নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ডলারের মূল্য উঠানামায় ভারত থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। এছাড়া আমদানি কমে যাওয়ার অজুহাতে দুদিনের ব্যবধানে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলার সংকটে ভারত থেকে বাংলাদেশে আমদানিকৃত পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৪-৫ টাকা করে বেড়েছে।

দুদিন আগেও বন্দরে ইন্দোর জাতের প্রতি কেজি ১৮ টাকা দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা ২২-২৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। বন্দর দিয়ে ২৩ জুলাই ১৩টি ট্রাকে ৩৮৮ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। ২৪ জুলাই ৩৪টি ট্রাকে ৯৬৫, ২৫ জুলাই ২৯টি ট্রাকে ৮১৫, ২৬ জুলাই ১৯টি ট্রাকে ৫২৩, ২৭ জুলাই ২৮টি ট্রাকে ৭৯৬, ২৮ জুলাই ৩০টি ট্রাকে ৮২৫ পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। পেঁয়াজ যেহেতু কাঁচামাল, দ্রুতপচনশীল, তাই কাস্টমসের সব প্রক্রিয়া শেষে আমদানিকারকরা যেন দ্রুত খালাস করে নিতে পারেন, এজন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে।

পড়তে পারেন: একলাফে দ্বিগুণ কাঁচা মরিচ, কমেছে পেঁয়াজের দাম

হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী রেজাউল ইসলাম বলেন, দেশে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে এবং সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে সরকার পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়ায় দুই মাস বন্ধের পর ৫ জুলাই থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। সম্প্রতি হঠাৎ ডলারের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় পেঁয়াজের দামের ওপর প্রভাব পড়ছে।

যেমন যখন ব্যাংকে পেঁয়াজের এলসি খোলা হচ্ছে, তখন এক রেট আবার যখন ব্যাংকে বিল ছাড়তে হচ্ছে সে সময় বাড়তি মূল্য পরিশোধ করতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে ডলারের সংকটের কারণে ব্যাংকগুলোয় পেঁয়াজের এলসি সেভাবে দিচ্ছে না, এমনকি নগদ টাকা দিয়েও এলসি খুলতে পারছে না, তাছাড়া সব ব্যাংক এলসি দিচ্ছে না। এতে আগে ছোট বড় সব আমদানিকারক পেঁয়াজ আমদানি করতে পারলেও বর্তমানে ব্যাংকে এলসি দেয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করায় সবাই পেঁয়াজ আমদানি করতে পারছে না।

পড়তে পারেন: বিশ্বে পেঁয়াজ আমদানিতে শীর্ষে বাংলাদেশ, নিয়ন্ত্রণ সিন্ডিকেটের হাতে

তিনি আরো বলেন, যারা বড় আমদানিকারক শুধু তারাই বর্তমানে এলসি করতে পারছেন। এতে হিলিসহ দেশের সব বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি কমে গেছে। যেখানে সোনা মসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন ৭০-৮০ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি হতো গতকাল সেখানে ৩৫ ট্রাক আমদানি হয়েছে। পেঁয়াজ আমদানির একই অবস্থা হিলির ক্ষেত্রেও।

হিলি স্থলবন্দরে পেঁয়াজ কিনতে আসা পাইকার আইয়ুব হোসেন বলেন, বেশ কিছুদিন বন্ধের পর আবারো হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজের আমদানি শুরু হওয়ায় আবারো আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু হয়েছে। মোকামগুলোর চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা বন্দর থেকে পেঁয়াজ ক্রয় করে পাঠাচ্ছিলাম। পেঁয়াজ আমদানি শুরুর পর থেকেই পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছিল কমতে কমতে ১৮ টাকায় নেমেছিল।

এতে করে আমাদের যেমন কিনতে সুবিধা হচ্ছিল তেমনি পুঁজি কম লাগায় মোকামে পাঠাতে সুবিধা হচ্ছিল। কিন্তু আবারো পেঁয়াজের দাম বাড়তির দিকে দুদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৪-৫ টাকা বেড়ে ২২-২৩ টাকায় দাম উঠে গিয়েছে। এতে করে আমরা যেমন পেঁয়াজ কিনতে ভয় পাচ্ছি।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ