জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ: কালবৈশাখী ঝড়ে আমের রাজধানীখ্যাত নওগাঁর সাপাহারে ঝরে পড়েছে বাগানের হাজার হাজার মণ আম। ঝরে পড়া এসব অপরিপক্ব আম ২ থেকে ৩ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। সে হিসাবে ৫০ কেজির প্রতি বস্তা আম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

কম দামে এসব আম স্থানীয় ব্যবসায়ীরা কিনে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে ও বিভিন্ন জুস কোম্পানিকে সরবরাহ করছেন।

পড়তে পারেন: বাজারে এসেই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে গোপালভোগ

শুক্রবার (২০ মে) দিবাগত রাত ৩টা ৪৫ মিনিটে শুরু হয়ে শনিবার (২১ মে) ভোর পর্যন্ত চলে ঝড়। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতেও প্রচণ্ড ঝড়ে আম ঝরে পড়ে। দুই রাতে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫টি ইউনিয়নের ৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমির বাগানের আম ঝরে পড়েছে।

উপজেলার জবই গ্রামের আমচাষি আব্দুল বাকী বলেন, আমি প্রায় ৪০ বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের আমের চারা লাগিয়েছিলাম। এসব গাছে আম্রপালি, বারি-৪, ক্ষিরসাপাতসহ বিভিন্ন জাতের আম ধরেছিল। বৃহস্পতিবার রাতে কালবৈশাখী ঝড়ে গাছ থেকে বেশির ভাগ আম ঝরে পড়ে। আমগুলো এখনো পাকেনি। সকালে এসব আম বিক্রির জন্য বাজারে নিয়ে এসেছি। ১০০ থেকে ১৫০ টাকা দরে বস্তা বিক্রি করছি। এতে যে লাভের আশা করেছি, তা আর করতে পারব না।

পড়তে পারেন: পাকা আমের ভেতরে পোকা, আগে থেকে যা করণীয়

সাপাহার সদর উপজেলার আমচাষি আব্দুর রহিম বলেন, ২৫ বিঘা জমির আম-বাগান লিজ নিয়েছিলাম। গত রাতে কালবৈশাখী ঝড়ে আমার প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ মণ আম ঝরে পড়েছে। এত কাঁচা আম নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় আছি। কিছু আম দুই থেকে তিন টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। লাভ তো দূরে, খরচও উঠবে না এবার।

পাইকারি ব্যবসায়ী রুবেল ইসলাম বলেন, ঝরে পড়া আম তেমন কোনো কাজে লাগে না। তা ছাড়া আমগুলো পরিপক্ব নয়, তাই আচার করার জন্য মানুষ কিনে নেয়। আমের পরিমাণ অনেক বেশি হওয়ায় বাধ্য হয়ে কম দামে কিনছি। এগুলো ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তবে ঢাকায় এসব আমের চাহিদা রয়েছে।

আরেক পাইকারি ব্যবসায়ী খাইরুল আলম বলেন, ঝরে পড়া আমে দাগ পড়ে বেশি। নষ্ট হয়ে যায় দ্রুত। তাই এসব আম জুস কোম্পানিকে সরবরাহ করি। আবার এসব আম দিয়ে আচার বানানো হয়। বিভিন্ন জায়গায় এর চাহিদা আছে। তাই কম দামে কিনে ট্রাকে করে বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে দিই।

সাপাহার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাপলা খাতুন বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলায় প্রচণ্ড ঝড়বৃষ্টি হয়েছে। এতে উপজেলার ৬টির মধ্যে ৫টি ইউনিয়নে প্রায় ৫ শতাংশ আম ঝরে পড়েছে। আর এক ইউনিয়নে প্রায় ২ শতাংশ আম ঝরে পড়েছে। এসব আম তেমন কোনো কাজে না আসায় চাষিরা কম দামে বিক্রি করছেন।

 

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ