জেলা প্রতিনিধি, দিনাজপুর: সারাদেশে লিচুর রাজধানী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে দিনাজপুর। জেলার বড়ো মাঠ লিচুর বাজারে বসে দেশের সবচেয়ে বড়ো লিচুর বাজার। এ বাজারে বর্তমানে ভালো মানের ১০০ লিচু বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত। ফলে পিস হিসেবে এক লিচুর দাম ২০ টাকা। সবমিলিয়ে ১০ দিনে প্রায় হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

ফল ব্যবসায়ী আরিফুল জানান, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকাররা লিচু কিনতে এখানে ছুটে আসছেন। বর্তমানে দিনাজপুর জেলা ছাড়া কোথাও কোনো বাগানে লিচু নেই। তাই সারা দেশের পাইকাররা দিনাজপুরের লিচুর বাজারে নজর দিয়েছেন। তাই লিচুর দাম বেড়ে গেছে।

পড়তে পারেন: দিনাজপুরে এক লিচুর দাম ২০ টাকা, হাজার কোটি টাকার বিক্রি

কয়েকজন ক্রেতা জানান, এ বছর রেকর্ড দামে বিক্রি হচ্ছে জেলার বিখ্যাত বেদানা ও চায়না থ্রি জাতের লিচু। প্রকার ভেদে ১০০ বেদানা লিচু ৮০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা ও চায়না থ্রি জাতের লিচু বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৬০০ থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে দাম বেশি হলেও অল্প পরিমাণে কিনছেন অনেকেই।

বিক্রেতারা জানান, বেদানা ও চায়না থ্রি লিচুর দাম বেশি হলেও বোম্বাই জাতের ১০০ লিচু বিক্রি হচ্ছে প্রকার ভেদে দুই থেকে তিনশ’ টাকায়। দাম কম হওয়ায় এই লিচুই বেশি বিক্রি হচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এবার বেদানা ও চায়না থ্রি জাতের লিচু ফলন কম হওয়ায় দাম এমন আকাশ ছোঁয়া। এছাড়াও সরাসরি বাগান থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহের কারণে কিছুটা প্রভাব পড়েছে এই বাজারে।

দিনাজপুর কৃষি অফিসের সূত্র জানায়, জেলায় সাড়ে ছয় হাজার হেক্টর জমিতে লিচুর বাগান রয়েছে। প্রতি বছর এখান থেকে প্রায় ৩৫ হাজার মেট্রিক টন লিচু উৎপাদন হয়।

পড়তে পারেন: রাজশাহীর বাজারে লিচুর শ ১৬০ টাকা

দিনাজপুর ফল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাজিউর রহমান বিপ্লব বলেন, লিচুর এই বাজার আগামী সাত থেকে ১০ দিন জমজমাট থাকবে। তবে কিছু লিচু পাওয়া যাবে ২০ থেকে ২৫ দিন পর্যন্ত। এবার লিচু বাজারে ৮০০ থেকে এক হাজার কোটি টাকার কেনাবেচা হবে। বাগানেই এবার লিচুর দাম বেশি। বাগানমালিক ও আগাম বাগান কেনা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেই বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। সামান্য লাভে আমরা লিচু বিক্রি করছি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মনজুরুল হক বলেন, সারাদেশে কমবেশি লিচু উৎপাদিত হলেও দিনাজপুরের লিচুর চাহিদা বেশি। এবার ভালো দাম পেয়ে চাষি, পাইকার, ব্যবসায়ীরা সবাই খুশি।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ