বিকাশ রায় বাবুল, নীলফামারী প্রতিনিধি: আখ বাংলাদেশের অর্থকারী ফসলের মধ্যে অন্যতম। অধিক লাভজনক ও নগদ অর্থে বিক্রয় হওয়ায় আখ চাষে ঝুঁকছে নীলফামারীর ডোমারের কৃষকরা। আখের দামেও খুশি চাষিরা।

উপজেলায় গত বছরের তুলনায় বেড়েছে আখের চাষ। উঁচু জমি, পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা থাকা, ডাঙ্গা ও সমতল জমিতে আখের ভালো উৎপাদন হয়। অন্যান্য ফসলের ন্যায় তুলনামুলক কম উৎপাদন খরচ ও অধিক দামে বিক্রয় হওয়ায় প্রতি বছর বেড়েছে আখ চাষির সংখ্যা ও আখ চাষের জমির পরিমাণ।

চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকুল থাকায় উপজেলায় আখ ক্ষেতে রোগ বালাই কম ও ফলন ভালো হয়েছে এবং ব্যাপক চাহিদা থাকার কারনে কৃষকরা মাঠেই ভালো দাম পাচ্ছে। ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতারা আখ ক্ষেতে চাষীদের কাছ থেকে আখ কিনে বাজারে ভালো দামে বিক্রি করে, তারাও লাভবান হচ্ছে।

পড়তে পারেন: মাঠে দাঁড়িয়ে ১৫ হাজার মে. টন আখ, বেকায়দায় চিনিকল

বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের আখ চাষী জয়নাল আবেদীন, উপেন চন্দ্র রায়, হযরত আলী, মো. আমিন,নুরুল হক জানান, প্রায় দশ বারো বছর হতে আখ চাষ করছি। এবারে গত বছরের তুলনায় বেশি চাষ করেছি। রোগ বালাই কম হয়েছে। আবহাওয়া প্রচন্ড গরম চলছে। বাজারে আখের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। আখের প্রকার ভেদে প্রতি পিছ ১০টাকা হতে শুরু করে ৩০ টাকা দরে বিক্রি করা যাচ্ছে।

হাইব্রীড (ইশ্বরদী-৪১/৪২) জাতের আখ প্রতি বিঘায় (৩৩ শতক) ৮০ হাজার হতে এক লক্ষ টাকার আখ বিক্রি করা হচ্ছে। কৃষকদের স্থানীয় ভাষায় গেন্ডারিয়া ও ইশ্বরদী জাতের আখ প্রতি বিঘায় পঞ্চাশ হাজার হতে ৮০ হাজার টাকায় বিক্রয় করা যায়।

আখ চাষী এজার উদ্দিন জানান, এক বিঘা জমিতে হাইব্রীড(ইশ্বরদী-৪১) জাতের আখ চাষ করেছি। ভালো ফলন হয়েছে, ৭৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি।

পড়তে পারেন: ১৫ হাজার খরচে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার আখ বিক্রি

ডোমার উপজেলা উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কামরুজ্জামান জানান, আমাদের এলাকায় যে সমস্ত আখ চাষ করা হয়, সবই ইশ্বরদী জাতের। ইশ্বরদী-৩১,৩২,৩৭,৩৮ ও ৪১,৪২ জাতের আখ চাষের উপযোগী। ইশ্বরদী -৪১ ও ৪২ জাতের আখ ভালো ফলন হয় এবং অন্যান্য জাতের তুলনায় বাজারে চাহিদা বেশী থাকে, দামও ভালো পাওয়া যায়।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. বকুল ইসলাম জানান, গত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে আখ চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। এবারে ১৩ হেক্টর জমিতে আখ চাষ করা হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় এক হেক্টর বেশি চাষ হয়েছে। এসব জাতের আখ চাষে ইশ্বরদী ইক্ষু গবেষণা কেন্দ্র দেখভাল করলেও, আমরা কৃষি দপ্তর বিভাগ চাষীদের রোগ বালাই দূরীকরণ ও আখের চাষ ব্যবস্থার পরামর্শ দিয়ে থাকি। এসব জাতের আখ বানিজ্যিক ভাবে বিক্রয় করা হয় না। শুধু মুখে চিবিয়ে ও মেশিনে মাড়াই করিয়ে রস বের করে পান করা হয়।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ