯ মেট্রিক টন ভিজিএফ বরাদ্দ করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

আজ সোমবার (২৭ সেপ্টে্ম্বর) এ তথ্য এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোঃ ইফতেখার হোসেন।

এ বছর ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২দিন ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধকালে জেলেদের জন্য ১১ হাজার ১১৮ দশমিক ৮৮ মেট্রিক টন ভিজিএফ চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে সরকারের মানবিক খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির আওতায় ৩৭ জেলার ১৫১টি উপজেলায় মা ইলিশ আহরণে বিরত থাকা ৫ লক্ষ ৫৫ হাজার ৯৪৪টি জেলে পরিবারের জন্য এ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গত বছরের চেয়ে বেশি ২৭ হাজার ৬০২টি জেলে পরিবারকে এবার এ বরাদ্দের আওতায় আনা হয়েছে। এর আওতায় প্রতিটি জেলে পরিবার ২০ কেজি করে চাল পাবে। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরুর পূর্বেই এ বছর ভিজিএফ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকদের অনুকূলে এ সংক্রান্ত মঞ্জুরী জ্ঞাপন করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। একইসাথে ভিজিএফ চাল পরিবহণ ব্যয়ও সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকদের অনুকূলে মঞ্জুরী জ্ঞাপন করা হয়েছে। ভিজিএফ চাল ২৫ অক্টোবর ২০২১ তারিখের মধ্যে উত্তোলন ও সংশ্লিষ্টদের মাঝে বিতরণ সম্পন্ন করার জন্য জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ আহরণে বিরত থাকা নিবন্ধিত ও প্রকৃত জেলেদের মধ্যে এ ভিজিএফ বিতরণ নিশ্চিত করার জন্য বরাদ্দপত্রে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

ইলিশ সম্পদ সংরক্ষণে‘প্রটেকশন এন্ড কনজারভেশন অব ফিশ অ্যাক্ট, ১৯৫০’ এর অধীন প্রণীত‘প্রটেকশন এন্ড কনজারভেশন অব ফিশ রুলস, ১৯৮৫’অনুযায়ী এ বছর ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিন সারাদেশে ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহণ, মজুদ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় নিষিদ্ধ করে গত ২৬ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন জারী করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

জাটকা আহরণে বিরত থাকা জেলেদের জন্য বরাদ্দপ্রাপ্ত উপজেলাগুলো হলো ঢাকা জেলার দোহার ও নবাবগঞ্জ, মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয়, দৌলতপুর ও হরিরামপুর, মুন্সিগঞ্জ জেলার সদর, শ্রীনগর, লৌহজং, টঙ্গিবাড়ী ও গজারিয়া, ফরিদপুর জেলার সদর, মধুখালী, সদরপুর ও চরভদ্রাসন, রাজবাড়ি জেলার সদর, পাংশা, কালুখালী ও গোয়ালন্দ, শরীয়তপুর জেলার জাজিরা, ভেদরগঞ্জ, নড়িয়া ও গোসাইরহাট, মাদারীপুর জেলার সদর, কালকিনি ও শিবচর, চট্টগ্রাম সদর, বাঁশখালী, সীতাকুন্ড, সন্দ্বীপ, আনোয়ারা ও মীরসরাই, ফেনী জেলার সোনাগাজী, নোয়াখালী জেলার সদর, হাতিয়া, সুবর্ণচর ও কোম্পানীগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর জেলার সদর, রামগতি, রায়পুর ও কমলনগর, চাঁদপুর জেলার সদর।

এছাড়াও, হাইমচর, মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ, বাগেরহাট জেলার সদর, মোংলা, মোড়েলগঞ্জ, কচুয়া, রামপাল, চিতলমারি, শরণখোলা ও ফকিরহাট, সিরাজগঞ্জ জেলার সদর, চৌহালি, বেলকুচি, কাজীপুর ও শাহজাদপুর, বরিশাল জেলার সদর, মেহেন্দিগঞ্জ, মুলাদী, হিজলা, বাবুগঞ্জ, বানারীপাড়া, উজিরপুর, গৌরনদী ও বাকেরগঞ্জ, পিরোজপুর জেলার সদর, মঠবাড়ীয়া, ভান্ডারিয়া, নেছারাবাদ, নাজিরপুর, ইন্দুরকানী ও কাউখালী, পটুয়াখালী জেলার সদর, কলাপাড়া, বাউফল, গলাচিপা, রাঙ্গাবালি, মির্জাগঞ্জ, দশমিনা ও দুমকি, ভোলা জেলার সদর, বোরহানউদ্দিন, চরফ্যাশন, দৌলতখান, লালমোহন, তজুমদ্দিন ও মনপুরা, বরগুনা জেলার সদর, আমতলী, তালতলী, পাথরঘাটা, বামনা ও বেতাগী এবং ঝালকাঠি জেলার সদর, কাঁঠালিয়া, নলছিটি ও রাজাপুর।

সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিবছর ০১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত দেশব্যাপী জাটকা আহরণ, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকে। এর মধ্যে ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত ০৪ (চার) মাস জাটকা আহরণে বিরত থাকা মৎস্যজীবীদের সরকার মানবিক সহায়তা প্রদান করে থাকে।

অপর মঞ্জুরী আদেশে ২০২০-২১ অর্থ বছরে কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণ বন্ধকালীন কাপ্তাই হ্রদ তীরবর্তী রাঙ্গমাটি ও খাগড়াছড়ি জেলার ১০টি উপজেলার ২৫ হাজার ৩১টি নিবন্ধিত জেলে পরিবারকে খাদ্য সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে ১ হাজার ১.২৪ মেট্রিক টন ভিজিএফ বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। মে-জুন ২০২১ দুই মাসের জন্য পরিবার প্রতি মাসিক ২০ কেজি হারে দুই মাসে ৪০ কেজি করে এ বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে।

এ ভিজিএফ চাল ১০ জুন ২০২১ তারিখের মধ্যে যথানিয়মে উত্তোলন এবং নিবন্ধিত ও কার্ডধারী জেলেদের মাঝে বিতরণের জন্য জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। বরাদ্দপ্রাপ্ত ১০টি উপজেলা হলো রাঙ্গামাটি জেলার সদর, লংগদু, বাঘাইছড়ি, নানিয়ারচর, কাপ্তাই, বিলাইছড়ি, জুরাছড়ি ও বরকল এবং খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি ও দীঘিনালা।

প্রতিবছর মে থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে সকল ধরণের মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে। এ সময় মৎস্য অহরণে বিরত থাকা মৎস্যজীবীদের সরকার মানবিক সহায়তা প্রদান করে থাকে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ