নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে রাজশাহীতে প্রতিকেজি দেশী ও ব্রয়লার মুরগির দাম ৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

রাজশাহীর সাহেববাজার মাষ্টারপাড়া কাঁচাবাজারের পাইকারি মুরগি বিক্রেতা মমিন হোসেন এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, নতুন বছরের শুরুতেই মুরগির দাম বেড়েছে। থার্টি ফাস্ট নাইট উপলক্ষে অনেকেই ছোট-খাট আয়োজন করে। এতে মাংসের চাহিদা বেড়ে যায়। শুধু মুরগির মাংসের দাম বাড়েনি; বেড়েছে হাঁসের দামও। একবারে কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে। তবে, বাজারে মুরগির কিছুটা সংকট দেখা দেওয়ার কারণেই এভাবে দাম বেড়েছে।

পড়তে পারেন: এক ধাক্কায় দেশী ও ব্রয়লার মুরগিতে বাড়লো ২০ টাকা

আজ বুধবার ( ৫ জানুয়ারি ২০২২) নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া যায়।

এই মুরগি ব্যবসায়ী জানান, বড় ব্রয়লার ১৬৫ টাকা থেকে ৫ টাকা বেড়ে ১৭০ টাকা দরে বিক্রি করছি এবং ছোট ব্রয়লারও ১৭০ টাকা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে শুরুর দিকে ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে কিন্তু হাটৎ ২০ টাকা বেড়েছে। সোনালী ২৬৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে যা আগে ছিল ২৩০ থেকে ২৪০ টাকার মধ্যে ছিল। লাল লেয়ার ২২০ টাকা, সাদা লেয়ার ২০৫ টাকা, দেশী মুরগি ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, আগে ছিল সাড়ে ৩’শ ৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। পাতিহাঁস বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা কেজি দরে।

আরেক ব্যবসায়ী হাফিজুর রহমান এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, কয়েকদিন ধরেই মুরগির দাম বেশি। কেজিতে বেড়েছে সর্বনিম্ন ৫ টাকা থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। তবে, ব্রয়লার ১৭০ টাকার বেশি দাম আর বাড়বে না বলেই মনে হচ্ছে।

পড়তে পারেন: দাম বেড়েছে ব্রয়লার ও দেশীসহ সব ধরনের মুরগির

বাজারের ডিম ব্যবসায়ী শামীম হোসেন এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, শীতে ডিমের দাম কিছুটা বাড়ে। কিন্তু এবার তেমন বাড়লো না। বাজার থমকে আছে। প্রতিহালি (৪টি) লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩২ টাকায়। সাদা ডিম ৩০ টাকা ও হাঁসের ডিম ৪৮ টাকা হালি দরে বিক্রি করছি।

মুরগির দাম কমা বাড়ার কারন জানতে চাইলে রাজশাহী পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, মূলত দামের চাবিটা নাড়ায় হাতেগোনা কয়েকজন। গুটিকয়েক পোল্ট্রি কোম্পানির কারসজিতেই হুটহাট দাম চড়ে। এবার যা হয়েছে তা হলো, বাজারে মুরগির চাহিদা হটাৎ বেড়ে যাওয়ার কারণেই হটাৎ দাম বেড়েছে। ব্রয়লার ১৫০ টাকা কেজি থাকলে খামারিদের লাভ হবে। কম হলেই খামারিরা লোকসানে পড়ে।

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছোটবড় পোল্ট্রি শিল্প গড়ে উঠলেও রাজধানীর অদুরে টঙ্গী, বোর্ড বাজার, জয়দেবপুর ও গাজীপুর এলাকাকে ঘিরে দেশের সবচেয়ে বড় পোল্ট্রি শিল্প গড়ে উঠেছে। মূলত এখান থেকেই নিয়ন্ত্রিত হয় ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের বাজার।

তিনি আরোও বলেন, ডিমের দাম আর বাড়বে না বলেই মনে হচ্ছে। খাদ্যের দাম বেড়েছে বস্তাপ্রতি ৪০০ টাকা। কিন্তু ডিমের দাম সেভাবে বাড়েনি। বড় বড় কোম্পানিগুলো ডিম উৎপাদনে নেমেছে তাই প্রান্তিক খামারিদের দু:খ ঘোঁচে না। আর খাদ্যের দাম বাড়ানো সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। সরকার সিন্ডিকেট ভাঙতে পারছে না।

বৈশ্বিকভাবে দাম ১২ টাকা থেকে ১৩ টাকা বাড়লে বাংলাদেশে সিন্ডিকেটে দাম বাড়ায় ৭০-৮০ টাকা। এটা কোন নীতি নৈতিকতার মধ্যে পড়ে না। ডিমের দাম বাড়ানো প্রয়োজন। সর্বনিম্ন ৩৬ টাকা হালি লাল ডিম থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেন এই বিশ্লেষক।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ