নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: দুই মাছের দাম ১৮ হাজার ৯০০ টাকা! হ্যাঁ, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ার পদ্মা ও যমুনা নদীর মোহনায় ১৩ কেজি ৫০০ গ্রাম ওজনের দুটি পাঙাশ মাছ ধরা পড়েছে।

আজ সোমবার ( ২৪ মে ২০২১) সকাল ১০টার দিকে মাছ দুটি ধরা পড়ে স্থানীয় জেলে নিমাই হালদারের জালে। এরপর  দৌলতদিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাটে মাছ দুটি বিক্রি করতে নিয়ে আসেন তিনি। পরে মাছ ফেরিঘাটের ব্যবসায়ী চান্দু মোল্লা ১৪০০ টাকা কেজিদরে ১৮ হাজার ৯০০ টাকায় কিনে নেন।

মাছ ব্যবসায়ী চান্দু মোল্লা বলেন, মাছ দুটি আমি ১৪০০ টাকা কেজিদরে মোট ১৮ হাজার ৯০০ টাকায় কিনে নিই। এখন মাছটি দুটি ১৫০০ টাকা কেজিদরে ঢাকায় বিক্রি করব বলে ঢাকায় যোগাযোগ করছি বলে জানান তিনি।

জেলে নিমাই হালদার বলেন, গত রোববার দুপুর ১২টার দিকে চারজন মিলে পদ্মা হয়ে ঢাকা জেলার দোহার থানার জয়পাড়া এলাকায় মাছ শিকারে যাই। মাছের আশায় সারারাত সবাই জাল ফেলে সেখানে বসে থাকি। কিন্তু মাছের কোনো দেখা মেলে না।

সোমবার ভোরের দিকে জালে জোরে একটা টান পড়ে; তখন বুঝতে পারি বড় কোনো মাছ ধরা পড়েছে। পরে অনেকক্ষণ ধরে চারজন মিলে জাল তুলে দেখি বড় দুটি পাঙাশ। প্রায় দুই মাস পর বড় ধরনের কোনো মাছ জালে ধরা পড়ল বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে রাজবাড়ী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল জানান, বর্তমানে পদ্মা নদীর যমুনার মোহনায় এখন প্রায়ই জেলেদের জালে বড় আকৃতির বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরা পড়ছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।

নদীর মাছে চারদিনেই লাখপতি জেলে ওয়ালিউর!

মেহেদী হাসান, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চকরাৃজাপুর ইউনিয়নের কালিদাশখালি গ্রামের ইউসুফ আলী দেওয়ানের ছেলে ওয়ালিউর রহমান (৩২)। মৌসুমে পদ্মা নদীতে মাছ ধরেন তিনি। পাশাপাশি নিজের মোটরবাইকে যাত্রী বহন করেন পদ্মার দুর্গম চরে। সেই আয়েই চলে সংসার।

অন্যান্য দিনের মতোই গতকাল রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) ওয়ালিউর মাছ ধরতে যায় পদ্মা নদীতে। জালে ধরা পড়ে ৪০ কেজির বাঘাইড়।সেই মাছ ৮৫০ টাকা দরে বিক্রি করে দাম পান ৩৪ হাজার টাকা। এর তিন দিন আগে ৫টি বাঘাইড় পেয়েছিলেন তিনি। মোট ওজন হয়েছিল ৭৪ কেজি। এর মধ্যে ২টি ১৭ কেজি, ১ টা ১৪ কেজি ও আর বাকি ২টা ২৬ কেজি ওজন হয়েছিল। মাছগুলো ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি করে পেয়েছেন ৫৫ হাজার ৫০০ টাকা।

আজ সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) আবারও ৯ কেজি ওজনের রুইমাছ ও সাড়ে তিন কেজি ওজনের বাগাইড় ধরা পড়ে ওয়ালিউর রহমানের জালে। ৯০০ টাকা কেজি দরে রুই বিক্রি করে পান আট হাজার ১০০ টাকা। আর ৩৫০ টাকা দরে বাঘাইড়টি বিক্রি করেন বাঘাইড়। দাম পান এক হাজার ২২৫ টাকা।

আরোও পড়ুন:  কৌশলেই সফল খামারি প্রবাস ফেরত বাবলু

এগ্রিকেয়ার২৪.কমের সাথে কথা হয় ওয়ালিউর রহমানের। তিনি জানান, তার আগের দিন আরও একটি ২৪ কেজি ওজনের বাঘাইড় ধরা পড়ে তার জালে। সেটা বিক্রি করে পেয়েছেন বিশ হাজার টাকা। চারদিনেই তার জালে ধরা পড়েছে ১৫০ কেজির বেশি মাছ। সেগুলো বিক্রি করে আয় করেছেন প্রায় সোয়া লাখ টাকা। ফলে চারদিনেই লাখপতি হয়েছেন ওয়ালিউর রহমান।

ওয়ালিউর রহমানের জীবন সম্পর্কে জানতে চাইলে বলেন, নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছি তারপর আর নিজেই ইচ্চাতেই পড়িনি। তারপর থেকেই মাছ ধরি। পাশাপাশি মোটরসাইকেলে ভাড়া মারি। আমার স্ত্রীর নাম জোহরা খাতুন বছর সাতেক আগে বিয়ে করেছি। আমার দুইটা ছেলে হয়েছে। বড় ইয়ার হোসেন জুনায়েদের বয়স ৫ বছর। আর পাঁচ মাস আগে আরেকটি ছেলে হয়েছে। নাম রেখেছি জাহিদ হাসান। পড়ালেখা করাতে চাই আমার দুই ছেলেকে। আমি যেহেতু পড়িনি সেহেতু ছেলেদের পড়াব।

মাত্র এক সপ্তাহে এতটাকার মাছ পাওয়ায় খুশি ওয়ালিউর রহমান। তিনি বলেন, কাপাল ভালো বলতে হবে। এক সপ্তাহে প্রায় ১ লাখ টাকার বেশি মাছ বিক্রি করতে পেরে খুব ভালো লাগেছে। এখন তো ইলিশ পাওয়া যায় না। তাতে সমস্যা নাই। বাঘাইড়ের দাম পাচ্ছি ইলিশের চেয়েও বেশি। আর বিক্রি করতেও কোন ঝামেলা হয়না। খবর দিলে ঘাটে এসেই ব্যাপারিরা মাছ কিনে নিয়ে যায়।

আরোও পড়ুন: এইচএসসি পড়ুয়া সজীবের মুরগির খামার, মাসিক আয় ৪০ হাজার

বড় বড় বাঘাইড় মাছ পাওয়ার বিষয়টি ওই এলাকার মানুষের মাঝে কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে। মাছ দেখতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ দেখতে ভিড় করেন বলে জানা গেছে।

চারঘাটের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নুরুজ্জামান এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, ওয়ালিউর পদ্মা থেকে লাগাতার বড় বড় বাঘাইড় তুলছে। ৪০ কেজির মাছটি পাওয়ার পরে আমি দেখতে গিয়েছিলাম। অনেক মানুষ ভিড় করেছিল মাছটি দেখতে।

এ বিষয়ে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত মৎস্য কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, পদ্মা নদীতে মোটামুটি বছরজুড়েই বাঘাইড় মাছ পাওয়া যায়। শীতকালে একটু কমই ধরা পড়ে। বড় বড় মাছ পাওয়া যাচ্ছে বলে শুনেছি। এটা একটা ভালো দিক, এর কারনে আপনার যেটা হয়েছে যে, জাটকা মাছ ধরার প্রবণতা কমে গেছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ