সজিব ইসলাম, চারঘাট (রাজশাহী) প্রতিনিধি: সরকারিভাবে বেঁধে দেওয়া সময় পেরিয়ে বর্ধিত ১৫ দিনেও রাজশাহীর চারঘাট উপজেলা খাদ্যগুদাম আমন ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে।

সরকারিভাবে দেওয়া মূল্যের তুলনায় বাজারমূল্য বেশি হওয়ায় কৃষক ও মিল মালিকদের গুদামে ধান-চাল দেওয়ার আগ্রহ না থাকায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি বলে খাদ্য বিভাগের দাবি।

জানা গেছে, এবারের আমন মৌসুমে চারঘাট উপজেলা খাদ্যগুদামে ২৪৯ টন ধান এবং ২৭ টন আমন চাল ও ৪৫ টন আতব চাল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল।

প্রতি কেজি ধান ২৮ টাকা ও চাল ৩৭ টাকা দরে ক্রয় করার জন্য ৭ নভেম্বর ২০২০ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ায় আরও ১৫ দিন সময় বৃদ্ধি করা হলেও দীর্ঘ সময়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়নি।

এলএসডি গুদাম সূত্রে জানা, যায় সরকারিভাবে বেঁধে দেওয়া সময়সহ বর্ধিত ১৫ দিন সময়ের মধ্যে মাত্র ১৪ হাজার ৮০০ টন আমন চাল ক্রয় করতে পারলেও কোনো আতব চাল ও ধান ক্রয় করতে পারেনি তারা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকারিভাবে দেওয়া মূল্যের চেয়ে খোলা বাজারে ধান ও চালের মূল্য বেশি এবং সরকারি খাদ্যগুদামে ধান দিতে অনেক ঝামেলা হওয়ায় কৃষকরাও গুদামে ধান বিক্রি করতে আগ্রহী হয়নি।

ফলে সরকারিভাবে ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জেন হয়নি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি মোটা চাল ৪৩-৪৫ টাকা। ধান ২৯-৩১ টাকা।

এছাড়াও ভালো ধান ছাড়া গুদামে ধান দেওয়া যায় না। চালের বেলায়ও একই নিয়ম। এই অবস্থায় গুদামে ধান-চাল সরবরাহ করলে কৃষক ও মিল মালিকদের বড় রকমের লোকসান গুনতে হয়।

অপরদিকে চলতি আমন মৌসুমে সরকারি খাদ্যগুদামে প্রান্তিক, মাঝারি ও বৃহৎ প্রত্যেক কৃষকের কাছ থেকে ১-৩ টন ধান কেনার সিদ্ধান্ত থাকলেও কোনো কৃষক খাদ্যগুদামে ধান সরবরাহ করেনি।

চাল সরবারহকারী মিল মালিক নিবারণ চন্দ্র এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, আমরা দুজন মিল মালিক চাল গুদামে দিয়েছি। মোট বরাদ্দের মধ্যে ১৪.৮০০ টন চাল প্রদান করেছি। তাতে অনেক টাকা লোকসান হবে। চলতি মৌসুমে চালের বাজার মূল্য বেশি হওয়ায় চাল সরবরাহের লোকসান কমাতে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।

উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক শেখ মলিউজ্জামান এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে জানান, চালের বাজার দর বেশি হওয়ায় মিলাররা চাল দিতে আগ্রহী নয়। তারপরও ১৪.৮০০ টন চাল দুই মিল মালিক প্রদান করেছেন।

ধান ক্রয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, সরকারিভাবে বেঁধে দেওয়া মূল্যের চেয়ে ধানের বাজার দর বেশি হওয়ায় কোনো কৃষক ধান দিতে সম্মতি হয়নি ফলে ধান ক্রয় সম্ভব হয়নি।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ