বিকাশ রায় বাবুল, নীলফামারী প্রতিনিধি: নীলফামারীর ডোমার ভিত্তি বীজ আলু উৎপাদন খামার (বিএডিসিতে) ২৪০ একর জমিতে আউশ ধান চাষ করা হয়েছে। ধৈঞ্চা পচানো সার দিয়ে এই ধান চাষ করা হয়েছে।

ইতোমধ্যে ধান গায়ে সোনালী রং আসতে শুরু করেছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে জমি হতে ধান সংগ্রহ করার কাজ শুরু করা হবে।

বিএডিসি সূত্রে জানা যায়, আগামী এক দুই সপ্তাহের মধ্যে আউশ ধান কাটাই ও মাড়াইয়ের কাজ শুরু হবে। এর আগে ওইসব জমিতে খামারটি আলু উঠানোর পর কয়েক মাস জমিগুলো পতিত হয়ে থাকতো। এতে করে মাটির উর্বর শক্তি কমে যেত। মাটির উর্বর শক্তি বাড়ানোর জন্য ধৈঞ্চা লাগানো হতো। গাছগুলো ৩/৪ ফিট লম্বা হলে চাষ দিয়ে মাটিতে পঁচানো হয়। পঁচে গেলে এটি মাটিতে জৈব সার হিসেবে কাজ করে। এর পর কয়েকটি চাষ দিয়ে ওই জমিতে আউশ ধান রোপন করা হয়।

খামারের জমি গুলো অধিকাংশ বেঁলে মাটি হওয়ায় আলু উৎপাদনের পর কয়েকমাস পতিত হিসেবে পরে থাকতো। কর্তৃপক্ষ ওই পতিত জমি গুলো দোঁ-আশ মাটি দিয়ে সংমিশ্রণ করে গত বছর ১৫০ একর জমিতে আউশ ধান চাষ করে।

পড়তে পারেন: দেশের সর্বোচ্চ লবণসহিষ্ণু বিনা-১০ ধান চাষে কৃষকের সাফল্য

এবার ২৪০ একর জমিতে তিন জাতের আউশ ধান চাষ করা হয়েছে। জাত গুলো হলো ব্রি-ধান ৪৮,৯৮ ও বিনা ধান-২১। এই জাত গুলো থেকে উৎপাদিত ধান মানসম্পন্ন ভিত্তি বীজ হিসেবে বাজারজাত করা হবে।

ডোমার ভিত্তি বীজ আলু উৎপাদন খামারের উপ পরিচালক কৃষিবিদ আবু তালেব মিঞা আলু উৎপাদনের পর ওইসব জমিতে আউশ ধান চাষের উদ্দ্যোগ নেন। এর পর থেকে পর্যায় ক্রমে প্রতি বছর বাড়তে থাকে আউশ ধানের চাষাবাদ। গত বছরের তুলনায় এবার ৯০একর বেশী জমিতে আউশ ধান চাষ করা হয়েছে।

পড়তে পারেন: বাঘায় নতুন জাতের গম চাষ, বিঘায় ফলন হয়েছে ১৮ মণ

মে মাসে আউশ ধান রোপন করা হয়। রোপন কাল থেকে কাটাই পর্যন্ত ১১৫ দিন সময় লাগে। ঘনঘন বিদ্যুতের লোডশেডিং ও জ্বালানী তেলের দাম বৃদ্ধির কারনে শ্যালো মেশিন দিয়ে সেচ দেওয়ায় ধান উৎপাদন খরচ বেড়েছে।

আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় গত বছরের তুলনায় এবার ভালো ফলনের আশা করছেন বিএডিসি ফার্মের উপ-পরিচালক আবু তালেব মিঞা। ডোমার উপজেলায় আউশের তেমন চাষাবাদ না থাকায় বিভিন্ন এলাকার কৃষক ধান ক্ষেত দেখতে প্রতিদিনেই আসছে বিএডিসি ফার্মে। এক সাথে এত জমিতে আউশ ধান চাষ করে গোটা উপজেলায় সাড়া ফেলেছে ফার্মটি।

আউশ ধান ক্ষেত দেখতে আসা মজিবুল ইসলাম নামে এক কৃষক জানান, আমাদের এদিকে বছরে দু’বার (বোরো ও আমন) ধান চাষাবাদ করা হয়। যদি কৃষি অফিস থেকে চাষীদের পরার্মশ দেওয়া হয়। তাহলে সাময়িক সময়ে পড়ে থাকা জমিতে আউশ চাষ করে লাভবান হবে কৃষকরা। এবং এই এলাকায় আউশ ধানের চাষাবাদ বাড়বে।

পড়তে পারেন: বারি গম-৩৩, বিঘায় ফলন ১৭ মণ

ডোমার ভিত্তি বীজ আলু উৎপাদন খামারের উপ পরিচালক আবু তালেব মিঞা জানান, আউশ ধান মে মাসে রোপন করা হয়। গত বছরের তুলনায় এবার ৯০ একর বেশী জমিতে আউশ ধান চাষ করা হয়েছে। ভালো ফলনের আশা করছি। আবহাওয়া ভালো থাকায় এবার একর প্রতি ৩৫ থেকে ৪০মন ধান ফলনের আশা করছি।

তিনি আরোও বলেন, উৎপাদিত সকল ধান ভিত্তি বীজ হিসেবে বাজারজাত করা হবে। বীজ করায় উৎপাদন খরচ একটু বেশী লেগেছে। একর প্রতি ৫৫ হাজার টাকা মতো খরচ হয়েছে। ধান গুলো ভিত্তি বীজ হিসেবে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হবে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ