নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: চলতি বছরে উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান আবিষ্কারের জন্য দলগতভাবে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের তিন বিজ্ঞানী পাচ্ছেন একুশে পদক। গবেষণা ক্যাটগরিতে এ তিন ধান বিজ্ঞানীদের চলতি বছরে একুশে পদক দেয়া হচ্ছে।

দলগতভাবে একুশে পদক পাওয়া তিন ধান বিজ্ঞানী হলেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের জৈব প্রযুক্তি বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. এনামুল হক (দলনেত), প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. সাহানাজ সুলতানা ও ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. জান্নাতুল ফেরদৌস।

ব্রি সূত্র জানায়, দেশের জনপ্রিয় ধান ব্রি ধান-২৯ এর পরিবর্তে উচ্চ ফলনশীল জাত ব্রি ধান-৮৯ উদ্ভাবন করেন এ তিন বিজ্ঞানী। ২০১৮ সালে এ ধানের জাত অবমুক্ত হয়। হেক্টর প্রতি ফলন গড়ে ৮টন। ১৫৪ থেকে ১৫৮ দিনে ফলন ঘরে তুলতে পারেন কৃষকেরা।

ব্রি’র মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. এনামুল হক এক প্রতিক্রিয়ায় এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে বলেন, এটি আমাদের জন্যে অনেক বড় পাওয়া। ব্রি’র পরিবারের সদস্য হিসেবে এমন অর্জনে আমরা খুবই গর্বিত। এ অর্জন ব্রিসহ সবার, বিশেষ করে যাদের উদ্দেশ্যে জাতটি উদ্ভাবন করা হয়েছে সেই কৃষক ভাইদের।

চলতি বছর ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, শিল্পকলা, গবেষণা, ভাষা ও সাহিত্যে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে একুশে পদক পাবেন গুণী ২৪ জন। এ ২৪ জনের মধ্যে ব্রি’র তিনজন ধান বিজ্ঞানী রয়েছেন। এছাড়া গবেষণায় একুশে পদক পাচ্ছেন ড. মো. আবদুস সাত্তার মন্ডল।

আজ বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ২০২২ সালের একুশে পদকের জন্য মনোনীতদের নাম ঘোষণা করা হয়।

আরও পড়ুন: এক কেজি বোরো ধান উৎপাদনে পানির খরচ নিয়ে যা বললো ব্রি

নতুন ১০ জাতের ধান নিবন্ধন পেল

এ বছর একুশে পদক পাওয়া গুণীদের মধ্যে ভাষা আন্দোলনে দুজন, মুক্তিযুদ্ধ ক্যাটাগরিতে চারজন, শিল্পকলায় সাতজন, ভাষা ও সাহিত্যে দুজন, সমাজসেবায় দুজন, গবেষণায় চারজন (দলগতভাবে তিনজন), সাংবাদিকতা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, শিক্ষায় একজন করে রয়েছেন।

নীতিমালা অনুযায়ী, নির্বাচিত প্রত্যেককে এককালীন নগদ চার লাখ টাকাসহ ৩৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণপদক, রেপ্লিকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেয়া হয়। ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে চালু করা একুশে পদক সরকার প্রতিবছর বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে দিয়ে থাকে।

বাংলাদেশের বিশিষ্ট সাহিত্যিক, শিল্পী, শিক্ষাবিদ, ভাষাসৈনিক, ভাষাবিদ, গবেষক, সাংবাদিক, অর্থনীতিবিদ, দারিদ্র্যবিমোচনে অবদানকারী, সামাজিক ব্যক্তিত্ব ও প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় পর্যায়ে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৭৬ সাল থেকে একুশে পদক দেওয়া হচ্ছে।

একুশে পদক পাওয়া গুণীরা হলেন: ভাষা আন্দোলনে মোস্তফা এম. এ. মতিন (মরণোত্তর) ও মির্জা তোফাজ্জল হোসেন মুকুল (মরণোত্তর)। শিল্পকলায় জিনাত বরকতউল্লাহ, নজরুল ইসলাম বাবু (মরণোত্তর), ইকবাল আহমেদ, মাহমুদুর রহমান রেণু, খালেদ মাহমুদ খান (মরণোত্তর), আফজাল হোসেন, মাসুম আজিজ। মুক্তিযুদ্ধে আলহাজ্ব অধ্যক্ষ মো. মতিউর রহমান, সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী (মরণোত্তর), কিউ .এ.বি এম রহমান, আমজাদ আলী খন্দকার। সাংবাদিকতায় এম এ মালেক।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে মো. আনোয়ার হোসেন, শিক্ষায় অধ্যাপক ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ, সমাজসেবায় এস. এম. আব্রাহাম লিংকন ও সংঘরাজ জ্ঞানশ্রী মহাথের। ভাষা ও সাহিত্যে কবি কামাল চৌধুরী ও ঝর্ণা দাশ পুরকায়স্থ। গবেষণায় ড. মো. আব্দুস সাত্তার মণ্ডল, ড. মো. এনামুল হক (দলগত, দলনেতা), ড. সাহানাজ সুলতানা (দলগত), ড.জান্নাতুল ফেরদৌস (দলগত)। ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের তিন বিজ্ঞানী পাচ্ছেন একুশে পদক পাওয়ায় এগ্রিকেয়ার২৪.কম এর পক্ষ থেকে অভিনন্দন ও শুভ কামনা।