ডেস্ক প্রতিবেদন, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ডিম ও মুরগির মাংস নিয়ে সাধারন মানুষের মাঝে ভুল ধারণাগুলো দূর করতে পারলে স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিষয়ক সচেতনা বাড়বে বলে জানিয়েছেন ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস।

তিনি বলেছেন, ডিম ও মুরগির মাংস নিয়েও সাধারন মানুষের মাঝে অনেক ভুল ধারনা আছে। এগুলো দূর করতে পারলে সাধারন মানুষের মাঝে স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিষয়ক সচেতনা বাড়বে।

শনিবার (২০ অক্টোবর) ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত পোল্ট্রি রিপোর্টিং বিষয়ক মিডিয়া কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. সুভাষ এ কথা বলেন।

জেলা প্রশাসক ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, সাধারন মানুষের তথ্যের চাহিদা পূরণ ও তথ্যের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সংবাদকর্মী ও গণমাধ্যমকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।

বেসরকারি সংস্থা ওয়াচডগ বাংলাদেশ -এর ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) এ কর্মশালার আয়োজন করে।

ড. সুভাষ বলেন- মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সবার জন্য শুধু খাদ্য নয়, পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছেন। পূর্বের যে কোন সময়ের তুলনায় বর্তমান সরকারের আমলেই পুষ্টি পরিস্থিতির সবচেয়ে বেশি উন্নতি হয়েছে।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ব বিদ্যালয়ের (বাকৃবি) প্যাথলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. প্রিয় মোহন দাস বলেন, দেশের ৯০ শতাংশ ফিড উন্নত ফর্মূলায় এবং আধুনিক ফিড মিলগুলোতে তৈরি হচ্ছে তাই পোল্ট্রি বা ফিস ফিড নিয়ে শংকার কোন কারণ নেই। তিনি বলেন, উন্নত জাতের মুরগির কারনে জনবহুল এদেশে স্বল্পমূল্যে সাধারন মানুষের প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে।

মুরগির জাতের ক্রমাগত উন্নয়ন ঘটছে। আশাকরা যায়  আগামী কয়েক বছরের মধ্যে প্রতিটি লেয়ার মুরগি ১০০ সপ্তাহ পর্যন্ত পালন করা যাবে এবং এ থেকে ৫০১টি পর্যন্ত ডিম পাওয়া যাবে।

কৃবি’র পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শওকত আলী বলেন- ডিমের উৎপাদন খরচ আগের চেয়ে বেড়েছে তাই প্রান্তিক খামারিদের বাঁচিয়ে রাখতে হলে খামারিরা যাতে ডিমের প্রকৃত মূল্য পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

ময়মনসিংহ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডা. আফতাব হোসেন বলেন- পোল্ট্রি খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণে সরকার সজাগ দৃষ্টি রাখছে। এক্ষেত্রে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরন করছি। কোথাও কোন অনিয়ম ধরা পড়লে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

দৈনিক প্রথম আলোর যুগ্ম-সম্পাদক সোহরাব হাসান বলেন, ঢাকার বাইরে সাংবাদিকদের কাছে পোল্ট্রি বিষয়ক তথ্যের অপ্রতুলতা আছে, এ তথ্য চাহিদা পূরণে পোল্ট্রি সংশ্লিষ্ট অ্যাসোসিয়েশনগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। পোল্ট্রি যেহেতু একটি সায়েন্টিফিক এবং স্পর্শকাতর শিল্প তাই এ বিষয়ে রিপোর্ট করার আগে প্রয়োজনীয় তথ্য পরিপূর্ণভাবে জেনে নিতে হবে।

খেয়াল রাখতে হবে যেন কোন ধরনের ভুল তথ্য না যায়। তিনি বলেন- সমাজের প্রতি, সাধারন মানুষের প্রতি গণমাধ্যমের দায়বদ্ধতা আছে তাই ভোক্তার স্বার্থ ক্ষুন্ন হচ্ছে কীনা সে বিষয়ে সংবাদকর্মীদের খেয়াল রাখতে হবে।

চ্যানেল টুয়েন্টিফোর এর কৃষি বিষয়ক প্রতিবেদক ফয়জুল সিদ্দিকী বলেন, প্রায় তিন বছর ধরে প্লাষ্টিকের ডিমের অনুসন্ধানে লেগে থাকলেও এ পর্যন্ত তার সন্ধান পাওয়া যায় নি। যে ডিমগুলো পাওয়া গেছে সেগুলো মূলত: পরিবেশ, তাপমাত্রাসহ নানা কারনে নিম্নমানের ছিল বলেই সাধারন মানুষের কাছে তা নকল ডিম বলে মনে হয়েছে।

কর্মশালাটির স্থানীয় সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন দৈনিক যুগান্তরের ময়মনসিংহ ব্যুরো প্রধান আতাউল করিম খোকন। কর্মশালায় জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক, টিভি চ্যানেল, বার্তা-সংস্থা এবং অন-লাইন নিউজপেপারের মোট ৩২ জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।