নানা অপপ্রচারে পোট্রি শিল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: নানা অপপ্রচারে পোট্রি শিল্প যেভাবে লাভবান হওয়া দরকার সেভাবে হচ্ছে না; কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এ মন্তব্য করেছেন।

তিনি বলেছেন, খাদ্যকে নিরাপদ রাখার দায়িত্ব সবার নিতে হবে। এ দায়িত্ব উৎপাদক থেকে শুরু করে ভোক্তা এবং প্রক্রিয়াজাতকারী সকলের। সচেতনতা এবং সাবধানতাও এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।



মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের আ: সালাম হলে ‘নিরাপদ খাদ্য ও কৃষি ব্যবস্থাপনা’ বিষয়ক গোল টেবিল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। এসিআই এর ফসলি’র সহযোগিতায় গোল টেবিলটির আয়োজনে ছিলো বাংলাদেশের খবর।

আমরা কী আমাদের দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করছি প্রশ্ন রেখে কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন প্রয়োজন। উপলব্ধির জায়গাটায় আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। আমরা যার যার অবস্থান থেকে যে দায়িত্বটুকু আছে তা পালন করলে এ সমস্যা সমাধান সহজ। খাদ্যে কিছু পাওয়া অর্থ এই নয় খাদ্য নিরাপদ না।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, খাদ্যের ভেজাল বুঝতে হবে কীভাবে এবং কী করলে ভেজাল হয়। এরকম নানা অপপ্রচারের ফলে আজ আমাদের পোট্রি শিল্প যে ভাবে লাভবান হওয়া উচিত ছিল সেভাবে হচ্ছে না।

তিনি বলেন, আমরা এখনও অনেকেই ফার্মের মুরগি খাই না, কিন্ত বিল গেঁটস থেকে শুরু করে বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রের সকলে কিন্তু এই মুরগি খাচ্ছে। কিছু দিন আগে ওঠা দুধের প্রসংঙ্গ টেনে তিনি বলেন, কোন কিছু প্রচার করার আগে বুঝতে হবে জানতে হবে। বিজ্ঞানীদের মতামত নিতে হবে ল্যাব পরীক্ষার ফলাফল জানতে হবে।

তিনি বলেন, নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিত করা সরকারের অঙ্গিকার। ইতোমধ্যে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতের নিমিত্তে কৃষি মন্ত্রণালয় একটি অ্যাক্রিডিটেড ল্যাব স্থাপন করতে যাচ্ছে এবং বিদ্যমান ল্যাবগুলোকে আধুনিকায়ন করা হবে।

এছাড়া নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের নিজস্ব ভবন ও ল্যাব থাকা জুরুরী বলে জানান কৃষিমন্ত্রী। বলেন, আমরা নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে শক্তিশালী করবো। প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ দিবো তারা যেন একটি টাক্সফোর্স গঠন করে অ-অনুমোদিত খাদ্য ব্যবহার বা আমদানি করতে না পারে।

মাঠ থেকে ভোক্তা পর্যন্ত এমনভাবে তদারকি থাকতে হবে যাতে করে কোন প্রকার ভেজাল ভোক্তার কাছে পৌঁছাতে না পারে বলে জানান ড. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, সার্বিক বিষয় জনগণের কাছে সঠিক তথ্য পৌছাতে সংবাদ কর্মীদের আংশগ্রহণে প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করতে হবে।

নানা অপপ্রচারে পোট্রি শিল্প

গোল টেবিল আলোচনায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট এর প্রফেসর ড.খুরশিদ জাহান ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ড.মো: সালেহ আহমেদ। আলোচনায় বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য অধ্যাপক ড.মো: আব্দুল আলীম জানান, বাংলাদেশে খাদ্যে ভেজাল খুবই কম।

উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, বিএসটিআই ৩১৩টি খাদ্যের নমুনা পরিক্ষা করে এর মধ্যে মাত্র ১৯ টিতে কিছু মাত্রায় অনুজীব পেয়েছে। বাকি গুলোতে কোন ক্ষতিকর কিছু পাওয়া যায় নি, কিন্তু প্রচার হলো খাদ্য নিরপদ নয়।

এছাড়া আলোচকবৃন্দ  Good Agriculture Practice(GAP) বাস্তবায়নের ওপর জোর দিয়ে Pre-Harvest Interval (PHI) নিশ্চিতের দাবি জানান।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের খবর পত্রিকার সম্পাদক আজিজুল ইসলাম ভুঁইয়া এর সভাপত্বিতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এসিআই অ্যাগ্রোলিংক লি: এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ফাহ আনসারি, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সৈয়দা সারওয়ার জাহান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহারিচালক ড. মো: আবদুল মুঈদ, কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ড. ওয়ায়েস কবীর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহারিচালক মো. হামিদুর রহমান।

নানা অপপ্রচারে পোট্রি শিল্প যেভাবে লাভবান হওয়া দরকার সেভাবে হচ্ছে না; কৃষিমন্ত্রী এর এমন বক্তব্যে সমর্থন জানিয়েছেন দেশের পোল্ট্রি শিল্পের উদ্যোক্তারা।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ফসলের বীজ সম্পসারণে সহযোগিতা চায় চীনের হাইটেক সিড