নাটোর প্রতিনিধি, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: নাটোরে ইটভাটার গ্যাসে শত শত বিঘা জমির বোরো ধান, ভুট্টা, আম সহ বিভিন্ন ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। বারবার ফসলের এমন ক্ষতিতে দিশেহারা কৃষক স্থায়ী সমাধান চান। যেন তাদের আর কোন স্বপ্নের ফসলের ক্ষতি না হয়।

সম্প্রতি ইট ভাটাবন্ধ ও ক্ষতিপুরণ দাবীতে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ ও মানববন্ধনে কৃষকেরা এসব দাবি তুলে ধরেন। এ বিষয়ে প্রশাসন বলছে, মাঠ পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরীসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে তারা।

আর কয়েক দিন পরেই যে সোনালী ধান ঘরে উঠার স্বপ্ন দেখছিল কৃষক। ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাসে তা ভেঙ্গে চৌচির। সম্প্রতি সিংড়া উপজেলার লালোর ও শেরকোলে এএইচবি ব্রিক্স নামে ২টি ইটভাটা থেকে বিষাক্ত গ্যাস ছেড়ে দেয়া হয়। এতে করে ভাটার প্বার্শবর্তী এলাকার বোরো ধান গরম হাওয়ায় পুড়ে নষ্ট হয়ে যায়।

এছাড়া অন্যান্য মাঠের ধানগুলো চিটায় পরিনত হয়েছে। শুধু এ ভাটা দুটিই নয়, সদর উপজেলার একডালা এমবিএ বিক্সসহ লালপুর ও বাগাতিপাড়া উপজেলার অন্তত ১৫টি ভাটার গ্যাসে শত শত বিঘা জমির বোরো ধান, ভুট্টা, বাগানের আম, পেয়ার, লিচু সহ বিভিন্ন ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।

এদিকে ক্ষুদ্ধ কৃষক লালপুরে ভাটা বন্ধ ও ক্ষতিপুরণ দাবীতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে। উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানসহ ইটভাটা বন্ধের দাবী জানিয়েছেন তারা।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক শহিদুল, আসগর, আহাম্মেদ আলী, বসির মন্ডল জানান, প্রতি বছরই ঘটছে ফসল নষ্টের এমন ঘটনা। দরকার স্থায়ী সমাধান। সঠিক নিয়মে ভাটা চালানো ও ভাটাগুলোর উপর নিয়মিত প্রশাসনিক নজরদারীর দাবী ক্ষতিগ্রস্থদের। পাশাপাশি যথাযথ ক্ষতিপুরণ দাবি করেন তারা। 

সিংড়া উপজেলার লালোর ইউনিয়নে দুটি ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাসে ফসলের ক্ষতির সত্যতা স্বীকার করে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে জানান, ইটভাটার মালিক ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপুরণ দিতে রাজী হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরী করে ক্ষতিপুরন প্রদানের জন্য স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাসহ কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, গরম হাওয়া ছাড়ার কারণে বেশ কিছু জমির ফসলের পুরোপুরি ও আংশিক ক্ষতির পরিমাণ নিরুপনের জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যান, কৃষি কর্মকর্তাসহ কমিটি করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরী করে ক্ষতিপুরন প্রদানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

এসব ইটভাটা মালিকরা কথা বলতে রাজী না হলেও নাটোর জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি শরিফুল ইসলাম রমজান এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে জানান, হাওয়া ছাড়ার আগে দুষণমুক্ত করা ব্যবস্থা থাকার পরও শুধুমাত্র ভাটা মালিকদের অবহেলায়ই এমনটি হয়েছে। প্রয়োজনে চাষিদের ক্ষতিপুরণসহ দায়ী ভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।তবে স্থায়ী সমাধানে প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ।