এগ্রিকেয়ার২৪.কম আন্তর্জাতিক কৃষি ডেস্ক: ভারতের মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, গুজরাট, উত্তর প্রদেশ, পাঞ্জাবসহ উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ রসুন উৎপাদন হয়। গত মৌসুমে এসব রাজ্যের কৃষকরা পেঁয়াজ উৎপাদন করে লোকসানের মুখে পড়েছিলেন। এ কারণে এবারের মৌসুমে অনেকেই রসুন আবাদ করেন। চলতি মৌসুমে ভারতের এসব রাজ্যে রসুনের বাম্পার ফলন হয়েছে।

বাড়তি উৎপাদন ও সরবরাহের কারণে দেশটির কৃষিপণ্যের অন্যতম বৃহত্তম পাইকারি বাজার মধ্যপ্রদেশের মান্দিতে রসুনের দামে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা দিয়েছে। চলতি বছরের শুরু থেকে ক্রমাগত দরপতনে এবারও লোকসানের মুখে পড়েছেন ভারতীয় রসুন চাষীরা। খবর বিজনেস লাইন ও বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।

ভারতীয় গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারিতে মান্দিতে প্রতি কুইন্টাল রসুনের গড় দাম ছিল ১ হাজার ৮০৪ রুপি। জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে সেখানকার বাজারে নতুন মৌসুমে উৎপাদিত রসুনের সরবরাহ শুরু হয়। পরের মাসে মান্দিতে প্রতি কুইন্টাল রসুনের গড় দাম আগের মাসের তুলনায় ১২৬ রুপি কমে দাঁড়ায় ১ হাজার ৬৭৮ রুপিতে।

মার্চে পণ্যটির গড় দাম কিছুটা বেড়ে দাঁড়ায় কুইন্টালপ্রতি ১ হাজার ৭০৫ রুপিতে, যা আগের মাসের তুলনায় ২৬ রুপি বেশি।

তবে মার্চে বাড়লেও পরবর্তী দুই মাসে পাইকারি পর্যায়ে রসুনের দামে ধারাবাহিক মন্দাভাব বজায় ছিল। এপ্রিলে মান্দির পাইকারি বাজারে প্রতি কুইন্টাল রসুন বিক্রি হয় ১ হাজার ৩০৭ রুপিতে।

আগের মাসের তুলনায় এ সময় পণ্যটির গড় দাম কমেছে রেকর্ড ৩০৭ রুপি। মে মাসেও মান্দিতে রসুনের দামে মন্দাভাব দেখা গেছে। চলতি মাসে এখন পর্যন্ত মান্দির পাইকারি বাজারে প্রতি কুইন্টাল রসুনের গড় দাম দাঁড়িয়েছে ৭৭৯ রুপিতে, যা আগের মাসের তুলনায় ৫২৮ রুপি কম।

মধ্যপ্রদেশের রসুন চাষী রামায়ণ সিং বলেন, গত মৌসুমে পেঁয়াজের বাম্পার ফলনের কারণে দাম পাওয়া যায়নি। সেই লোকসান কাটাতে এবার রসুন আবাদ করেছিলাম। কিন্তু এবারও একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

চলতি বছরের শুরুতে প্রতি কুইন্টাল রসুনের দাম ২ হাজার রুপির কাছাকাছি ছিল। অথচ গত সপ্তাহে পণ্যটি কুইন্টালপ্রতি ৫০০ রুপির নিচে বিক্রি করেছি। রসুনের এ দরপতন স্থানীয় চাষীদের এবারও হতাশ করেছে। রাষ্ট্রীয় কিষান মহাসংঘের প্রেসিডেন্ট শিব কুমার শর্মা জানান, ২০১৬-১৭ মৌসুমে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও গুজরাটের মোট ৯২ হাজার হেক্টর জমিতে রসুন আবাদ হয়েছিল।

পেঁয়াজ আবাদ করে লোকসান হওয়ার কারণে এক বছরের ব্যবধানে ২০১৭-১৮ মৌসুমে এসব রাজ্যে রসুন আবাদের আওতায় জমির পরিমাণ বেড়ে ১ লাখ ২৮ হাজার হেক্টরে দাঁড়িয়েছে। শিব কুমার শর্মা বলেন, বাড়তি আবাদ, উৎপাদন ও সরবরাহের জের ধরে রসুনের ধারাবাহিক দরপতন দেখা দিয়েছে। সূত্র: বণিক বার্তা।